অক্ষয় ও অনন্ত পুণ্য লাভের সন্ধানে
এমনিতেই বৈশাখ মাস দানধ্যানের মাস । আর চান্দ্র বৈশাখের শুক্লা তৃতীয়া তিথির গুরুত্ব আমাদের হিন্দু ধর্মে অপরিসীম। ‘ অক্ষয়’ , মানে যার কোনও ক্ষয় বা বিনাশ নেই ! তাই এই পবিত্র অক্ষয় তৃতীয়া তিথিতে অসংখ্য মানুষ পুণ্য লাভের আশায় গঙ্গা স্নান করে ব্রাহ্মণদের ছাতা, অর্থ ইত্যাদি দান করেন। দেশের কিছু স্থানে আবার এই তিথিকে পরশুরাম জয়ন্তী বলা হয়। এই পবিত্র দিনে বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার পরশুরাম জন্মগ্রহণ করেছিলেন। হিন্দু শাস্ত্রে এই দিনটির গুরুত্ব আরও রয়েছে। এই অক্ষয় তৃতীয়া তিথিতে কুবেরের তপস্যায় প্রীত হয়ে দেবাদিদেব মহাদেব তাঁকে অসীম ধন ও ঐশ্বর্য প্রদান করেন। সেই কারণেই আজও এই দিনে বৈভবলক্ষীর পুজো করা হয়। এই অক্ষয় তৃতীয়া তিথির পবিত্র দিনেই কঠোর তপস্যার মাধ্যমে গঙ্গাকে পৃথিবীতে নিয়ে এসেছিলেন রাজা ভগীরথ। তাই তো ত্রিতাপজ্বালাদগ্ধ মানুষ আজও পুণ্য লাভের আশায় গঙ্গা স্নান করেন এই দিনে। আজও কিন্তু যাবতীয় আচার অনুষ্ঠান মেনে অক্ষয় তৃতীয়া তিথিতে শ্রীক্ষেত্রে মহাপ্রভু জগন্নাথ দেবের রথযাত্রার রথ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এই দিনেই ত্রেতাযুগ শেষ এবং দ্বাপর যুগ শুরু হয়েছিল। প্রসঙ্গত, অক্ষয় তৃতীয়া পবিত্র দিনেই হিমালয়ের কোলে চারধামের দরজা খুলে দেওয়া হয়। অক্ষয় তৃতীয়ার দিনেই হস্তিনাপুরের রাজসভায় দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের চেষ্টা করেছিলেন দুঃশাসন। দ্রৌপদীর কাতর প্রার্থনায় সাড়া দিয়ে শ্রীকৃষ্ণ তাঁকে অনন্তবস্ত্র প্রদান করেন। আবার এই অক্ষয় তৃতীয়া তিথির পবিত্র দিনেই শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে দেখা হয় তাঁর বাল্যসখা সুদামার। এক মুঠো চালের বিনিময়ে সুদামার যাবতীয় দুঃখ কষ্ট মোচন করেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ।।
দারুন লেখা। নিজেকে সমৃদ্ধ করতে পারলাম।