Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » বিবাহ || Samarpita Raha

বিবাহ || Samarpita Raha

আচ্ছা দিদি শুনছেন-কি়ংশুক ভবন কোথায় বলতে পারবেন!
হ্যাঁ কেন বলতে পারব না,তবে ভাবছি যিনি আসছেন কিংশুক ভবনের ঠিকানা জানতে চাইছেন।ওই ডানদিক দিয়ে বেরিয়ে দেখবেন আপনার “কিংশুক ভবন”। ধন্যবাদ জানিয়ে চলে গেলেন।
তবে মনটা তো আনচান করছে,কি আছে ওই বাড়িতে। আরেকজনের আবার আগমন, তাঁর এক প্রশ্ন। আমি হেসে বলি বলতে পারি , এমনকি পৌঁছে দেব,বলতে পারেন ওখানে আজ কি আছে??সবাই এক প্রশ্ন করছেন তো!!
আগন্তুক বলে ও তাই নাকি,ইস ভালো খবর দিলেন দিদি।বড্ড দেরি হয়ে গেল,যদি একটু দেখিয়ে দেন বাড়িটা।ওই বললেন না তো কি ব্যাপার।হ্যাঁ আপনাকে বলতে আপত্তি কিসের।
ওই বাড়ির ছোট ছেলে বিয়ে করতে রাজি হয়েছে,যাকে পছন্দ হবে তাকে বিয়ে করবে, কিছু জিনিসপত্র লাগবে না, লেখাপড়া তে গ্রাজুয়েট হলেই হবে। ছেলে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার। চটজলদি বিয়ে, গরিব, বড়লোক ভেদাভেদ নেই,।তার নেওয়া ইন্টারভিউ তে পাশ করলে বিয়ে।
এতক্ষণে বুঝলাম কেন দলে দলে লোক যাচ্ছে।
আমি ভাবতে লাগলাম , আমার বাবা অসুস্থ,তাইতো বাবার মুদি দোকানে আমাকে বসতে হয়।এম এ পড়ছি। আমি ও যেতে পারি।তবে পাত্রের বয়স জানা হয়নি। আমার বয়স বাইশ, গিয়ে দেখা যেতে পারে।আর ফর্সা, লম্বা ও আছি।ফটফট করে ইংরেজি বলতে অতটা পারি না,তবে মাতৃভাষা তে উত্তর দিতে তো পারি।মা বাবা শুনলে হাসবে, কেননা আমার ইচ্ছে নিজের পায়ে দাঁড়াবো। কিন্তু এইরকম বড় বাড়িতে হয়ত বিয়ে হবে না। সবাই তো ছেলে বা মেয়ের বাড়ি ঘরটা দেখে। আমাদের বাড়িটা ধুঁকছে,যেন ভেঙে পড়বে।
সুন্দর লাল সালোয়ার পরে কিংশুক ভবনে ঢুকি,থমকে যাই বাগানে সারি সারি লাল ফুলে ভরা পলাশ গাছ দেখে। বসন্তের দূত ডেকে চলেছে।মন পুলকিত হয়ে ওঠে।
ভুলে গেলাম কেন গিয়েছি ভিতরে
মনের হরষে গান গাইতে থাকি–”ওরে ভাই ফাগুন লেগেছে বনে বনে”
হঠাৎ পিঠে ঠাণ্ডা হাত, নিমেষে চমকে ওঠি একজন পুরুষ দেখে।ভয় পেয়ে বলি এত সুন্দর লাগছে লাল পলাশে ভরা বাগিচা দেখে।।আসলে এই বাড়ির ছোট ছেলের পাত্রী হবার পরীক্ষা দিতে এসেছি।কথায় কথায় আমার বায়োডাটা জেনে নেন তিনি। বসার ঘরে অপেক্ষা করছি কখন ডাকবে আমায়। সবাই চলে গেছে, আমি একা বেশ ভয় করছে।ডাক আসতেই শুনি আমি মনোনিত হয়েছি। কিন্তু ছেলে টার বয়স, চেহারা কিছু তো জানি না।ওই ভদ্রলোকটাকে দেখতে পেলে ভালো হতো।একজন বৃদ্ধা এসে বললেন বাহ খুব সুন্দর , এতদিনে রঙ লেগেছে পলাশে। কিছু বুঝতে পারছিলাম না। আমি বললাম বসন্তে লাল পলাশ তো ফোটে , আপনাদের বাগানে সারি সারি পলাশ গাছ বলে কিংশুক ভবন নাম। আবার বলেন উনি “রঙ লেগেছে পলাশে”।
আমি বাড়ি যেতে চাইলাম, বললাম আপনাদের ছেলে না দেখে বিয়ে করব না,সবে আমার বাইশ বছর।
আবার ওই ভদ্রলোক এলেন ,আমাকে আপনার পছন্দ হয় নি!
মনে মনে বলি আপনি হলে এক্ষুণি বিয়ে করে নিতাম।
মা ও বাবা এলেন , কথা হলো , পরদিন বিয়ে হয়ে গেল ওই সুন্দর ভদ্রলোকের সাথে।আজ বৌভাতে
বাইরে লেখা শুভ বিবাহ,আর নাম লেখা পলাশ-প্রিয়া।
আমি প্রিয়া আর বরমশায় হলেন পলাশ।
মনে মনে ভাবি নিজের বিয়ের ঘটকালি নিজেই করলাম। শুধু রঙ লেগেছে পলাশে বললে চলবে না ,প্রিয়ার ও রঙ লেগেছে। আকাশে বাতাসে এমনকি বাগানের লাল পলাশে ভরা গাছগুলো বলছে ওরে ভাই ফাগুন লেগেছে বনে বনে,রঙ লেগেছে পলাশে।পিকের কলতানে ঝালাপালা করে কান।
হানিমুনে বরের অনুরোধে গান গাই
ওরে ভাই ফাগুন লেগেছে বনে বনে।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *