ফুটবল
ডেঙ্গু জ্বরের পর হসপিটালের অভিজ্ঞতা, বাড়িতে এসে শুয়ে থাকা, ওষুধ, দুর্বলতা এগুলো দুঃখ জনক হলেও একটা আনন্দ থেকে বঞ্চিত হইনি। তা হল কাতার ফুটবল বিশ্বকাপ। সেই জ্বর এখনও সকলের মধ্যে বর্তমান। তবে খেলা দেখতে দেখতে আগের দেখা বিশ্বকাপ খেলোয়াড়দের যেমন দর্শক আসনে দেখেছি, তেমনি পাশে বসা বাবার মুখে আমার জন্মের আগের অনেক ঘটনা শুনেছি যা দেখার সৌভাগ্য হয়নি। তা জার্মানির বেকেনবাওয়ার-রুমেনিগেই হোক বা পেলে-গ্যারিঞ্চা। আমার কথা হল যারা পুরোভাগে থেকে টিমকে জেতান, তাদের যতটা মনে থাকে, যারা তাদের উপযুক্ত সাহায্য বা প্রতিদান দেয় তারা সেভাবে পাদপ্রদীপের আলোয় থাকে না।
আর্জেন্টিনার খেলায় দর্শক আসনে মারাদোনার ভর্তি ছবি। কিন্তু বুরুচাগা, ক্যানিজিয়াকে কেউ মনে রেখেছে কি? নেদারল্যান্ডসের গুলিট বিশ্বখ্যাত। কিন্তু তার সঙ্গে বাস্তেন আর রাইকার্ডের জুটি সে সময় যেকোনো প্রতিপক্ষের চিন্তার কারণ ছিল। এবার পাঠকের কাছে আমার স্বীকারোক্তি এ কথাও পুরো আমার নয়, যার তার নাম এস মুখার্জি যাকে পাড়ার গুরুজনরা ফ্যান্সিদা বলে ডাকতেন। আজ তাঁর স্মৃতি আছে, কারণ উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ছুটিতে দোকান থেকে একদিন যখন বাড়ি আসছি, হঠাৎ সত্তর উর্ধ এই অতি সুপুরুষ আমায় ডেকে বললেন-” এত সুন্দর ফিগার তোমার, খেলাধুলা করনা কেন?” বললাম “স্কুলে একটু খেলেছি তারপর….”। কথা শেষ হতে না দিয়ে বলেছিলেন ” আজ বিকাল চারটেতে বাড়ি এস, দরকার আছে। ” জানতাম অলিম্পিকে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করা থেকে জওহরলাল নেহরুর পুরস্কার ওনার ঝুলিতে। তাই পাশেই বাড়ি হলেও একটু ভয় লেগেছিল। কিন্তু তার পর দশ থেকে পনেরোটা বিকাল ওনার অভিজ্ঞতা থেকে আরম্ভ করে ডায়মন্ড ও ডায়মন্ড কাটার ফরমেশন খাতায় ছবি এঁকে দেখিয়েছিলেন ও ওনার লেখা একটি বই দিয়ে ছিলেন যা এখনও স্বযত্নে রক্ষিত আছে। এরপর যখনই বিশ্বকাপ দেখেছি, ওনার মনে থাকা উপদেশগুলোর মধ্যে কেন জানি না এটা বার বার মনে পড়েছে ” শুধু সেনাপতি কিচ্ছু
করতে পারে না যদি সৈন্যরা হৃদয় দিয়ে যুদ্ধ না করে। কিন্তু সৈন্যদের কেউ বিশেষ পাত্তা দেয় না। “