মণীন্দ্র-প্রয়াণ (প্রলয়শিখা)
দানবীর, এতদিনে নিঃশেষে
করিলে নিজেরে দান।
মৃত্যুরে দিলে অঞ্জলি ভরি
তোমার অমৃত প্রাণ।
অমৃতলোকের যাত্রী তোমরা
পথ ভুলে আস, তাই
তোমাদের ছুঁয়ে অমর মৃত্যু
আজিও সে মরে নাই।
স্বর্গলোকের ইঙ্গিত – আস
ছল করে ধরাতল,
তোমাদেরে চাহি ফোটে ধরণিতে
ধেয়ানের শতদল।
রৌদ্র-মলিন নয়নে বুলাও
স্বপনলোকের মায়া,
তৃষিত আর্ত ধরায় ঘনাও
সজল মেঘের ছায়া।
ইন্দ্রকান্তমণি ছিলে তুমি
শ্যাম ধরণির বুকে,
সুন্দরতর লোকের আভাস
এনেছিলে চোখে-মুখে।
ঐশ্বর্যের বুকে বসে বলে –
-ছিলে শিব বৈরাগী,
বিভব রতন ইঙ্গিত শুধু
ত্যাগের মহিমা লাগি।
ইন্দ্র, কুবের, লক্ষ্মী, আশিস
ঢেলেছিল যত শিরে,
দু-হাত ভরিয়া ক্ষুধিত মানবে
দিলে তাহা ফিরে ফিরে।
যে ঐশ্বর্য লয়ে এসেছিলে,
তাহারই গর্ব লয়ে
করেছ প্রয়াণ, পুরুষশেষ্ঠ,
উঁচু শিরে নির্ভয়ে!
তব দান-ভারে টলমল ধরা
চাহে বিহ্বল-আঁখি,
অঞ্জলি পুরি দিয়া মহাদান,
চক্ষেরে দিলে ফাঁকি।