তোমার না-আসাগুলো ক্রুশবিদ্ধ যীশুর যন্ত্রণা
হ’য়ে ঝরে মনে নিশিদিন। এ-ও জানি
অনেকেই নানা যন্ত্রণায় ভোগে দিনরাত আর
নিজেদের ভাগ্যকে অভিসম্পাতে করে
জর্জরিত; কেউ কঠিন অসুখে
ভুগে ভুগে হতাশার নিশিডাকে অন্ধ বিলে ডোবে,
অনেকেই জঠর-জ্বালায় বকে প্রায়শ প্রলাপ,
কেউ কেউ ক্ষোভে
মাথা ঠোকে বধির দেয়ালে, কেউ কেউ
কী জানি কিসের ঘোরে করে বিষ পান, ঝোলে ফাঁসির দাড়িতে!
কাউকে কাউকে লালসার আগুনের লকলকে
জিভ প্ররোচিত করে কুমারীর স্নিগ্ধ মুখে ছুঁড়তে এসিড,
কারও কারও অন্তর্গত উলঙ্গ সন্ত্রাস
শান্তিপ্রিয় মানুষের ঘরে বোমা মারে,
লাগায় আগুন আর তোমার না-আসা
অবিরত পোড়ায় আমাকে
অথচ যখন কেউ আমাকে কখনও প্রশ্ন করে,
স্বদেশে আমার সবচেয়ে প্রিয় কী, তখনই
নির্দ্বিধায় করি উচ্চারণ অন্তরের সবটুকু ভাল-লাগা
মিশিয়ে তোমারই নাম। তোমার না-আসাগুলো এই
মুহূর্তে স্মরণে আনে তোমার হাসির
আভা যা নতুন চরে ভোরবেলাকার
নরম রোদের মতো ছড়ানো কখনও, কখনও-বা
জ্যোৎস্না-ধোঁয়া মেঘনার রূপালি মৃদু ঢেউ।
এই তো ক’দিন আগে তোমার ব্লাউজ নাকি ত্বক
বিলিয়েছে সুঘ্রাণ আমাকে,
তোমার স্তনের অন্তর্ভেদী দৃষ্টি আমাকে মাতাল
করেছে, তোমার ঠোঁট প্রজাপতির স্পন্দন হয়ে
ছুঁয়েছে আমাকে আর আজ
সেই তুমি কীভাবে যে আছো আমার বিষণ্ন ঘাটে
নৌকা না ভিড়িয়ে, বলো? কতকাল আর তোমার না-আসাগুলো
এভাবে আমার দেহমনে ঠুকে যাবে কালো পেরেক কেবল?