Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » প্রশ্নোত্তর || Tarapada Roy

প্রশ্নোত্তর || Tarapada Roy

এবার আমাদের প্রশ্নোত্তর-পর্ব।

এক ধরনের রসিকতা আছে—যা কথোপকথন বা চমকপ্রদ প্রশ্নোত্তরের সুবাদে অনেক সহজে বোধগম্য হয়; অন্তত কথকের বলা কিংবা লেখকের লেখার কাজটা যথেষ্ট সহজ হয়ে যায়।

একটা সহজ উদাহরণ দিয়ে শুরু করি।

রাশভারি স্বামী তাঁর সরলা স্ত্রীকে নিয়ে এক চিনে হোটেলে খেতে গেছেন। প্রথমে সুপ পরিবেশিত হয়েছে।

স্ত্রী এই প্রথম চিনে হোটেলে এসেছেন। বারবার, আসার পথে এবং আগে স্বামীর কাছে খুঁতখুঁত করছেন, ‘ওগো, সাপ, ব্যাঙ, আরশোলা, বাঁদরের খুলি অথবা কুকুরের লেজ—এসব কিন্তু আমি খেতে পারব না।

স্বামী গম্ভীর হয়ে জবাব দিয়েছেন, ‘এসব জিনিস চিনে হোটেলে পাওয়া যায় না। এ-সমস্তই তোমার মনগড়া দুর্ভাবনা।’

এইবার সুপ খাওয়ার আদিপর্বে স্ত্রী বেচারা ম্লানমুখে সুপ খেতে খেতে স্বামীকে বললেন, ‘ওগো আরশোলা না হোক, আরশোলার ডিম খাওয়া কি উচিত?’

স্বামীদেবতা গম্ভীর মুখে একটা চাপা ধমক দিয়ে স্ত্রীকে থামিয়ে দিয়ে বললেন, ‘কী সমস্ত বাজে কথা বলছ! সুপটা চমৎকার হয়েছে। খেয়ে নাও।’

সুপ খাওয়া শেষ হওয়ার পর পরিতৃপ্ত স্বামী হোটেলের অন্য লোকেরা যাতে শুনতে না পায় এরকমভাবে গলা নামিয়ে স্ত্রীকে প্রশ্ন করলেন, ‘তুমি হঠাৎ আরশোলার ডিমের কথা বললে কেন?’

স্ত্রী বললেন, ‘তখন বলেছিলাম, এখন আর কোনও ব্যাপার নেই।’

স্বামী বললেন, ‘কেন?’

স্ত্রী জবাব দিলেন, ‘তোমার সুপের প্লেটে কয়েকটা আরশোলার ডিম ভাসতে দেখেছিলাম সে তুমি সব খেয়ে নিয়েছ। তাই বলছিলাম, এখন আর কোনও ব্যাপার নেই।’

সারারাত বন্ধ জানলার বাইরে কয়েকটা মশা অপেক্ষায় ছিল।

ভোরবেলায় স্বামী ঘুমোচ্ছেন, কিন্তু সংসারের কাজ আছে, স্ত্রী ঘুম থেকে উঠলেন, উঠে জানলাগুলো খুলে দিলেন, সঙ্গে সঙ্গে অপেক্ষমান মশাগুলো ঘরে ঢুকল। সারারাতের সেইসব অনাহারী মশা।

কিন্তু প্রশ্নটা হল, মশাগুলো ঘরে ঢুকে যখন নধরকান্তি স্বামীকে বিছানায় শায়িত দেখতে পেল, তারা নিজেদের মধ্যে কী কথা বলল?

মশাদের কথা সবাই বোঝে না, কিন্তু এই গল্পের নায়ক—মানে আমি সেদিন আধো-ঘুমে আধো-জাগরণে বিছানায় শুয়েছিলাম। স্পষ্ট শুনলাম, মশারা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করছে, ‘বহুদিন পরে বিছানায় প্রাতরাশ।’

তা হলে প্রশ্নোত্তর আকারে সাজিয়ে দিই।—

প্রশ্ন: ভোরবেলায় ঘরে ঢুকে মশারা যদি দেখে তখনও বিছানায় ঘুমন্ত মানুষ শায়িত রয়েছে, তা হলে তখন তারা নিজেদের মধ্যে কী বলে?

উত্তর: মশারা পরস্পরকে বলে, ‘চমৎকার আয়োজন। বিছানায় প্রাতরাশ।’

তবে অনেক প্রশ্ন, অনেক জিজ্ঞাসাই থাকে সমাধানের জন্যে, উত্তরের জন্যে নয়। সেই প্রশ্নগুলি ঠিক প্রশ্ন নয়, বলা চলে আবেদন, প্রার্থনা বা অনুরোধ।

সেই স্থূলাঙ্গিনী মহিলাকে আরেকবার স্মরণ করি। একদিন একটা খুব ভিড়ের বাসে বহু কষ্টে বহু সহযাত্রীকে দলিত-মথিত করে এবং নিজে হাঁসফাস করতে করতে তিনি উঠে এসে কোনওরকমে হ্যান্ডেল ধরলেন, তার পরেই অতি কাতরকণ্ঠে প্রশ্ন করলেন, ‘কেউ কি আমাকে একটু বসবার জায়গা দেবেন না?’

সবাই জানেন, এ ধরনের, কাকুতিমিনতিতে মহানগরীর যানবহনে খুব-একটা সুবিধে হয় না, কিন্তু উক্ত ভদ্রমহিলা তখন প্রচণ্ড ঘেমে গেছেন, দরদর টপটপ ঘামের জল পড়ছে তাঁর মুখমণ্ডল থেকে, সমস্ত শরীর ঘামে-ভেজা, তার ওপরে মারাত্মক হাঁফাচ্ছেন।

অবশেষে সামনের সিটের এক অতি শীর্ণ, কৃশকায় ভদ্রলোক উঠে দাঁড়ালেন এবং মহিলাকে বললেন, ‘দিদি, আপনাকে পুরো জায়গা দেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই। আমি এই সামান্য চার আনা চাঁদা দিলাম আপনার বসার জন্য।’

পুনশ্চ যাওয়ার আগে মশার গল্পে আরোর যাই।

এক স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবিরে কয়েকটা মশা অবাক হয়ে সবকিছু দেখছিল। ছোট মশাটি বড় মশাকে জিজ্ঞাসা করল, ‘বড়মামা, এরা যে রক্ত দিচ্ছে, হাসিমুখে রক্ত দিচ্ছে, সেটা আমাদের দেয় না। কেন?

বড়মামা উত্তর দিলেন, ‘সেটাই তো দুঃখের কথা। এর এক শতাংশ রক্ত খাওয়ার চেষ্টা করলেই মানুষের হাতে আমাদের মারা পড়তে হবে।’

পুনশ্চ:

(এক) দূরদর্শনের একটি কাল্পনিক বিজ্ঞাপন: —

সুন্দরী তরুণী প্রশ্ন করছেন, ‘ডাক্তারবাবু, ডাক্তারবাবু, আমি আমার নিশ্বাসের দুর্গন্ধ কীভাবে দূর করতে পারি?’

ডাক্তারবাবু সুন্দরীর মুখমণ্ডল থেকে যথাসাধ্য দূরে নিজের মুখমণ্ডলকে সরিয়ে এবং তা ছাড়াও বাঁ-হাতে নিজের নাক টিপে ধরে উত্তর দিলেন, ‘নিশ্বাস নেওয়া বন্ধ করে দিন।’

(দুই) অন্য এক ভাক্তারের কূট প্রশ্ন এবং উত্তর: —

একঘেমেয়ি ভাল নয়, এবার আর সুন্দরী তরুণী নয়, মধ্যবয়সি ভদ্রলোক, তবে তিনিও ডাক্তারখানায়। অবশ্য এ ডাক্তার সাধারণ ডাক্তার নন, ইনি মানসিক রোগের ডাক্তার।

ভদ্রলোকের সরাসরি প্রশ্ন: ‘ডাক্তারবাবু, ডাক্তারবাবু, আমাকে আমার বাড়ির লোকেরা পাগল ভাবে কেন?’

ডাক্তারবাবুর প্রশ্ন: ‘কেন?’

ভদ্রলোকের উত্তর: ‘কারণ আমি সাদা রুমালের চেয়ে রঙিন রুমাল বেশি পছন্দ করি।’

ডাক্তারবাবুর উত্তর: ‘তাতে কী হয়েছে? আমিও সাদা রুমালের চেয়ে রঙিন রুমাল পছন্দ করি।’

ভদ্রলোকের এবার উত্তেজিত হওয়ার পালা, তিনি প্রবল উত্তেজনার সঙ্গে প্রশ্ন করলেন, ‘ডাক্তারবাবু, আপনিও রঙিন রুমাল পছন্দ করেন? কী আশ্চর্য! কী সৌভাগ্য আমার! কিন্তু একটা কথা বলুন ডাক্তারবাবু, সাদা রুমাল আপনি ভেজে খেতে পছন্দ করেন, নাকি সেদ্ধ করে খেতে? নাকি এমনিই কুচিকুচি করে একটু নেবুর রস আর কাসুন্দি দিয়ে?’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *