উল্টো রথ
উল্টোরথের দিনেই গুন্ডিচা মন্দির থেকে মহাপ্রভু যাত্রা করবেন পুরীর মন্দিরের উদ্দেশ্যে। রথ যাত্রার মতো করেই উল্টো রথেও ভক্তদের সমাবেশ থাকে।
রথযাত্রা মানে পুরীর বিখ্যাত রথযাত্রা। জগন্নাথের প্রধান উত্সব। প্রতি বছর আষাঢ় মাসের শুক্লা দ্বিতীয়া তিথিতে রথযাত্রা অনুষ্ঠান শুরু করে শুক্লা একাদশীর দিন পূর্ণযাত্রা বা উল্টোরথ অনুষ্ঠিত হয়।পুরাণ মতে, প্রায় দু’হাজার বছর পূর্ব থেকেই রথযাত্রা ও উল্টোরথ প্রচলিত হয়। ‘উৎকলখণ্ড’ এবং ‘দেউল তোলা’ নামক ওড়িশার প্রাচীন পুঁথিতে জগন্নাথদেবের রথযাত্রা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, রথযাত্রার প্রচলন হয় সত্যযুগে। সে সময় ওড়িশার নাম ছিল মালবদেশ। সেই মালবদেশের অবন্তীনগরী রাজ্যে ইন্দ্রদ্যুম্ন নামে সূর্যবংশীয় এক পরম বিষ্ণুভক্ত রাজা ছিলেন, যিনি ভগবান বিষ্ণুর এই জগন্নাথরূপী মূর্তির রথযাত্রা শুরু করার স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন।
মাসির বাড়ি থেকে ফেরার পরও জগন্নাথ-সুভদ্রা-বলরাম মূল মন্দিরের বাইরে থাকেন। তিন দিন এরকম ভাবেই বাইরে থাকে রথ-সহ বিগ্রহ। কিন্ত এখন প্রশ্ন হল বাইরে কেন বিগ্রহ – কারণ এই তিন দিন পালিত হয় কিছু অনুষ্ঠান। যার মূল কেন্দ্রবিন্দু-তে থাকেন জগন্নাথদেব। বছরে এক বার মাসির বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন জগন্নাথ, কিন্ত ফিরে আসার পর রীতিমত ধূমধাম করে সমারোহের সঙ্গে জগন্নাথ-সুভদ্রা-বলরাম কে মন্দিরে রত্নবেদি-তে তোলা হয়। তিনদিন ধরে পালিত হয় বিশেষ অনুষ্ঠান-
সোনাবেশ- একাদশী তিথিতে জগন্নাথ সহ সুভদ্রা-বলরাম ও সেজে ওঠেন নানা সোনার গয়নার সাজে। পুনর্যাত্রার পর একাদশী তিথি তে পালিত হয় এই সোনাবেশ।
অধরপনা- এই উৎসব পালিত হয় দ্বাদশীর সন্ধ্যায়। এই রীতি অনুযায়ী জগন্নাথদেব-কে শরবত খাওয়ানোর পালা চলে।
রসগোল্লা উৎসব- ত্রয়োদশীর দিন জগন্নাথদেবের উদ্দেশ্যে নিবেদন করা হয় কয়েকশ হাঁড়ি রসগোল্লা, ভোগ হিসেবে।
সর্বশেষে নীলাদ্রিবিজয় উৎসবের মাধ্যমে শেষ হয় এই সমস্ত রীতি -রেওয়াজ। এভাবেই বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানের পর জগন্নাথ-সুভদ্রা-বলরাম কে মন্দিরে মূল রত্নবেদি-তে তোলা হয়।