বাঙালির খাই খাই সবেতেই বেশি,
সবই উদরেতে পোরে বিদেশী কী দেশী!
লুচি, অজ পেশী আর পায়েসের সাথে,
ছোলাডাল আলুদম পড়লেও পাতে –
দোসা আর ইডলিটা বাদ নাহি যায়,
তন্দুরী ভর্তাও খেয়ে সুখ পায়।
মোঘলাই খানাতেই, পরোটার পর,
বিরিয়ানি খাবে বলে জিজ্ঞাসে দর!
বিদেশীর রুচি মেনে চাইনিজ খানা-
চিলি চিকেন সাথে চাউয়ে কই মানা?
পাস্তা – প্যাটিস – পিৎজা সাথ চলে খুব,
মিষ্টির দোকানেও প্রায় দেয় ডুব।
দই – সন্দেশ আর গোল্লা রসের,
চমচম ক্ষীরে – জিভ থাকে কি বশের?
তারপরও কিছু খাওয়া সাহিত্যে চলে।
জল খায় , জল পানে, ডুবে ডুবে ছলে
দুধ -দই-কফি খায়,শরবতে জলে
স্ত্রীর বকা খায় কবি, তবু লিখে চলে ।।
জল বটে খায় তবু, পান করা নয়
তবে জর্দ্দা ও চুন সহ পান খাওয়া হয়।
এছাড়াও মৌতাতে সিগারেট ও বিড়ি
চুরুট – তামাক খায় ধোঁয়া ছেড়ে ধীরই।
প্রসংশা করলেই গ্যাস সে তো খায় ,
বেশি খেয়ে পেটে গ্যাসে হজমিও চায়।
বাঙালির গাড়ি সে তো পেট্রলও খায়
তাই বিদ্যুৎ খাওয়া গাড়ি মালিকরা চায় ।
বিশ্বকর্মা পূজা – ঘুড়ি গোঁৎ খায়-
টেনশনে হেঁপোরোগী , খাবি বটে খায়।
ছাঁটাই হওয়ার ছলে চাকরিটি খায়,
বড়বাবু পিওনকে দোষী ঠাওরায় –
পিওনের ক্রোধে বড়বাবু ঘুঁষি খায় ,
পুলিশ, সে ঘুষ খেয়ে সবই সামলায়।।
ব্যাবসাটি লাটে তুলে, বাবু মদ খায়-
মুখ খায় প্রেমে বিয়ে, বেজাতে সে হায়!
জোর করে বিয়ে? দুটি জীবন যে খায়,
ভুল উত্তরে ছেলে কানমলা খায়!
মোটা বলে ছোট ছেলে খুব প্যাঁক খায়,
আদরটি খেয়ে তাই বাঁদর হয়ে যায়!
শাক্ত ও বৈষ্ণবে ঝগড়া চালায়,
আমিষে ও নিরামিষে গুণ কী খাওয়ায়!
নিধুবনে রাধারা যে আজও দোল খায়
বাবু জুতো – গুঁতো খায়, তাদেরই হেলায়!
ডার্বি ম্যাচের শেষে চিংড়িটা বেড়ে
কিম্বা ইলিশ ঝোল খায় পাত পেড়ে
সংবাদ মাধ্যম ফুটেজ খাওয়ায়
আর খবর খাইয়ে টি. আ. পি বাড়ায়
শাসন আর সোহাগের মিশ খেয়ে ঠিক –
টাল খাওয়া সংসারও চলে যায় ঠিক
চাকরিও চুরি করে টাকা খায়ে ঠিক
পোড় খাওয়া বাঙালিরা তবু নির্ভিক।।