কোনো তাড়াহুড়ো নেই, আমি দীর্ঘকাল অপেক্ষায়
এমন থাকতে পারি অবিচল। ক্লান্তি করবে কি
আহার আমাকে কোনোদিন? কিংবা আমাকে ভীষণ
ম্রিয়মান, সদ্য মৃত ভেবে আকাশে রচিত হবে
পক্ষীচক্র? পোকা-মাকড়ের ঝাঁক অসেবে কি ধেয়ে
নিষ্পলক চোখ আর ওষ্ঠের উদ্দেশে? নাভিমূলে
ঘুরবে পিঁপড়ের দল? চাঞ্চল্য আমাকে আর বেশী
ঘোরায় না চোরা পথে, দীর্ঘ বন-বাদাড়ে অথবা
বলে না দেখতে মুখ সারাক্ষণ স্বচ্ছ নগ্ন জলাশয়ে।
ব্যস্ততার পরপারে আমি দীর্ঘ অপেক্ষায় থাকি।
কী এক পাখির গানে তরঙ্গিত হৃদয়ের ঝোপ,
চোখ বিস্ফারিত, সুরে সুরে অতীত ও বর্তমান
বড় বেশি মেশামেশি করে; কাল টুকরো টুকরো হয়ে
ঝরে চারপাশে আর কেমন মদির ঘ্রাণ হয়
দিকগুলি অকস্মাৎ কোত্থেকে একটি নীল ঘোড়া
মন্থর বাড়ায় গ্রীবা ডেরায় আমার প্রতি, যেন
ভালোবাস চায় শান্ত এখানে আশ্রয় কিছুকাল।
ভয় হয়-এ অতিথি হবে না তো উধাও এক্ষুণি?
গোলাপ গন্ধের মধ্যে স্মৃতি, স্মৃতির ভেতরে কিছু
মুখচ্ছবি, পদধ্বনি হাতের ঈষৎ নড়া, সাঁকো
এবং ঝর্নার পাশে নিদ্রাতুর নিরালা শরীর।
স্বপ্নেরা স্মৃতিরই অন্তর্গত, বুঝি তাই স্বপ্নস্থিত
আমার শরীর কোন বিশাল উদ্যান, শূন্য বাড়ি,
মৃত পাখি, স্বর্ণরেণু বিবর্ণ বেহালাসহ স্মৃতি।
শূন্যে হাত ছুঁড়বো না অথবা মাটিতে এলোবিলি
করবো না পদাঘাত। এমন থাকতে পারি আমি…
দীর্ঘকাল এই মতো অস্থিরতা-রহিত সর্বদা
অবচেতনায় ঘরে অপেক্ষায় বুদ্ধমূর্তি প্রায়।