(১)
ভোরের শিশিরে ভেজা সর্ষেফুলের সোনা
পায়ে জড়িয়ে ও চলে গেলো ।
দিনভর সোনা ভরা মাঠের
অফুরন্ত আনন্দে অবগাহন করে
কত স্বপ্ন বুনলো !
দিন শেষে ফসলের সাথে-
ফসল ফলানোর অধিকারের ঔদ্ধত্য সহ
চালান হয়ে গুদামজাত হলো
কোন সে অন্ধকার অজানা গুদামে ।
সাঁঝের তুলসীতলায় স্বপ্নের দোসর
বোবা হয়ে এখনও অপেক্ষায় ।
ভোরের শিশিরে ভেজা সেই সোনালী
পা দুটোর দেখা নেই –
তাই সে কাঁদে ।
(২)
ভোরের সাইরেনের ডাকে
প্রিয়ার উষ্ণ সান্নিধ্য ছেড়ে ও চলে গেলো –
চলিষ্ণু জীবনের স্রোতের টানে
বেঁচে থাকা বিপ্লবের শরিক হতে ।
রোজই যায় ; আবার ফিরে আসে ।
সেদিন সময় উতরে গেলো ,
ও আর এলো না ।
(৩)
ফুটপাতের অনন্ত শয্যায় শুয়ে আছে লোকটা
ষাট বছরের অভিজ্ঞতা নিয়ে ।
রোজ ভোরের আলো ফুটতেই
ঔরসজাত নিধিকে পাঠিয়ে দেয়
ব্যাগ ধরিয়ে ভিক্ষায় ।
একদিন সে গেলো ; আর এলো না ।
কোন সে দশরথের শব্দভেদী বাণে
অন্ধমুনির পুত্র সিন্ধুমুনির মতো
রক্ত ঝরিয়ে পড়ে থাকলো ।
ফুটপাতের অনন্ত শয্যায় থেকে অন্ধুমুনি
আর তার যষ্টির সন্ধান পেলো না ,-
তাই সে কাঁদে ।
(৪)
শয়তানের হাতছানিতে
অমৃতের সন্তান আদম-ইভেরা
লাফিয়ে লাফিয়ে অনায়াসে টপকালো
অধঃপতনের ধাপগুলো ,-
নেমে গেলো অতল গভীরে –
নিঃসীম অন্ধকারে ।
অবোধ ওরা সব –
অন্ধকারের বাসিন্দা হয়ে গুমরায়-
একটুকরো আলোর জন্য আকুলি-বিকুলি করে-
কেউ ওদের ডাকে না ঘৃণায় অবজ্ঞায়
দেখায় না সহানুভূতির আলো
তাই ওরা কাঁদে ।