ভালবাসা অন্তহীন
কুকুর প্রভুভক্ত হয়।ছোট থেকে একথা শুনেছি। এর প্রমাণও মেলে প্রতিনিয়ত। মানুষের প্রতি কুকুরের অগাধ ভালোবাসার কথা বলে শেষ করা যাবে না। তাদের ভাষা হয় তো আলাদা, তাদের বোঝানোর ভঙ্গি হয় তো আলাদা, কিন্তু ভালোবাসা অনেক বেশি। প্রতিদিনই এমন একাধিক পোষ্যর সঙ্গে সময় কাটাতে দেখা যায় মানুষজনকে, তাদের একাধিক কীর্তিও সামনে আসে।
কোনও এক মিলিটারি ক্যাম্পে এক সেনা আধিকারিকের হাতে একটি কুকুর। আরেকজন সেনা তাদের স্যালুট জানিয়ে বিদায় নিচ্ছে। বিদায় নেওয়ার সময় সেনার হাতে থাকা গোল্ডেন রিট্রিভার (Golden Retriever) কুকুরটিকে খুব আদর করছে। তার কয়েক সেকেন্ডেই কুকুরটি চেন ছেড়ে দৌড়ে ওই সেনা আধিকারিকের গায়ে উঠে, তাকে জড়িয়ে ধরে আদর করতে থাকে।
এই দা মাও নামে ওই কুকুরকে ট্রেনিং দিতে এত দিন তাকে সঙ্গে রেখেছিল জিয়া চুয়ান নামে ওই সেনা আধিকারিক। প্রায় দু’বছর দা মাও তাঁর কাছেই ছিল। তাঁর এই কাজ থেকে অবসরের সময় এলে তিনি বিদায় নেন। দা মাওকে তুলে দেওয়া হয় অন্য এক আধিকারিকের হাতে। কিন্তু দা মাও তাঁর প্রভুকে ছাড়তে নারাজ। নিজের ভঙ্গিমাতেই, নিজের ভাষাতেই কোথাও যেন বোঝানোর চেষ্টা করছে- আমাকে ছেড়ে যেও না!
অনেক চেষ্টাতেও দা মাওকে সরিয়ে আনা যায় না জিয়ার কাছ থেকে। যতবারই তাকে নিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা হয়, সে দৌড়ে জিয়ার কাছে চলে এসে গায়ে উঠে পড়ে।দা মাওকে ভালোবাসায় ভরিয়ে দেন জিয়া।
তাই দা মাও তার ট্রেনারকে ছাড়তে চায় না। ট্রেনার রিটায়ার করে গেলেও ওই কুকুর কিছুতেই ট্রেনারকে বিদায় দিতে চায় না। দা মাও ট্রেনারের কাঁধের ব্যাগ নামিয়ে মুখে আটকে রেখেছে। এমনকি গাড়ির দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে ছটফট করেছে ভেতরে ঢোকার জন্য। তারপর গাড়ি চলতে শুরু করলে গাড়ির পিছনে ছুটে সে বোঝানোর চেষ্টা করে- যেও না!জিয়া গাড়ির ভেতর থেকে দা মাওকে ছুটে আসতে দেখে গাড়ি থামিয়ে ওকে গাড়িতে তুলে নেয় এবং ক্যাম্পে ফিরে আসে। সারমেয়টি তাকে এতো ভালবেসে ফেলেছে সে আগে বোঝেনি।এরপর সে ক্যাম্পের আসেপাশে আবাসন খুঁজে সেখানে থেকে যায় আর প্রতিদিন দা মাও-এর সঙ্গে কিছু সময় কাটায়।