Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » কোরাপুটের জঙ্গলের পেত্নি || Shipra Mukherjee

কোরাপুটের জঙ্গলের পেত্নি || Shipra Mukherjee

কোরাপুটের জঙ্গলের পেত্নি -1

ছোট মাসীর বছর তিনেক হল বিয়ে হয়েছে কোরাপুটে । কোরাপুটের ডি.এস. পি পুলক সোম ছোট মাসীর শ্বশুর । আমরা তাঁকে মাসী দাদু বলেই ডাকি । গত বছর আমরা ওড়িশার কোরাপুটে গিয়েছিলাম। তখন মাসী মেশো থাকে চিরিমিরি তে। মাসী র শ্বশুর কে আমরা মাসী দাদু বলি । দাদুর কোরাপুটের বাড়িতে বিরাট বাগান । তাতে কি গাছ না নেই ! এবার ও মাসী দের কোরাপুটে আসার কথা ছিল । আমরা ও ছুটিতে ওখানে যাব । কিন্তু মাসী আসছে না বলে আমাদের ও যাওয়া হল না । মন খারাপ হয়ে গেল আমার আর বনির । বনি আমার ছোট বোন । সবে সাতে পড়েছে । অত শত বোঝে না । তা ছাড়া মা ওকে যেতেই দিত না । মন খারাপ লাগার আরও একটা কারণ অত সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে পাব না । চোখ বুজেই সে দৃশ্য দেখতে পাই । মাসী দাদুর বাড়ির পাশ দিয়েই পাহাড় টা উঠে গেছে । কি নরম সেই সবুজের ঢেউ । নিচ থেকে উপর অবধি তাল গাছ উঠে গেছে । পাহাড়ের ওপরে তাল গাছ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে । মাঝে মাঝেই সাদা মেঘ ঘরে ঢুকে যাচ্ছে । হাতে ধরা যায় সেই মেঘ । আমরা অমন দেখিনি তাই ভয় পেয়ে গেছিলাম ঘরের ভেতরের মেঘ দেখে । খুকু পিসি বলেছিল কোরাপুট ,”হাই অল্টিচুড” তাই অমন মেঘ ছুঁয়ে যায় ঘরে । শুনে আশ্চর্য হয়েছিলাম । বাব্বা! আমরা কত উঁচুতে উঠে গেছি! স্কুলের গরমের ছুটি পড়ে গেছে। আমরা মন মরা হয়ে বসে আছি । হঠাৎই খুকু পিসি মাসীর ননদ, এসে হাজির। খুকু পিসি অন্ধ্র ইউনিভার্সিটিতে পড়ে । হস্টেল এ থেকেই এম.এ পড়ছে । পিসি কে পেয়ে আমরা দারুণ খুশি । খুকু পিসি বলল- বাবলু ,রনি, বনি আমার সাথে কোরাপুটে চল । লাফিয়ে উঠলাম আমরা । রনি খুশি হয়ে ডিগবাজি খেতে লাগল । আমিও দুবার ডিগবাজি খেলাম ।

বাবা -মায়ের বাঁধা ও কোন কাজে লাগল না । কারণ খুকু পিসি সিদ্ধান্তে অটল । গেল বার যখন আমরা কোরাপুট গেছি তখন বনি বেশ ছোট । কত যে আম আর কাঁঠাল খেয়েছিলাম তার ঠিক নেই । মাসী দিদা আমাদের রান্না ঘরের দাওয়ায় বসিয়ে দিতেন । একটা জামবাটিতে করে ঘন গোরুর দুধ । আর মাসী দিদা একটা গামলায় জল নিয়ে তাতে কতোগুলো আম নিতেন । তার পর একটা একটা আম ছুলে আমাদের বাটিতে দিয়ে দিতেন । মায়ের মতো বটি দিয়ে ছুলতেন না ।একেবারে হাত দিয়েই আমের চোকলা টেনে ছিঁড়ে ফেলে দিতেন । মাসী দিদা বলতেন- ” আন্না করে খা” । আন্না কি গো মা ? – মা কে জিজ্ঞেস করলে মা বলেছেন। – কি আবার? মন ভরে খা । যতো ইচ্ছা খা ।
– মাসী দিদা তো বলেন- আন্না ।
মা বলেন- আমরা বলি না, আর দিও না । সেই আর না । হলো আন্না । সত্যিই সত্যিই সকাল সাতটায় আমরা কোরাপুটের ট্রেন । বের হবার সময় খুকু পিসি বলল, বৌদি , তোমরা ওদের জন্য চিন্তা করো না । মা আমাদের বললেন- দাদু -দিদা কে জ্বালাতন করো না । সত্যিই চিন্তার কিছুই নেই । মেশোর ছোট বোন খুকু পিসি। আমাদের খুব ভালবাসে ওরা । ভাগ্যিস এ সময় খুকু পিসি কোরাপুটে যাচ্ছে । তাই আমাদের যাওয়া হচ্ছে । ট্রেন ছেড়ে দিল । একে একে স্টেশন পার হচ্ছে । এবার জঙ্গলে মধ্য দিয়েই ট্রেন ছুটছে । আমরাও জঙ্গলের ভেতরে যাব । গেল বার আমরা ভালুক দেখেছিলাম । ছোট ছোট ভালুক টাল বেটাল হয়ে পড়ে যাচ্ছিল । ঠিক ছোট বাচ্চাদের মতোই । এবার একটা কে ঠিক ধরবো । খুকু পিসি কে আমরাও ভালোবাসি । মা অনেক বার খুকু পিসিকে আমাদের বাড়িতে থাকতে বলেছিলেন । কারণ খুকু পিসি অন্ধ্র ইউনিভার্সিটিতে পড়ে । কিন্তু খুকু পিসি হস্টেল এ থাকাটাই শুবিধে মনে করেছে । হোস্টেল এ থাকলে যাতায়াত এর ধকল হয় না ।পড়ার ও অনেক শুবিধে । জানালা দিয়ে দূরের পাহাড়ের দৃশ্য দেখছি । হঠাৎই মনে হল খুকু পিসি কিছু বলছে । পিসির দিকে ফিরে চাইলাম । পিসি বলল- বাবলু, কি ভাবছিস ? বললাম- তুমি না এলে আমাদের আসা হতো না । পিসি বলল- যাক, আসা হলো তো ? আনন্দ কর । একে একে স্টেশন চলে যাচ্ছে । প্রতিটা বোর্ড এর লেখা নাম বানান করে পড়ছে রনি । বানান তো করতেই হবে । শুধুই ইংরেজি আর হিন্দী তেই লেখা এখানে । বাংলার কোন নাম গন্ধ নেই এখানে । আঁকি বুকি কাটা লেখা তেলেগু তে । হঠাৎই রনি বলল- দাদা, কি বড় নাম টা দ্যাখ । শ্রুঙ্গ ভরপু কোটা লেখা । এ বাবা, এত বড় নাম সবাই বলে?

পিসি বলল- না রে , এটার একটা সর্ট কাট নাম আছে । সবাই বলে এস. কোটা । বনি ব্যস্ত হয়ে গেল। বিরক্ত করতে লাগল পিসিকে। – ও পিসি , আমরা কখন মাসী দিদার কাছে যাব? পিসি বলল- এই তো একটু পরেই পৌঁছাব । এখন ই গাড়ি ঢুকবে সুড়ঙ্গের ভেতর দিয়ে । তারপর ই দিদার বাড়ি । আমি বললাম- পিসি, স্টেশন এর নাম টা তাই কি শ্রুঙ্গ ভরপুকোটা ? পিসি- হ্যাঁ । এখানে অনেক দূর অবধি টানেল রয়েছে । তারপর ই মাসী দিদা র বাড়ি এসে যাবে । বনি বলল- পিসি, আমি সুরঙ্গ ভয় পাই । আমি বললাম- বনি, ভয় করবি না । তাহলে পিসি আমাদের আর কোন দিন নিয়ে আসবে না । চুপ করে গেল বনি । হয়তো পিসি আর আনবে না তা ভেবেই বনি চুপ করল । এক মহিলা আমাদের সিট এ বসে আছেন । কখন যে বসেছে তাও দেখিনি । ওর চোখের দিকে চোখ পড়তে আমার গা ছমছম করে উঠল ।

মহিলা খ্যান খ্যানে গলায় বলল- কিসের ভয় রে ছানা ? আমার রাগ হল ছানা কথা টা শুনে । তবুও বললাম। – ওর সব তাতেই ভয় ! বনি বলল- না গো , সব তাতেই ভয় পাই না । অন্ধকারে ভয় পাই আমি । অন্ধকারে ভূত থাকে তো তাই । – হিঁ হিঁ হিঁ করে হেসে উঠল সেই মহিলা । ভয়ে সিঁটকে উঠলাম । পিসি রনি বনি কে কাছে টেনে নিল । একের পর এক সুরঙ্গ পার হচ্ছি আমরা । হঠাৎই কামরা য় আলো নিভে গেল । চার দিকে অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে । যাত্রীদের হৈ হল্লা । তারই সঙ্গে গা ছমছম করা হাসি । কাঁপিয়ে দিচ্ছে ট্রেন । হৈহৈ করে যাত্রীরা এদিক ওদিক খুঁজছে কোথা থেকে ঐ হাসি আসছে তা দেখতে । পিসি বলল- এই তো একটু পরেই আমরা নামবো । দেখলি তো বনি ,সবাই কেমন আনন্দ করছে ? আরকু ভ্যালী আসছে । দেখবি কেমন হিমেল হাওয়া বয়ে যাবে চারদিকে। উঁচু পাহাড়ের ঢল নেমেছে। তাতে কচি ঘাসের জমিন । দারুণ লাগছে দেখতে । এঁকে বেঁকে পায়ে চলার পথ পাহাড়ের উপর উঠে গেছে। খুবই ভাল লাগছে । মনে হচ্ছ ওখানে চলে যাই । সাঁওতাল কয়েক জন মেয়ে কে দেখা গেল হেঁটে চলেছে । একেই বুঝি উপত্যকা বলে । ভ্যালী বুঝি একেই বলে । আমি বললাম- পিসি তুমি ঠিকই বলেছ । কি ঠান্ডা বইছে এখানে । কে বলবে এটা গরমের দিন ! আরকু তে বেশির ভাগ লোকই নেমে গেল । আমরা গা ঘেঁষাঘেঁষি করে বসে রইলাম । ঐ মহিলা আমাদের দিকে পিছন ফিরে বসে আছে । আমার ভাল লাগছে না ওকে । পিসির ও ভাল লাগছে না তা পিসির মুখ দেখেই বুঝলাম । ওকে দেখতে ইচ্ছে না করলেও বার বার চোখ চলে যাচ্ছে ওর দিকে । আমার মনে হল এতো রোগা কি মানুষ হতে পারে ? মনে হচ্ছিল একটা লাঠি কে শাড়ি জড়িয়ে রাখা হয়েছে। পিসি বলল- বাবলু এবার ওঠ । কোরাপুট এসে গেছে । আমরা নামবো । আমরা যেই উঠে দাঁড়ালাম। সেই হাড়গিলে মহিলাও উঠে দাঁড়াল । আমি পিসির কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম । রেল গাড়ির থেকে নামলাম আমরা । পিছু ফিরে দেখলাম সেই মহিলা ও আমাদের পিছু পিছু আসছে। এবার সে পিসি কে বলল- হ্যাঁ গো মেয়ে তোমাদের সঙ্গে আমাকে নেবে ? চমকে উঠলাম আমি । এ কি রে বাবা । এর থেকে ছাড়া পাব কি করে ? আমতা আমতা করে পিসিকে বললাম- পিসি তোমাকে কি বলছে? পিসি – কিছু বলছেন? মহিলা- হ্যাঁ। তোমাদের সঙ্গে যাব । ছেলেটা এল না । একা যেতে ভয় পাই । তোমাদের বাড়ি থেকে যদি কেউ পৌঁছে দেয় খুব ভাল হয় । মহিলার কথা শুনে পিসি বলল- ঠিক আছে চলুন । হেঁটেই চললাম আমরা । বাড়ি পৌঁছেই ভুলে গেলাম ঐ মহিলার কথা । মাসীদাদু আর মাসী দিদা জড়িয়ে ধরলেন আমাদের । আল্হাদে আটখানা হয়ে আমরা দেদার লাফালাফি করছি । এক ছুটে চলে গেলাম বাগানে । কত আম, কাঁঠাল হয়েছে তা দেখতে হবে না ? তখনই দেখলাম রান্না ঘরের জানালায় সেই মুখ । এবার যেন নোলা পড়া হাসি। সঙ্গে সেই হিঁ হিঁ হিঁ করা হাসির শব্দ । ভীষণ ভয় পেলাম । ছুটে গেলাম ঘরের দিকে। আমার ভয় পাওয়া মুখ দেখে মাসী দিদা বললেন- কি হয়েছে বাবলু ? ভয় পেয়েছিস মনে হচ্ছে? কোথায় ছিলি ? আমি বললাম- বাগানে গেছিলাম দিদা । মাসীদিদা বললেন- ভর দুপুরে বাগানে গিয়েছিলি? আর দুপুরে বাগানে যাবি না । তখনই ঘর কাঁপিয়ে কে যেন খ্যাঁক খ্যাঁক করে হেসে উঠল। চারদিক তাকালাম সবাই । দিদা বললেন- খুকু ওদের স্নান করিয়ে আন । বাইরে নিস না । ঘরের বাথরুম এ স্নান করা । আমি পিসিকে বললাম- পিসি,সেই মহিলা কোথায় ? কি জানি ,কোথায় গেল ? ট্রেন এ তাহলে ঐ মহিলাই হাসছিল । পাগল টাগল নাকি ? – পিসি বলল ।

আমি বললাম- আমার কিন্তু ভয় করছে । দিদা- বোকা ছেলে, অমন গলা অনেকের ই থাকে । ভয়ের কি আছে? চল দেখি কোথায় আছে ? আমরা সবাই রান্না ঘরের দাওয়ায় গেলাম । দেখলাম সিঁড়ি তে বসে চোখে মুখে আঁচল চাপা দিয়ে কাঁদছে সে । দিদা বললেন- কাঁদছেন কেন? – ছেলে স্টেশন এ এল না । তাই মন খারাপ লাগছে। কি করে বাড়ি যাব ?- বললেন সেই মহিলা । মহিলার কিন্তু মুখ দেখা যাচ্ছিল না । এক গলা ঘোমটা দেওয়া তার । মাসী দিদা বললেন- আগে খেয়ে নিন ,তারপর বাড়ি যাবেন । আপনার বাড়ি কোথায়? – চাদনী গাঁয়ে ।আরে ঐ যে কেউ কেউ চাঁদের গাঁ বলে । না না ,এখন খাব না । এখুনি যাব । মাসী দিদা মালী হরেন কে ডাকলেন ।- হরেন একে চাঁদের গাঁয়ে পৌঁছে দিয়ে আয় তো । কোথায় পৌঁছে দেব মা ?- হরেন বলল। মাসী দিদা – আরে ঐ চাঁদনী গাঁয়ে । মাসী দিদার কথা শুনে হরেন এর টাক খাওয়া অবস্থা। তাই সে বলল- সে তো অনেক দুর মা । আধ ঘণ্টার মতো লেগে যাবে সেখানে পৌঁছতে । মাসী দিদা বললেন- যা বাবা, বাবুর বাইক টা নিয়ে যা। মাসী দিদার কথা মতোই ওরা রওনা দিল । ওরা চলে যেতে দিদা বললেন- যত সব উটকো ঝামেলা ! এতক্ষণে আমরা প্রাণ ফিরে পেলাম । রনি,বনির লাফালাফি শুরু হল । দিদা ওদের জড়িয়ে আদর করলেন । অমনি খুকু পিসি বলল- বাবলু দেখলি মা কেমন করে দুষ্টমী করাটা বন্ধ করে দিল । আমি বললাম- হ্যাঁ। আদর করে । দিদা বললেন- বাবলু এদিকে আমার কাছে আয় । আমার লজ্জা করছিল । দিদা কি ভেবেছে, ভাই বোন দের আদর করেছে বলে আমার হিংসা হচ্ছে? দিদার কাছে বসলাম। দিদা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন । তারপর সব খবরাখবর নিলেন । আমার পড়ার খবর ও নিলেন । দুপুরে খাওয়ার পর ঘুমের চেষ্টা করতে হয় নি । আপনিই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম । রনি,বনি দিদার কাছে ঘুমাচ্ছে । ঘুম ভাঙতে বুঝলাম আমরা কোরাপুটে দাদু দিদার বাড়িতে এসেছি । এক লাফ দিয়ে বিছানা থেকে নামলাম । ছুটলাম বাইরে । তখন ও সূর্য ডোবে নি । হরেন কাকু বাগানে কাজ করছিল । আমায় দেখে বলল- কি গো বাবলু বাবু, তোমার ঘুম ভাঙলো ? আমার সাথে কথা বলতে বলতেই ফুল গাছের গোড়া খুঁড়ে দিচ্ছিল আর ঝুড়ো নুড়ি পাথর সরিয়ে দিচ্ছিল। তখনই আমার মনে হল ঐ মহিলার কথা । হরেন কাকু কে বললাম- হরেন কাকু, তুমি কখন ফিরলে ? অনেক দূর তাই না গো ? ঐ যে চাঁদের গাঁ ? – বাবা,এতো উত্তর কেমন করে দিই বলতো ? শোন, যতটা দূর জানতাম তা তো মনেই হল না । একেবারে গেনু আর এনু ।- হরেন কাকু বলল । – ওর ছেলেকে দেখলে ? – না গো, ভেতরে ঢুকি নি । বিরাট বাড়ি । জমিদার গো, পাইক, পেয়াদা। তবে বাগান দেখনু । দেখলে তোমার তাক লেগে যাবে । কমলা গাছে কমলা, আঙ্গুর গাছে আঙ্গুর। বেদনা, আপেল সব গাছের ফল ঝুলছে । আমি বললাম- দারুণ। জানো হরেন কাকু আমরা কখনও গাছে আঙ্গুর, আপেল, কমলা ঝুলতে দেখিনি। – দেখবে ওখানে । তোমারে বার বার যেতে কয়েছে। আমি হরেন কাকু কে বললাম- তুমি,,দিদা কে বলেছ? – হ্যাঁ। মা রাজি হন নি । বলেছে জঙ্গলে যেতে হবে নি । আমি বললাম- ওটাই কি কোরাপুটের জঙ্গল ? – হ্যাঁ। গো। ওদের জমিদার বাড়ির মুরগির লড়াই দেখার মতো । তারপর ট্রাইব্যাল দের দিমসা নাচ দেখতে পাবে । মাথায় আমার ঘুরছে কোরাপুটের জঙ্গলের কথা । মুরগির লড়াই ? কি করে যাওয়া যায় সেখানে ? ছুটলাম মাসী দাদুর কাছে। দাদু বললেন- কি খবর বাবলু বাবু? ঘুম হল তোমার? বল, কি বলবে?- দাদু আমরা কোরাপুটের জঙ্গলে যাব । দাদু বলেন- কি সাংঘাতিক কথা ! ঠিক আছে যাবে। লাফিয়ে উঠলাম আমি।- কি মজা! কোন জঙ্গলে দাদু ? দাদু বললেন- এই তো দেখতে পাচ্ছিস । সোজা ভালুক দের সঙ্গে চলে যাব জঙ্গলের ভেতর । আমি- না না । দাদু বললেন- ঠিক আছে । তবে তোদের দন্ড কারণ্যে নিয়ে যাব। আরে ওটাও বন । আমি বললাম- আমাকে ঠকাতে পারবে না । আমি জানি কোরাপুটের দন্ড কারণ্যে রিফিউজি দের ঘর বাড়ি দেওয়া হয়েছে । ওখানে এখন আর জঙ্গল নেই । দাদু- তাহলে কোথায় যাবি ?

Pages: 1 2 3
Pages ( 1 of 3 ): 1 23পরবর্তী »

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress