অন্তর্গত নৈঃসঙ্গে আমার দিন যায়, তুমুল ভিড়েও আমি
নৈঃসঙ্গের তুষার-তুফানে ডুবে থাকি। কখনও নেকড়ে টুঁটি
চেপে ধরে; দিন তো যাবেই চলে, যেভাবেই হোক কেটে যাবে,
কখনও হয়তো চক্রাকার ঘুরে ঘুরে
কখনও-বা ধুঁকে ধুঁকে। স্বস্তি নেই, শান্তি নেই, মাথার উপর
সর্বদা ঝুলবে তৈরি মনে, ঘরে থাকা
হবে দায় আতঙ্কের থাবার সন্ত্রাসে।
তবুও তোমার কথা মনে পড়ে, মনে পড়ে অতীত দিনের
ঝলমলে কত না প্রহর কাটিয়েছি
আমরা দু’জন স্বর্গতুল্য স্থানে, যেখানে পাখিরা গানে
সাজিয়ে দিয়েছে অনুরাগে আমাদের
অনন্য মিলনক্ষেত্র। তোমার চুম্বনে
অমরতা পেয়ে গেছি ভেবে গাঢ় আলিঙ্গনে বেঁধেছি তোমাকে।
চকিতে কে যেন ভেংচি কেটে আমাদের অপরূপ
বাসর গুঁড়িয়ে হো হো হেসে ওঠে, আমি
ভীষণ জখমি এক সৈনিকের মতো পড়ে থাকি এক কোণে
কর্কশ ধুলোয় আর বিপন্ন আমাকে
ঘিরে কতিপয় নৃত্যপর অর্ধেক মানুষ আর
অর্ধেক ভয়াল পশু। চারপাশে অগণিত হাড়,
করোটি ছড়ানো। নাচ থেকে গেলে অর্ধপশু আর
অর্ধ-মানুষেরা দাঁত নখ খিঁচিয়ে এগিয়ে আসে
আর আমি ভীষণ প্রমাদ গুণে হাল
ছেড়ে দিয়ে চোখ বন্ধ করি, প্রখর দুর্গন্ধে ডুবে
যেতে যেতে শুনি অসহায়, ভীত গোপার করুণ
আর্তনাদ, চারদিকে হাতড়াই, যদি হাতিয়ার পেয়ে যাই।