Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » জঙ্গলমহলের ছেলে-মেয়ের সমানাধিকারের ব্রত- আভড়া পুণেই || Manisha Palmal

জঙ্গলমহলের ছেলে-মেয়ের সমানাধিকারের ব্রত- আভড়া পুণেই || Manisha Palmal

জঙ্গলমহলের ছেলে-মেয়ের সমানাধিকারের ব্রত- আভড়া পুণেই

কোজাগরী পূর্ণিমা লক্ষী ব্রতের সঙ্গে সঙ্গে সুবর্ণরেখার তীরবর্তী এলাকার জঙ্গলমহলের ঘরে ঘরে পালিত হয় এক সুন্দর ব্রত– একে বলে”আভড়া পুণেই( আইবুড়ো পূর্ণিমা)”
জঙ্গলমহলের নয়াগ্রাম গোপীবল্লভপুর সুবর্ণ রৈখিক এলাকায় অবিবাহিত সন্তানের মঙ্গল কামনায় পরিবারের মা ঠাকুমা দিদিমারা এই ব্রত পালন করেন। এই অনুষ্ঠানের প্রচলন বহু প্রাচীনকাল থেকেই। সীমান্ত বাংলার এই অঞ্চলে উৎকল সংস্কৃতির প্রভাব রয়েছে। উড়িষ্যায় এইসময় পালিত হয় “কুমার পূর্ণিমা”! অনেকটা সেই প্রভাবেই এই ব্রত পালিত হয়ে থাকে!
শিশু থেকে ষোড়শ বর্ষীয় কিশোর-কিশোরীদের ভবিষ্যৎ জীবন যাতে মঙ্গলময় হয় সেই কারণে পরিবারের বয়স্ক মহিলারা মঙ্গল কামনা করে এই ব্রত রাখেন।
এই দিন সকালে শিশু থেকে 16 বছর বয়সী কিশোর কিশোরীদের স্নান করে নতুন পোশাক পরানো হয়। তাদের কপালে চন্দনের ফোঁটা দিয়ে কোমরে রেশমের সুতো বাঁধা হয়। এই দিন কোন পোড়া খাবার খেতে নেই। এজন্য মুড়ি খাওয়া ও নিষিদ্ধ। মূলত পিঠে পায়েশ লুচি সুজি ক্ষীর এর মত নিরামিষ পদই খাওয়া হয়। কুমার কুমারীদের আশীর্বাদ করার সময় সুবর্ণরৈখিক ভাষায় পরিবারের মহিলারা একটি ছড়া কাটেন—“
“পো পৈসা,ঝি কৌড়ি
নাডিয়া নাডু কুঁদরি খাডু
পো মেনকার নিস বাডু
ঝি মেনকার আইস বাডু
( ছেলে টাকা হলে মেয়ে ও কডির সমান
ছেলের গোঁফ বাডুক মেয়েদের আয়ু বাড়ুক।)
বর্ষীয়ান লোকসংস্কৃতি গবেষক মধুপ দে বলেছেন–” এই ব্রতের মধ্যে প্রকৃতপক্ষে লিঙ্গবৈষম্যহীন ছেলে ও মেয়ের সমানাধিকারের কথাই বলা হয়েছ।”
গোপীবল্লভপুর এর সুবর্ণরেখা কলেজের ইতিহাসের বিভাগীয় প্রধান তথা গবেষক লক্ষিন্দর পালোই বলেছেন—” এই অঞ্চলে কোজাগরী পূর্ণিমা কে কুমার পূর্ণিমাও বলা হয়। এই দিন থেকে রাস পূর্ণিমা পর্যন্ত সধবা মহিলারা এক মাস ধরে কার্তিক ব্রত পালন করেন।”

আধুনিকতার আবিল ছোঁয়ায় এইসব দেশীয় লোকাচার ও সংস্কৃতি ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হতে চলেছে। কোজাগরী পূর্ণিমার লক্ষ্মীর আরাধনার সাথে সাথে কুমার পূর্ণিমার লিঙ্গবৈষম্যহীন সমানাধিকার ব্রতের মঙ্গল পরশে উজ্জ্বল হয়ে উঠুক সীমান্ত বাংলার জনপদ গুলি।


তথ্যসূত্র- বর্তমান পত্রিকা
লোকভাষ/ ক্ষেত্র সমীক্ষা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *