উৎসব রাতে গিজগিজে ভিড়ে মনে হলো আমি
বড় অসহায়, একা।
মনের ভেতর হঠাৎ ভ্রমর সুর তুলে বলে-
কতকাল পরে দেখা।
শরীরে তোমার জড়িয়ে নিবিড় সুনীল আকাশ
অদূরে দাঁড়িয়ে ছিলে,
এবং বিউটি পার্লারে রচা খোঁপা বেলফুলে
ঈষৎ সাজিয়ে নিলে।
মোমের মতোই গলে যায় খুব দেহমন জানি
নীল আগুনের আঁচে,
সেই ভয়ে আমি আড়ালে ছিলাম রাত্রিছায়ায়,
যাইনি তোমার কাছে।
তোমাকে নিত্য মনে রাখি কিনা, প্রশ্নটা শুনে
ছিলাম নিরুত্তর;
কী করে জানাই, তুমি নেই তাই হৃদয় আমার
শোকাগ্নিময় থর।
ঘরে ফিরে গিয়ে যখন শরীর থেকে নীলাকাশ
চুপে নিয়েছিলে খুলে,
তখন হঠাৎ একাকী প্রহরে পড়েছিল টান
তোমার মর্মমূলে?
বারান্দাটায় একা বসে ভাবি, কেঁপেছিল কোন্
সে-ভাষা তোমার ঠোঁটে?
হৃদয়ে আমার দূর অতীতের গোলাপ-পাগল
বুলবুলি গেয়ে ওঠে।
দেখলাম তুমি ভাড়াটে এ ফ্ল্যাটে দাঁড়ালে আমার
সামনে ছড়িয়ে হাসি।
এ কেমন দাহ শিরায় শিরায়, আমি নই আজও
মঠবাসী সন্ন্যাসী।
তোমাকে অধীর ছুঁতে গিয়ে দেখি তোমার বদলে
শূন্যতা আছে ফুটে।
শ্বাসকষ্টের ধকল সইবো, কাটবে জীবন
অতীতের কণা খুঁটে।
নেপথ্যে কার রটনা তোমার প্রাক্তন রূপ
হয়েছে খানিক ফিকে,
সত্যি বলতে, আমিও চলেছি অতিশয় দ্রুত
অস্তাচলের দিকে।
উৎসব-রাতে মনে হয়েছিল তোমাকে দখল
করেছে বিষণ্নতা
এবং আমার মনে সেঁটে থাকে এঁটোময় পাতে
মাছির মতন কথা!
অনিশ্চয়ের প্যাঁচা প্রগল্ভ তৃতীয় প্রহরে,
কাঁপে সত্তার ভিত।
আমার ভেতর উঠল কি জেগে বীতংসঘেরা
মরালের সঙ্গীত?