মনের জলছবি
চোখের রেটিনায় ধরা পড়া মনের জলেছবি ক্যামেরা-বন্দী করতে চাই।মনে কার কী ভাবনা চলছে তার কোন ছবি নেই অথচ তাকে লেন্সে বন্দী করেতে চাই।অনেকে মনের গহীনে যে রকম ছবি এঁকেছেন বলার সময় সে অন্য এক ছবি তুলে ধরেন। মনে এক আর মুখে অন্য কথা। এমনটাই ঘটে থাকে । আমি চাই সে যন্ত্র যাতে মনের কথা আর মুখের কথাকে একভাবেই ছবিতে তুলে ধরবে।
আমার ভাবনাকে গুরুত্ব না দিয়ে ছেলে বলল মানুষের মস্তিষ্কে যে ভাবনা চলছে, তা পড়া সম্ভব নয়। তাহলে আবার সেই ভাবনার ছবি কিভাবে তুলবে?
আমিও জোর দিয়ে বললাম ডিজিটাল যুগে অসম্ভব বলে কিছু নেই ।মস্তিষ্কের ভাবনাকে পড়ে ফেলাই শুধু নয়, তা ‘দেখা’-ও সম্ভব।
কী ভাবে তুমি মনের ভাবনাকে পড়ে সেই ছবি দেখবে? তেমন কোন যন্ত্রের খবর শুনেছো তুমি?
তেমন কোন যন্ত্র না পেলেও গবেষক টেসলার দাবি করেছিল, আমাদের চিন্তা-ভাবনার ছবিও তোলা যেতে পারে।
ও তুমি টেসলার ‘থট ক্যামেরা’র কথা বলছো?
হ্যাঁ তিনিই তো সে বিষয় নিয়ে পরীক্ষা নীরিক্ষা করেছিলেন।
জানি গো,মা। তার কথা শুনেছি।যুক্তিবাদীরা তার দাবিকে নস্যাৎ দিয়েছেন।
নস্যাৎ করার,কি আছে।যন্ত্রই তো সব বলে দেবে।
জানিস না অপরাধীর স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য
ইলেকট্রনিক চেয়ারে বসিয়ে কথা আদায় করে।
যুক্তিবাদীরা বলে ভাবনার কোনও ছবি না থাকায় ক্যামেরায় সেই ছবি কিভাবে ধরা পড়বে?
সেটা সাধারণ ক্যামেরায় তোলা যায় নাকি?’থট ক্যামেরা’ তৈরির কথা ভেবেছিলেন টেসলা।
টেসলা বলেছিলেন, ‘‘আমি নিশ্চিত যে আমাদের ভাবনার ছবি চোখের মণিতে ফুটে ওঠে।’’
জানি না তবে সে ছবি কী ভাবে ক্যামেরাবন্দি করা যাবে?
টেসলার কথায়, ‘‘প্রতিবর্ত ক্রিয়ার দ্বারাই আমাদের চিন্তা-ভাবনার ছবি মণিতে দেখা যায়। আর যথাযথ যন্ত্রের সাহায্য সেই ছবি দেখা সম্ভব।’’
তর্কের খাতিরে টেসলার কথা এবার খানিক বিশ্বাস করল ছেলে।
যন্ত্রটা ‘থট ক্যামেরা’।
টেসলা জানিয়েছিলেন, চোখের মণিতে ভেসে ওঠা মনের ভাবনার প্রতিচ্ছবি একটি কৃত্রিম অক্ষিপটে (রেটিনায়) ফেলে তার ছবি থট ক্যামেরায় তোলা যায় এবং সেই ছবি কোনও পর্দায় ভাসিয়ে দিলে ওই মানুষটির মনের কথা পর্দায় ফুটে উঠবে।
কি অবাস্তব রে বাবা বলল ছেলে। থট ক্যামেরায় যদি মনের ছবি এ ভাবে পর্দায় ভাসিয়ে দেওয়া যায়, তবে ওই মানুষটি কী ভাবনা করছেন তা সহজেই জেনে ফেলা যাবে?
নিশ্চয়ই যাবে ‘থট ক্যামেরার সাহায্যে মানুষের মনের ভাবনার ছবিটা স্লাইড শোয়ের মতো দেখা যাবে।
কিন্তু আমি শুনেছি টেসলার ভাবনা কখনও সাফল্য পায়নি।
আমি টেসলার থট ক্যামেরার সাহায্যে তোর মনের কথা পড়ে ফেলব ভেবেছি। এবং আমি তা করতে পারলে তোর মন একটা খোলা বইয়ের আকার নেবে। সকলেই তোর মনের কথা পড়তে পারবেন।
ফিলিপ কার্টে খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে থট ক্যামেরা যদি পাওয়া যায়।