যাচ্ছি, ক্রমাগত যাচ্ছি; সেই কবে থেকে
আজ অব্দি, বলো,
কোথায় চলেছি? বলা যায়,
এই অধমের আওতায়
যা-কিছু দেখার আর শোনার, ছোঁয়ার
সবই তো হয়েছে এ জীবনে-
বিনীত স্বীকার করি গোধূলিবেলায়,
তবু কেন মনোলোকে তুষারের স্তূপ?
আমার যাপিত জীবনের সঙ্গে কোনও
বিবাদ, ঝগড়াঝাঁটি নেই,
নেই কোনও বায়বীয় খেদের বালাই। এই মাটি,
হাওয়ার চুমোয় শিহরিত গাছের সবুজ পাতা,
রাঙা ফুল পথরেখা, নদীর রূপালি
নাচ, মোলায়েম মেঘে পাখির সাঁতার,
শিশুর অনিন্দ্য হাসি, নারীর প্রণয়,
তারুণ্যের কণ্ঠে জীবনের, প্রগতির গান আজও ভালবাসি।
অথচ কখনও ভোরবেলা চোখ থেকে
ঘুমের কুয়াশা মুছে গেলে,
অথবা রাত্তিরে কোনও কবিতা লেখার দীপ্র ক্ষণে দয়িতার
মুখশ্রী খাতার বুকে জেগে
ওঠার মুহূর্তে অকস্মাৎ মৃত্যুচিন্তা অতিশয়
কালো লেবাসের অন্তরালে ফিস্ফিস্ স্বরে বলে,-
“আমি আছি, বুঝেছ হে, কোন দিন কখন যে
হঠাৎ ঝাঁপিয়ে পড়ে লুটে নেব প্রাণ, জানবে না”।
শোন, এই পৃথিবীর রৌদ্রছায়া, জ্যোৎস্নামায়া
উপভোগ করে বহু জ্ঞানী বলে গেছেন, আখেরে
মরণ তো অবসান, অস্তিত্বের পরিণতি ‘মুঠো
মুঠো ধুলো।‘ এই যে গভীর রাতে জেগে
সাজিয়ে চলেছি পঙ্ক্তিমালা কিংবা অতীতে লিখেছি
কতই না গ্রন্থ, সেগুলো পাহাড়ে,
নাকি হায়, সুবিপুল বিস্ফোরণজনিত কণায়?