সে ভূতলবাসী একজন, ছন্নছাড়া,
বিবিক্ত, বিষণ্ন, সূর্যালোকে সহজে যায় না দেখা
তাকে, নিত্যসঙ্গী তার ইঁদুর, বাদুড়। বাক্যালাপ
নেই কারও সঙ্গে, মাঝে-মাঝে কেবল নিজের সঙ্গে
কথা বলে একা একা মৃদুস্বরে। অন্যেরা সে-কথা
শুনলেও সহজে যাবে না বোঝা
ভূতলবাসীর সন্ধ্যাভাষা। নেই কারও
সাতে পাঁচে, ব’সে থাকে এক কোণে লোকটা একাকী।
এরকমও হয়, কালেভদ্রে নিজের আস্তানা ছেড়ে
সে বেরিয়ে আসে জ্যোৎস্নাভেজা মধ্যরাতে,
হেঁটে হেঁটে জনশূন্য মাঠে গিয়ে শোয় অকাতরে,
নভোমগুলের রূপ দেখে।
চোখে তার অশ্রুকণা চিক চিক করে। অকস্মাৎ
কোত্থেকে তিনটি পক্ষীরাজ ঘোড়া এসে
মাঠে জুড়ে দেয় নাচ। কেবল একটি পক্ষীরাজ
ভূতলবাসীর ম্লান শার্টের কলার
মুখে চেপে দোলা দেয় বারবার গাঢ় মমতায়,
একটি বেহালা নাচে শূন্যে তালে তালে।
সর্বদা সে নিশ্চেষ্ট, উদ্যমহীন, আকাঙ্ক্ষার ডালে
ছেঁটে ছেঁটে নিশ্চিহ্ন করেছে
সবার অলক্ষ্যে তবু তার কাছে আসে
অলৌকিক পাখি, মৎস্যকনা, রত্নদ্বীপ, পক্ষীরাজ,
শূন্যের উদ্যান; সে-তো তিমিরবিলাসী, তবু নিঃসঙ্গ আড়ালে
নতুন আলোর আরাধনা করে সকল সময়।