অন্ধভক্তি
চন্ডী মাতার বহু পুরানো মন্দির,মন্দিরের সংলগ্ন প্রতিষ্ঠিত পুকুর, এ অঞ্চলের বহু পুরানো এই মন্দির বাসিন্দাদের দৃঢ় বিশ্বাস জাগ্রত চন্ডীমাতা। গ্রামের যে কোন শুভ অনুষ্ঠান ও যে কোন পুজোয় এই মন্দিরে আগে পুজো পড়ে,পঞ্চম দোলে অন্নকোট অনুষ্ঠানে বহু দর্শনার্থী এসে ভীড় করে ।
তবে বেশ কয়েকবার চুরি হয়েছে এই মন্দিরে এবং যথারীতি চোর ধরা পড়ে নি,অনেকে বলে দেবী মা অধম সন্তানদের ক্ষমা করে দিয়েছেন।
কয়েক বছর আগের দশমীর বিসর্জনের ঘটনা । এই অঞ্চলের সব প্রতিমা বিসর্জন হয় চন্ডী মাতার প্রতিষ্ঠা করা পুকুরে।এই অঞ্চলের পাড়াগুলোতে বিসর্জন নিয়ে ঝগড়া বিবাদ অনেক সময়ই ঘটে।
সে বছর বার্ষিক ফুটবল খেলায় চ্যাটার্জী পাড়া ও মালি পাড়ার ফাইনাল খেলা মারামারির দরুন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন উদ্যোগক্তরা,যৌথভাবে দুপাড়াকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয় ।
দূর্গা প্রতিমা বিসর্জনের সময় বিধাতার পরিহাসে দুপাড়া আবার মুখোমুখি!! মদের নেশায় মত্ত মালি পাড়ার একজন চেঁচিয়ে বলে আমরা আগে এসেছি আগে আমাদের প্রতিমা বিসর্জন হবে । চ্যাটার্জী পাড়াই বা কম যায় কিসে, একজন বলে ফুটবলে আমরাই জিততাম ইতরগুলো,দূরে থাক। খিস্তি খেউড় থেকে ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায় । মালি পাড়ার একটি ছেলের ধাক্কায় চ্যাটার্জী পাড়ার সভাপতি মাথায় আঘাত লাগে । ব্যাস যা কোনোদিন ঘটেনি মন্দিরে তাই ঘটে,একদল ছেলে ঐ ছেলেটিকে ধাওয়া করে, প্রাণ বাঁচাতে চন্ডী মায়ের মুর্তির পিছনে লুকায়,কিন্তু দূর্ভাগ্য একটি ছেলের দেখতে পেয়ে হিঁচড়ে বার করে আনে,সবাই চেঁচিয়ে ওঠে জয় মা,পাপী টাকে আজ শেষ করেই ছাড়ব!!!!
দেবী মায়ের সামনেই মাতাল ভক্তেরদল শেষ করে আর এক মাতালকে!!!! কেউ আটকাতে পারে না,তারপর দুপক্ষের ছেলেরাই গাঢাকা দেয়, খবর পেয়ে পুলিশ আসে, ততক্ষণে যা ঘটবার ঘটে গেছে । অশান্তি এড়াতে কারফিউ করে দেওয়া হয় । অন্ধভক্তদের এই কুকর্মে দেবী মাও যে বড় অসহায়!