যাই যাই ডুবে যাই —
আরো আরো ডুবে যাই ,
বিহ্বল অবশ অচেতন ।
কোন্ খানে , কোন্ দূরে ,
নিশীথের কোন্ মাঝে ,
কোথা হয়ে যাই নিমগন ।
হে ধরণী , পদতলে
দিয়ো না দিয়ো না বাধা ,
দাও মোরে দাও ছেড়ে দাও —
অনন্ত দিবস-নিশি
এমনি ডুবিতে থাকি ,
তোমরা সুদূরে চলে যাও ।
এ কী রে উদার জ্যোৎস্না
এ কী রে গভীর নিশি
দিশে দিশে স্তব্ধতা বিস্তারি!
আঁখি দুটি মুদে আমি
কোথা আছি কোথা গেছি
কিছু যেন বুঝিতে না পারি ।
দেখি দেখি আরো দেখি ,
অসীম উদার শূন্যে
আরো দূরে আরো দূরে যাই —
দেখি আজি এ অনন্তে
আপনা হারায়ে ফেলে
আর যেন খুঁজিয়া না পাই ।
তোমরা চাহিয়া থাকো
জোছনা অমৃত-পানে
বিহ্বল বিলীন তারাগুলি ।
অপার দিগন্ত ওগো ,
থাকো এ মাথার’পরে
দুই দিকে দুই পাখা তুলি ।
গান নাই , কথা নাই ,
শব্দ নাই , স্পর্শ নাই ,
নাই ঘুম , নাই জাগরণ ।
কোথা কিছু নাহি জাগে ,
সর্বাঙ্গে জোছনা লাগে ,
সর্বাঙ্গ পুলকে অচেতন ।
অসীমে সুনীলে শূন্যে
বিশ্ব কোথা ভেসে গেছে
তারে যেন দেখা নাহি যায় —
নিশীথের মাঝে শুধু
মহান্ একাকী আমি
অতলেতে ডুবি রে কোথায় ।
গাও বিশ্ব গাও তুমি
সুদূর অদৃশ্য হতে
গাও তব নাবিকের গান —
শত লক্ষ যাত্রী লয়ে
কোথায় যেতেছ তুমি
তাই ভাবি মুদিয়া নয়ান ।
অনন্ত রজনী শুধু
ডুবে যাই নিভে যাই
মরে যাই অসীম মধুরে —
বিন্দু হতে বিন্দু হয়ে
মিশায়ে মিলায়ে যাই
অনন্তের সুদূর সুদূরে ।