হাওয়ায় মশারি ওড়ে পাড়াগাঁর অন্ধকার ঘরে।
ঐখানে ঘুমাতো সে মশারির নিচে, মনে পড়ে
মাঝে মাঝে বসতো ঠাণ্ডা দেয়ালে হেলান দিয়ে, ফিকে
অন্ধকারে কী সব দেখতো আর শহরের দিকে,
অবছায়া শহরের দিকে দৃষ্টি ছিলো প্রসারিত।
কখনও সে আচমকা উল্লসিত, কখনও-বা ভীত
লুকাতো বালিশে মুখ। স্নেহের সৈকত থেকে দূরে
নির্বাসিত, কখনও সে উঠতো নেচে কী ভৌতিক সুরে।
কোথায় থাকতো পড়ে ময়লা জামা জুতো, শূন্য থালা
এলোমেলো। জানালার শিকে হাত; পাখি, গাছপালা,
হঠাৎ-পালিয়ে-যাওয়া বেজি তার মাথার ভেতরে
একাকার, উদ্দেশ্যবিহীন এক নিঝুম চক্করে
ছিলো মেতে সর্বক্ষণ, কখনও-বা অতিশয় ঝুঁকে
কাগজের বিরানায় হিজিবিজি নিতো কী-যে টুকে
কিংবা সবকিছু ফেলে-টেলে হতো সে ভ্রমণকারী
রুক্ষ কিংবা বৃষ্টিময় পথে একা সাত তাড়াতাড়ি।
এখন চুলের গুচ্ছে তার চৈত্র শ্রাবণের স্মৃতি
মরহুম, কোনোদিন অতীতের হবে না বিস্তৃতি
তার অভ্যন্তরে আর। লোবান কি সুখাদ্যের ঘ্রাণ
কখনও জাগাতে তাকে পারবে না। কী যে পরিত্রাণ
না-ফেরায় আছে ভেবে চলে গ্যাছে দূর বিরানায়।
ছিলো কি সন্ন্যাসে মন সারাক্ষণ? পানি বয়ে যায়,
হাওয়ায় মশারি ওড়ে বিজন নিবাসে নিরন্তর
পাড়াগাঁর অন্ধকারে। ভয়ানক স্বরহীন ঘর।