Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » ঝি || Sharadindu Bandyopadhyay

ঝি || Sharadindu Bandyopadhyay

বংশে সাত পুরুষে কেহ চাকরি করে নাই, তাই প্রথম চাকরি পাইয়া ভয় হইয়াছিল, না জানি কত লাঞ্ছনা-গঞ্জনাই ভাগ্যে আছে।

মার্চেন্ট আপিসে কেরানির চাকরি। যাঁহার চেষ্টায় ও সুপারিশে চাকরি পাইয়াছিলাম তিনি আপিসের বড়বাবু, আমার পিতৃবন্ধু—নাম গণপতি সরকার। ভেলকি-টেলকি দেখাইতে পারিতেন কিনা বলিতে পারি না, কিন্তু তাঁহার চেষ্টায় সহজেই চাকরি জুটিয়াছিল। এমন কি আমাকে কর্তৃপক্ষের সহিত দেখা-সাক্ষাৎও করিতে হয় নাই।

গণপতিবাবুর চেহারাটি ছিল তাঁহার পাকানো উড়ানি চাদরের মতোই ধোপদুরস্ত এবং শীর্ণ নমনীয়তায় বঙ্কিম; তাঁহাকে নিংড়াইলে এক বিন্দু রস বাহির হইবে এমন সন্দেহ কাহারও হইত না। ক্রমশ জানিতে পারিয়াছিলাম তিনি বিলক্ষণ রসিক লোক, কিন্তু তাঁহার সরসতা ছিঁচকে চোরের মত এমন অলক্ষ্যে যাতায়াত করিত যে সহসা ধরা পড়িত না।

তাঁহার একটি মুদ্রাদোষ ছিল, কথা বলিবার পর তিনি মাঝে মাঝে মুখের বামভাগে একপ্রকার ভঙ্গি করিতেন; তাহাতে তাঁহার অধরোষ্ঠের প্রান্ত হইতে চোখের কোণ পর্যন্ত গালের উপর একটি অর্ধচন্দ্রাকৃতি খাঁজ পড়িয়া যাইত। এই ভঙ্গিটাকে হাসিও বলা যায় না, মুখ-বিকৃতি বলিলেও ঠিক হয় না

যেদিন প্রথম আপিস করিতে গেলাম, গণপতিবাবু আমার সাজ-পোশাক পর্যবেক্ষণ করিয়া বলিলেন, আর সব ঠিক আছে, কিন্তু লপেটা চলবে না; কাল থেকে শু পরে আসবে। চলো, তোমাকে বড় সাহেবের সঙ্গে দেখা করিয়ে আনি। সাহেবের সামনে বেশী কথা কইবে না; তিনি যদি রসিকতা করেন, বিনীতভাবে মুচকি হাসবে।

বলিয়া তিনি গালের ভঙ্গি করিলেন।

বেশ ভয়ে ভয়েই সাহেবের সম্মুখীন হইলাম। তাঁহার খাস কামরায় প্রবেশ করিয়া কিন্তু একেবারে অবাক হইয়া গেলাম। সাহেব মোটেই নয়—ঘোরতর কালা আদমি। চণ্ডীর মহিষাসুরকে জলজ্যান্ত নরমূর্তিতে কল্পনা করিলে ইহার চেহারাখানা অনেকটা আন্দাজ করা যায়; বেঁটে, মোটা, গজস্কন্ধ, চক্ষু দুটি কুঁচের মতো লাল, তাহার উপর বিলাতী পোশাক পরিয়া অপূর্ব খোলতাই হইয়াছে। বয়স অনুমান করা কঠিন, তবে চল্লিশের নীচেই। প্রকাণ্ড টেবিলের সম্মুখে বসিয়া একমুখ পান চিবাইতেছেন এবং দেশলায়ের কাঠি দিয়া দাঁত খুঁটিতেছেন।

পরে জানিতে পারিয়াছিলাম মিস্টার ঘনশ্যাম ঘোষ একজন অতি তুখড় ও কর্মনিপুণ ব্যবসায়ী, বছরে বার দুই বিলাত যান; সেখানে কোম্পানির বিলাতী কর্তৃপক্ষ তাঁহার কথায় ওঠে বসে। বস্তুত, বিলাতী সওদাগরী আপিসে একজন বাঙালীর এমন অখণ্ড প্রতাপ আর কখনও দেখা যায় নাই।

আমার সহিত প্রথম সাক্ষাতেই এমন ব্যবহার করিলেন যে একেবারে মুগ্ধ হইয়া গেলাম। ভয় তো দূর হইলই, ইনি যে একজন অত্যন্ত কদাকার ব্যক্তি একথাও আর মনে রহিল না! কথার অমায়িকতায় মুহূর্ত মধ্যে আমাকে বশীভূত করিয়া ফেলিলেন।

এই যে বড়বাবু, এটি বুঝি আপনার নতুন অ্যাসিস্ট্যান্ট? বেশ বেশ।…দাঁড়িয়ে রইলে কেন হে? বসো।…বড়বাবু, আপনি আপনার কাজে যান না…বিয়ে করেছ? বেশ বেশ, আরে, তোমাদেরই তো বয়েস। এখন চাকরি হল, আর কি! মন লাগিয়ে কাজ করবে ব্যস, দেখতে দেখতে উন্নতি; আমার আপিসে কাজের লোক পড়ে থাকে না…নাও, পান খাও…আরে, লজ্জা কিসের? তোমরা হলে ইয়ং ব্লাড, নতুন বিয়ে করেছ, পান খাও তা কি আর আমি জানি না? আমার আপিসে ডিসিপ্লিনের অত কড়াকড়ি নেই…নাও নাও—হে হে হে…

তারপর সুখস্বপ্নের মতো দিনগুলি কাটিতে লাগিল। চাকরি যে এত মধুর তাহা কোনদিন কল্পনা করি নাই। কাজকর্ম এমন কিছু নয়, একজন সাধারণ বুদ্ধিসম্পন্ন লোক দুঘণ্টার মধ্যে সমস্ত দিনের কাজ শেষ করিয়া ফেলিতে পারে। তারপর অখণ্ড অবসর, সমবয়স্ক সহকর্মীদের সঙ্গে গল্প-গুজব, বারান্দায় গিয়া সিগারেট টানা। কর্তা প্রায়ই ডাকিয়া পাঠান, তাঁহার সামনে চেয়ারে গিয়া বসি, তিনি পান দেন, খাই, কখনও বাড়ি হইতে ভাল পান সাজাইয়া লইয়া গিয়া তাঁহাকে দিই। তিনি খুশি হইয়া খুব রঙ্গতামাশা করেন; কখনও বা রাত্রির কথা জিজ্ঞাসা করেন। তাঁহার হাসি-তামাশা একটু আদিরস-ঘেঁষা হইলেও ভারি উপাদেয়। বস্তুত, তিনি যে অত্যন্ত নিরহংকার অমায়িক প্রকৃতির মানুষ এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ রহিল না।

গণপতিবাবু কিন্তু মাঝে মাঝে আমাকে সতর্ক করিয়া দিতেন ওহে বাবাজী, একটু সামলে চলো। কর্তা তোমাকে ভাল নজরে দেখেছেন খুবই আনন্দের কথা, কিন্তু যতটা রয়-সয় ততটাই ভাল। আস্কারা পেয়ে যেন বাড়াবাড়ি করে ফেলো না নিজের পোজিশন বুঝে চলো। কর্তা লোক খারাপ নয়, কিন্তু কথায় বলে বড়র পিরিতি বালির বাঁধ…।

লক্ষ্য করিয়াছিলাম, তিনি কর্তার সহিত প্রভু-ভৃত্যের সম্বন্ধ একেবারে খাঁটি রাখিয়াছিলেন। কর্তা তাঁহার সহিতও হাস্য-পরিহাস করিতেন, কিন্তু তিনি বিনীতভাবে মুচকি মুচকি হাসি ছাড়া আর কোনও উত্তরই দিতেন না।

.

মাস তিনেক কাটিবার পর একদিন দুপুরবেলা অবকাশের সময় কর্তার ঘরে গিয়াছি; ঘরে পা দিয়াই কেমন যেন অস্বস্তি বোধ করিলাম। কর্তা নিজের চেয়ারে ঘাড় গুঁজিয়া বসিয়া ছিলেন, আমার সাড়া পাইয়া চোখ তুলিলেন। তাঁহার চোখ দেখিয়া থমকিয়া গেলাম। জবাফুলের মতো লাল চোখে আমাকে কিছুক্ষণ নিরীক্ষণ করিয়া কর্কশকণ্ঠে বলিয়া উঠিলেন, কি চাও? এ ঘরে তোমার কি দরকার?

তাঁহার এরকম কণ্ঠস্বর কখনও শুনি নাই, থতমত খাইয়া গেলাম, আজ্ঞে—আমি…

তিনি লাফাইয়া উঠিয়া গর্জন করিলেন, পান চিবুতে চিবুতে পাঞ্জাবি উড়িয়ে আপিস করতে এসেছ। ছোকরা? এটা তোমার শ্বশুরবাড়ি পেয়েছ বটে! গায়ে ফুঁ দিয়ে ইয়ার্কি মেরে বেড়াবার জন্যে আমি তোমাকে মাইনে দিই? যাও টুলে বসে কাজ করোগে। তোমার মতো পুঁচকে কেরানি খবর না দিয়ে আমার ঘরে ঢোকে কোন সাহসে? ফের যদি এরকম বেচাল দেখি, দূর করে দেব…

হোঁচট খাইতে খাইতে ঘর হইতে বাহির হইয়া আসিলাম। —এ কি হইল?

নিঃসাড়ে নিজের জায়গায় গিয়া বসিলাম। অভিভূতের মতো আধ ঘণ্টা কাটিয়া গেল।

আমি নূতন লোক, তাই বড়বাবুর পাশেই আমার আসন। চোখ তুলিয়া দেখিলাম তিনি গভীর মনঃসংযোগে খসখস্ করিয়া লিখিয়া চলিয়াছেন, আর সকলে নিজ নিজ কাজে মগ্ন, কেহ মাথা তুলিতেছে না। আমি কাঁদো কাঁদো হইয়া বলিয়া উঠিলাম, কি হয়েছে, কাকাবাবু?

তিনি লেখা হইতে চোখ না তুলিয়াই চাপা গলায় বলিলেন, কাজ করো– কাজ করো

.

সেদিন সন্ধ্যার পর গণপতিবাবুর বাসায় গেলাম। তক্তপোশের উপর বসিয়া তিনি তামাক খাইতেছিলেন, সদয়কণ্ঠে বলিলেন, এসো বাবাজী।

কিছুক্ষণ চুপ করিয়া বসিয়া রহিলাম। লজ্জায় ধিক্কারে মুখ দিয়া কথা বাহির হইল না। শেষে অতি কষ্টে বলিলাম, কি হয়েছে আমায় বলুন। আমার কি কোনও দোষ হয়েছে?

তিনি বলিলেন, না—তোমার আর দোষ কি? তবে বলেছিলুম, বড়র পিরিতি বালির বাঁধ…

এর মধ্যে কোনও কথা আছে। আপনি আমাকে সব খুলে বলুন, কাকাবাবু।

তিনি কিছুক্ষণ একমনে ধূমপান করিলেন।

খুলে বলবার মতো কথা নয়, বাবাজী।

না, আপনাকে বলতে হবে। কেন উনি আজ আমার সঙ্গে অমন ব্যবহার করলেন?

তিনি দীর্ঘকাল নীরব হইয়া বসিয়া রহিলেন; কেবল তাঁহার গালে মাঝে মাঝে খাঁজ পড়িতে লাগিল।

বলুন কাকাবাবু!

তুমি ছেলের মতো, তোমার কাছে বলতে সংকোচ হয়। আসল কথা—ঝি। বলিয়াই তিনি চুপ করিলেন; তাঁহার গালে একটা বড় রকমের খাঁজ পড়িল।

কিন্তু ঝি! কথাটা ঠিক শুনিয়াছি কি না বুঝিতে পারিলাম না। জিজ্ঞাসা করিলাম, কি বললেন—ঝি?

গণপতিবাবু ঊর্ধ্বদিকে তাকাইয়া বলিলেন, হ্যাঁ, কদিন থেকে বড় সাহেবের মন ভাল যাচ্ছে না…আয়া জানো—আয়া? যে-সব ঝি সাহেবদের ছেলে মানুষ করে? আমাদের বড় সাহেবের ছেলের আয়া হপ্তাখানেক হল চাকরি ছেড়ে দিয়ে চলে গেছে।

মাথা গুলাইয়া গেল; গণপতিবাবু এ সব আবোল-তাবোল কি বলিতেছেন? বুদ্ধিভ্রষ্টের মতো বলিলাম, কিন্তু কিন্তু কিছু বুঝতে পারছি না।

গণপতিবাবু তখন বুঝাইয়া দিলেন। স্পষ্ট কথায় অবশ্য কিছুই বলিলেন না, কিন্তু ভাবে-ভঙ্গিতে, অর্থপূর্ণ ভ্রূ-বিলাসে, সময়োচিত নীরবতায় এবং গালের বিচিত্র ভঙ্গিদ্বারা সমস্তই ব্যক্ত করিয়া দিলেন। সংক্ষেপে ব্যাপার এই—আমাদের বড় সাহেব বছর তিনেক আগে বিপত্নীক হন; তাঁহার পত্নী একটি পুত্র প্রসব করিয়া সুতিকাগৃহেই মারা যান। তারপর হইতে শিশুকে লালনপালন করিবার জন্য ঝি—-অর্থাৎ আয়া রাখা হয়। সেই ব্যবস্থাই এখন পর্যন্ত চলিয়া আসিতেছে। ঘনশ্যামবাবু অত্যন্ত যত্নসহকারে ঝি নির্বাচন করিয়া থাকেন। কিন্তু কোনও কারণে ঝি মনের মতো না হইলে, কিংবা ছাড়িয়া গেলে সাহেবের মেজাজ অত্যন্ত খারাপ হইয়া যায়, এমন কি তাঁহার স্বভাবই একেবারে বদলাইয়া যায়। গত কয়েক মাস একটি ক্রিশ্চান যুবতী কাজ করিতেছিল, কিন্তু সে হঠাৎ বিবাহ করিবার অজুহাতে কাজ ছাড়িয়া চলিয়া গিয়াছে; অথচ মনের মতো নুতন ঝি পাওয়া যাইতেছে না। তাই এই অনর্থ।

থ হইয়া বসিয়া রহিলাম! এও কি সম্ভব! এই কারণে মানুষের চরিত্রে এমন পরিবর্তন ঘটিতে পারে? কিন্তু গণপতিবাবু তো গুল মারিবার লোক নহেন। তবু এক সংশয় মনে জাগিতে লাগিল।

বলিলাম, কিন্তু উনি আবার বিয়ে করেন না কেন?

এ প্রশ্নের সদুত্তর গণপতিবাবু দিলেন—ঘনশ্যামবাবুর শ্বশুর অদ্যাপি জীবিত; তিনি পশ্চিমবঙ্গের একজন প্রকাণ্ড জমিদার। তাঁহার সন্তানসন্ততি কেহ জীবিত নাই, এই দৌহিত্রই—অর্থাৎ ঘনশ্যামবাবুর পুত্রই—তাঁহার উত্তরাধিকারী। কিন্তু শ্বশুরমহাশয় জানাইয়া দিয়াছেন যে, জামাতা বাবাজী যদি পুনরায় বিবাহ করেন তাহা হইলে তিনি তাঁহার সম্পত্তি দেবোত্তর করিয়া এক দুরসম্পর্কের ভাগিনেয়কে সেবায়েত নিযুক্ত করিবেন।

সমস্তই পরিষ্কার হইয়া গেল। তবু একটা গোলচোখো রুদ্ধশ্বাস বিস্ময় মনকে আবিষ্ট করিয়া রাখিল। এমন সব ব্যাপার যে দুনিয়ায় ঘটিয়া থাকে তাহার অভিজ্ঞতা তখন একেবারেই ছিল না।

তারপর পাঁচ ছয় দিন কাটিল। আপিসে যতক্ষণ থাকি, কাঁটা হইয়া থাকি; কি জানি কখন আবার মাথার উপর হুড়মুড় শব্দে আকাশ ভাঙিয়া পড়িবে! ইতিমধ্যে দু-তিন জন সহকর্মীর সামান্য ত্রুটির জন্য অশেষ লাঞ্ছনা হইয়া গিয়াছে। চাকরি যে কী বস্তু তাহা হাড়ে হাড়ে বুঝিতে আরম্ভ করিয়াছি।

সেদিন আপিসে গিয়া সবেমাত্র নিজের আসনে বসিয়াছি, আর্দালি আসিয়া খবর দিল বড় সাহেব তলব করিয়াছেন। প্লীহা চমকাইয়া উঠিল। এই রে, না জানি কোথায় কি ভুল করিয়া বসিয়াছি, আজ আর রক্ষা নাই।

ফাঁসির আসামীর মতো কর্তার ঘরে গিয়া ঢুকিলাম। তিনি নিজের চেয়ারে বসিয়া হেঁটমুখে দেরাজ হইতে কি একটা বাহির করিতেছিলেন, মুখ না তুলিয়াই প্রফুল্লকণ্ঠে বলিয়া উঠিলেন, এই যে শৈলেন, লক্ষ্ণৌ থেকে ভাল জর্দা আনিয়েছি—দেখ দেখি খেয়ে; মুক্তো-ভস্ম মেশানো জর্দা হে বড় গরম জিনিস!—হে হে হে…

দেড় ঘণ্টা ধরিয়া এইভাবে চলিল—যেন এ মানুষ সে মানুষ নয়। ইনি যে কাহারও সহিত রূঢ় ব্যবহার করিতে পারেন তাহা কল্পনা করাও কঠিন। কোথায় সে ক্ষুধিত ব্যাঘ্রের মতো হিংস্র দৃষ্টি, কোথায় সে কর্কশ দুঃসহ গলার আওয়াজ। তিনি আবার আমাকে তাঁহার সহৃদয়তার প্রবল প্লাবনে ভাসাইয়া লইয়া গেলেন। তিনি মন্দ লোক একথা আর কিছুতেই ভাবিতে পারিলাম না।

ফিরিয়া আসিয়া নিজের আসনে বসিতে বসিতে উত্তেজনা-সংহত কণ্ঠে বলিলাম, কাকাবাবু, ব্যাপার কি?

গণপতিবাবুর কলমে একগাছি চুল জড়াইয়া গিয়াছিল; সেটিকে নিব হইতে সন্তর্পণে মুক্ত করিয়া তিনি অবিচলিতভাবে আবার লিখিতে আরম্ভ করিলেন, আমার দিকে মুখ না ফিরাইয়াই ঘষা গলায় বলিলেন, ঝি পাওয়া গেছে।

বলিয়া গালের ভঙ্গি করিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress