মধুমালতীর কুঞ্জ – চৈত্র সন্ধ্যা- আমরা দু জনে
আবার আগের মতো ব’সে আছি খোলা জানালায়-
চাঁদ ওঠে ধীরে ধীরে , স্নাত মর্ত্য স্নিগ্ধ সঞ্জীবনে-
কেবল আমরা যেন প্রেতচ্ছায়া, গলগ্রহ দায় ।।
দ্বাদশ বৎসর পূর্বে শেষ বসেছিলুম উভয়ে
এখানে যুগলাসনে, এ-রকম কবোষ্ণ প্রদোষে ;
নবানুরাগের জ্বালা ইতিমধ্যে নিবেছে হৃদয়ে,
সম্প্রতি মন্দাগ্নি কাম অনুচিত পারণে, উপোসে ।।
নিতান্ত নিঃসাড় আমি, তথাচ সে কথার জাহাজ ;
মুখের বিরাম নেই, সঙ্গে সঙ্গে নাড়ে নিরন্তর
প্রণয়ের চিতাভস্ম; বোঝে না সে কোন মতে আজ
নির্বাপিত বিস্ফুলিঙ্গ পুনরায় হবে না ভাস্বর।।
অফুরন্ত ইতিহাস : কুচিন্তার বিরুদ্ধে সে নাকি
এত দিন যুদ্ধ ক’রে উপনীত আর্তির চরমে
অপ্রতিষ্ঠ একনিষ্ঠা, পাপস্পর্শে নষ্ট তার রাখী।
তাকাই বোবার মতো সে যখন সায় চায় সমে ।।
অগত্যা পালিয়ে বাঁচি; কিন্তু মৃত লাগে চন্দ্রালোক;
ভূতের কাতার দেখি দু পাশের অতিক্রান্ত গাছে;
নিরালায় কথা কয় পৃথিবীর পুঞ্জিভূত শোক;
ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটে চলি, তবু সঙ্গ ছাড়ে না পিশাচে।।
-হাইন্রিখ্ হাইনে