Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » নরক দর্শন || Samarpita Raha

নরক দর্শন || Samarpita Raha

উফ এই রকম নরকে থাকতে গা ঘিনঘিন করছে বিনতার।এরা নাকি ছেলের ঠাকুমা , দাদু।বরের অবর্তমানে বিনতাকেই সংসার চালাতে হবে। দুই বছরের দুধের শিশুকে নিয়ে কোথায় ঠাঁই
মিলবে!
বাপের বাড়ি বলে বিনতার কিছু নেয়।জন্ম থেকে মাকে সাদা থান পরতে দেখেছে। মামীর সংসারে মা ও বিনতাকে সব কাজ কর্মের পরিবর্তে আশ্রয় দিয়েছিল। গভর্নমেন্ট স্কুলে নবম শ্রেণী পর্যন্ত পড়বার পর সম্বন্ধ দেখে
শিলিগুড়ি তে বিয়ে দিয়ে দেয়। বর বিয়ের দুই বছরের মধ্যে ওপরে চলে যায়।জোয়ান শ্বশুর কাজ করতে তো পারে !
তা না বিনতাকে কাজ করতে হবে।
শ্বশুর একেক দিন নানান লোক ঘরে আনতে লাগে।
চড় কিল মেড়ে বিনতাকে কুকুর্তির আসনে বসাত। দুধের বাচ্চাটা একদিন না খেতে পেয়ে মরেই গেল। সেদিন বাচ্চার দাদু ও ঠাকুমা কি খুশি।একজন মাকে বলে যা হয়েছে ঠিক হয়েছে।কাল কী হবে কিছু জানা নেই। ভগবান ভালোর জন্য করেন।ওই ছেলের পরিচয় হতো নষ্টা মায়ের সন্তান।কে নষ্টা!কেন নষ্টা?কি জন্য নষ্টা?কাদের জন্য নষ্টা?
সব প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক দিতে থাকে। মায়ের চিঠিটা তেও তাই লেখা নষ্টা।তাই মামাবাড়িতে বিনতা না আসে।
কি করে বিনতা পালাবে পথ পায় না।কোন খাবারে কি মেশায় তারপর বিনতা প্রায় অচেতন থাকে। বুঝতে পারে অনেক লোক আসে । কুকীর্তি করে যায়। শাশুড়ি কি সব পাতা ,বড়ি খাওয়ায় তা জ্ঞান ফেরার পর মনে থাকে না। একদিন ও রাগ করে খাবার খায় নি। নেশা ও হয়নি।দেখে শ্বশুর তার ঘরে।ছুটতে ছুটতে স্টেশনে আসে।ও জানে না আজ কপালে কি লেখা আছে।!কাল কী হবে!পরশুর কথা নায় বা ভাবল।
ছোটবেলায় বন্ধুরা মিলে বলত ওই ছড়া–“আনি মানি জানি না ,কোথা যাব জানি না”
।সব মনে আসে।

একটা প্ল্যাটফর্ম টিকিট কেটে ট্রেনে ওঠে পড়ে। চেকারের বা টিকিট পরীক্ষকের সঙ্গে লুকোচুরি খেলতে খেলতে শিয়ালদহ স্টেশনে নামে। নিজের জায়গা চিনতে পারে।পনেরোতে বিয়ে হয়েছিল এখন ঊনিশ। চারবছর পর কোলকাতায়।এখান থেকে গড়িয়া যাব টিকিট বাবু একটু বলে দেবেন। আমার টাকার ব্যাগ, জামাকাপড় সব চুরি হয়ে গেছে। টিকিট বাবুর বৌ পোয়াতি। একজন মেয়ের দরকার। কথায় কথায় সব দুঃখের কথা জেনে নিজের বাড়িতে নিয়ে যায়।বিনতা বোঝে কাল কী হবে কিছু জানা নেই।
সবতো হারিয়ে গেছে।হারাবার আর কিসের ভয়।বিশ্বাসে মিলায় বস্তু।সত্যি বিনতা ঘর পায়।
টিকিট বাবুর স্ত্রী বাচ্চা হতে গিয়ে মারা যান। অগত্যা বাচ্চার দায়িত্ব বিনতাকে নিতে হয়। ।বিনতার ছেলের কথা মনে করে বাচ্চাকে বড় করার দায়িত্ব নেয়।তারপর বহু বছর
কেটে যায়।এক সুস্থ জীবন পেয়ে খুব খুশিতে থাকে। ছেলে ও পিসীর চোখের মনি ‌।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *