ক্রমশ অভ্যস্ত হই নতুন জীবনে —
বাঁচার অদম্য ইচ্ছা জাগে প্রাণে,
ঘর মুছি, ঝাঁট দিই,বাসনও মাজি,
অর্ধাঙ্গিনী যোগাড় জাত করে, সীমিত ক্ষমতা সাথে,
খন্তি নাড়ি,নিজ হাতে, ভাত ফোটাই,
কাজের লোক সব মানা করা আছে তাই।
এইতো বাঁচার জন্য আসল লড়াই।
শেখানো বুলি এ নয়, যে যা ভাবে ভাবুক না তায়,
বাঁচার তাগিদ আছে তাই প্রাণপণ করে লড়ে যাই
মাটি কামড়ে পড়ে থাকি ঘরের ভিতরে সদাই।
ঘরেই হাঁটাচলা, কথাবলা, মৃদুমন্দ স্বরে–
আজটাকে পার করে দিলে পরে,
‘কাল’ টা যে কিরূপে কিভাবে এসে সামনে দাঁড়াবে!
দিশা পাই নাই, ফুরিয়েছে বাঁচার রসদ যে কতোটাই।
পোষ্য আছে কাবুলি বিড়াল পাশে পাশে, ওর জন্য চিন্তাও আসে-
জন্ম থেকে এ বাড়িতেই আছে, বড়ো ভালোবাসি তাকে,
কি করে যে ওর জন্য আহার জোটাই।
জ্যান্ত মাছ ছাড়া ও যে খায় না কিছুই–
বড়ো দমে যাই, ভাত রুটি বিস্কুট আমরা যা পারি খাই
সে সবের কিছুতেই ওর কোনো রুচি নাই।
হে ঈশ্বর, শক্তি দাও প্রাণে, আরও কিছুদিন লড়ে যাই,
এ লড়াই বাঁচার লড়াই —
মানুষে পশুতে দেখি ভেদাভেদ নাই–
ক্ষুধার রাজ্যে দেখি, একাকার হয়ে আছি আমরা সবাই।
কেউ ধরে মেরে খায়,কেউ বা যোগাড় করে,
কেউ কিছু পাই বা না পাই প্রাণপণে লড়ে যাই,
হেরে যেতে শিখি নাই, এ লড়াই জারি থাকে,
সংসারের সব কাজে,ধনী ও নির্ধন মাঝে যেদিকে তাকাই।
মালিক শ্রমিকে আজ ভেদাভেদ নাই–
ক্ষুধার জগতে সব একাকার হয়ে বাঁচে বাঁচার লড়াই।
শত্রু যদি দৃশ্যমান হয়,প্রাণপণে লড়ে যাওয়া যায়-
অদৃশ্য শত্রু হাসে,হাঁচি ও কাশির সাথে,জ্বর হয় তাই।
প্রাণ হানি, প্রাণ নাশ আতঙ্ক ছড়ায় বিশ্বত্রাস-
রক্তবীজ ভবত্রাস নিদারুণ ভাইরাস ফিরে ফিরে আসে দেখি তাই।
তবু্ও তো লড়ে যেতে হবে,
সাবধান হতে হবে কাজে ও কথাতে।
নির্মোহ মন নিয়ে নিরাসক্ত হয়ে তাই গৃহবন্দী হয়ে যাই,
প্রাণপনে লড়ে যাই,
শ্লোগান টা মনে পড়ে, এ লড়াই বাঁচার লড়াই।।