অদ্ভুত প্রেম
“বলরে ভাই কিছু বলবি নাকি, অসময়ে ফোন করেছিস যে! আজকে দোকান খুলিস নি তুই”? অফিসের টেবিলে গুরুত্বপূর্ণ ফাইল থেকে চোখ তুলে দিদি মনিদীপা সায়নের ফোন ধরল । হ্যালো
হ্যালো হ্যা ভাই শুনতে পারছি বল।
দিদি, আমি সব শুনছি, রাস্তায় আছি তাই কম শোনা যাচ্ছে।কিছু ন য় ভাবলাম কি করছিস একবার দেখি।বলছি টিয়া কোথায় দিদি?
“তোর ভাগ্নীতো কলেজে রে, কি যেন প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস বললো”। ও ভালো থাকিস বলে ফোন রাখলেও দিদি মনিদীপা র কৌতূহল গেলো না।ভাই তো হঠাৎ এভাবে ফোন করে না।টিয়ার কি কিছু হলো নাকি আবার!টিফিন হতেই অনেক চেষ্টা করেও টিয়া কে ফোনে পেলো না মা।
“মা আজ আমি আজ বন্ধুর বাড়ি যাচ্ছি বুঝলে”।বন্ধু বলতে তো সেই তোর বান্ধবী ময়না তাই তো?”সত্যি বাবা , মেয়ে বড়ো হলে যে প্রেম করবে সেও নয় , তোর দ্বারা কোনো কিছুই হবে না বল” বলে হেসে ফেলল মনি।
উফ মা তুমিও না বলে রেগে গেলো টিয়া।এই হয়েছে আজকাল ওনার বান্ধবী নিয়ে কিছু বললেই খ্যাঁক করে উঠবে কন্যা!মনি তাও হেসে বিষয়টা হালকা করতে বলেই যাচ্ছে, তাও যদি মেয়েটা ঠিক ঠাক হতো, কেমন একটা ছেলে ছেলে গড় ন যেনো! ব্যস আগুনে যেন ঘি পড়েছে।মা প্রকৃতি যাকে যেমন বানিয়েছে, এত ইনসাল্ট কেনো করো তুমি বলে রাগে ফাটিয়েছে টিয়া।
আজকাল মণি লক্ষ্য করেছে, কেমন যেন চুপ চাপ , নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছে তার চঞ্চল মতি কন্যা।বাবার সাথে কথা নেই, দেখলেই যেন রেগে ওঠে!এমনকি মায়ের সাথে শুধুই মনোমালিন্য।একদিন ডাক্তার বাবুকে বলতেই উনি বললেন নিয়ে যেতে ওনার কাছে আর রাগারাগি কম করতে কারণ এই বয়সে হরমোন প্রভাব থাকে সবথেকে বেশি কিনা।একদিন কাজের মেয়ে কে চিৎকার করে বলতে শুনেছে কোনোদিন তার ঘরে না জিজ্ঞেস করে ঢুকবি না।তারপর সেই ঝি মনিদের বাড়ি ছেড়ে দিলো কে জানে কোন অজ্ঞাত কারণে।মনি দেখেছে টিয়ার ঘর জুড়ে যেখানে হিরোদের ছবি থাকবে , তা নয় কেবল বুক খোলা অর্ধ নগ্ন নায়িকাদের ছবি।মনি যখনই মেয়েকে নিয়ে কোনো রোমান্টিক ফিল্ম দেখতে বসেছে কিছুতেই থাকবে না টিয়া।প্রশ্ন করলে উল্টে বলে যত রাবিশ প্রেম!
এর মধ্যে সায়ন কে ফোন করে মনিদীপা জেনেছে, কলেজের পেছনে যে শুনশান রাস্তাটা আছে প্রায়দিনই তার ভাই দুর থেকে তার ভাগ্নী কে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখেছে।একদিন কাছ থেকে দেখতে গিয়ে সে তো আঁতকে উঠে , পাশের জন ছেলে নয় ছেলের মতো ড্রেসে সিগারেট হাতে ধরে আর এক মেয়ে।সেটা দেখেই সেদিন দিদিকে সায়ন ফোন করে।সব শুনে মনি আরও অসহায় বোধ করছে আজকাল।স্বামীকে বলে যে হালকা হবে সেও দুর শহরে থাকে, কম আসে।একদিন খাওয়ার টেবিলে মামার কথা বলতেই হঠাৎ রেগে যায় টিয়া।”তুমি কি মামাকে আমার পেছনে স্পাই হিসাবে রেখেছো নাকি বলোতো মা”!”…স্পাই!!কি বলছিস রে, তুই মামার কত প্রিয়”, বলে চুপ হয় মনি।
ভাইরে কিছু তো একটা কর, আমার টিয়া কি এবনরমাল ই থেকে যাবে?আক্ষেপে সায়ন বললো দিদি দুদিনের জন্য চলে আয় তোরা।কিন্তু টিয়া তো পড়ার ক্ষতি হবে বলে যাবে না জিদ ধরলো আর এটাই হবে সায়ন জানতো।দুদিন পর আসবো সাবধানে থাকিস বলেও মনি সায়নের চাপে পরের দিন অফিস থেকে হাফ ডে করে নিজের ফ্ল্যাটে ফিরলো।যথারীতি লক দেখে নিজের ডুপ্লিকেট চাবি নিয়ে ফ্ল্যাটে ঢুকে তো মনি একদম হতভম্ব। এ সে কি দৃশ্য দেখছে!! বেড রুমে তার টিয়া তার প্রিয় বান্ধবীর বাহুডোরে নগ্ন হয়ে হালকা চাদর গায়ে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন।হে ভগবান বলে ফোন করবে কিনা ভেবেও চুপ করে ব্যাক করার সিদ্ধান্ত নিলো মনি।টেবিল জুড়ে কি সব সেক্স টয় আর উত্তেজনার ওষুধ।মাথাটা টলমল করছিল মনিদী পার, কি করবে কি সমাধান ভেবে না পেয়ে ধীর পায়ে বেরিয়ে এলো।