Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » হত্যা রহস্য || Panchkari Dey » Page 10

হত্যা রহস্য || Panchkari Dey

অক্ষয়কুমার নগেন্দ্রনাথকে সঙ্গে লইয়া বড়বাজারে হুজুরীমলের বাড়ীতে উপস্থিত হইলেন। তাঁহারা প্রথমে একজন ভৃত্যের সহিত দেখা করিলেন। অক্ষয়কুমার তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “তোমার মনিবের সঙ্গে এখানে শনিবারে কেহ দেখা করিতে আসিয়াছিল?”

“একজন মাত্র আসিয়াছিল।”

“কে সে?”

“সেই পঞ্জাবী, যিনি মাস কত হল এসেছেন।”

“কত রাত্রে এসেছিলেন?”

“বাবু সাহেব এগারটার গাড়ীতে আগ্রা যাবেন, স্থির থাকে, তাই তিনি সেদিন চন্দননগরে না গিয়ে এখানেই আহারাদি করেন।”

“কখন এই পঞ্জাবী লোক দেখা করিতে আসিয়াছিলেন?”

“তখন রাত সাড়ে নয়টা কি দশটা।”

“তিনি কি বলেছিলেন, কিছু শুনেছিলে?”

“না, আমি সেখানে ছিলাম না।”

“আর কেহ এসেছিল?”

“হাঁ, পঞ্জাবীটা চলে গেলে একজন স্ত্রীলোক এসেছিল।”

“সে কে?”

“মাঝে মাঝে এখানে আসে।”

“কখন আসে?”

“অনেক রাত্রে।”

“তুমি তাকে চেন?”

“না, ঘোমটা দিয়ে আসে, কখনও মুখ দেখি নাই।”

“তাকে দেখিলে চিনিতে পার?”

“ঠিক বলতে পারি না তবে তাহার হাতে তিনখানা নীল পাথর বসান একটা চমৎকার আংটা আছে।”

ভৃত্যের নিকটে বিশেষ কিছু আর জানিবার নাই দেখিয়া অক্ষয়কুমার হুজুরীমলের বাড়ী ভালরূপে দেখিয়া, ফিরিয়া তাঁহার গদিতে আসিলেন। তিনি একটি দ্রব্য তথায় পাইলেন, তাহা সত্বর পকেটে লইলেন। তিনি আবার ললিতাপ্রসাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করিলেন।

তাঁহাকে গোপনে এক গৃহে আনিয়া বলিলেন, “ললিতাপ্রসাদবাবু, কিছু মনে করিবেন না—একটা কথা জিজ্ঞাসা করিব। কর্তব্যের দায়ে আমাদের অনেক সময়ে অনেক কথা জিজ্ঞাসা করিতে হয়।”

ললিতাপ্রসাদ কেবলমাত্র মৃদুস্বরে বলিলেন, “বলুন।”

অক্ষয়কুমার জিজ্ঞাসা করিলেন, “আপনাদের গদির অবস্থা কেমন?”

ললিতাপ্রসাদ কিঞ্চিৎ ক্রোধ প্রকাশ করিয়া বলিলেন, “কেন মহাশয়, এ কথা জিজ্ঞাসা করিতেছেন,

এই বড়বাজারে আমাদের মত কটা সাওকোড় গদি আছে?”

“তা হতে পারে। তবে হুজুরীমল বোম্বে পলাইতেছিলেন কেন?”

“সে কি মহাশয়!”

“হাঁ—এই রকম বোধ হইতেছে, দেখুন দেখি, এ দুখানা।”

এই বলিয়া অক্ষয়কুমার নিজের পকেট হইতে দুইখানা রেলওয়ে টিকিট বাহির করিয়া ললিতাপ্রসাদের হাতে দিয়া বলিলেন, “দেখিতেছেন, এ দুখানা আগ্রার টিকিট নহে—বোম্বের টিকিট।”

ললিতাপ্রসাদ বলিলেন, “আপনি এ টিকিট কোথায় পাইলেন?”

অক্ষয়কুমার বলিলেন, “হুজুরীমলবাবুর পকেটের মধ্যেই পাইয়াছি। তিনি সেইদিন সকালবেলা টিকিট দুইখানি কিনিয়াছিলেন। যাইবার সময়ে আর টিকিট কিনিবার হাঙ্গামা রাখেন নাই। ইহাতেই বোঝা যায়, তিনি গোপনে যাইবার মতলব করিয়াছিলেন। তাহার উপর দুইখানা টিকিট সুতরাং একাকী যাইতেছিলেন না—আর একজনের সঙ্গে যাইবার কথা ছিল। সেটি একটি স্ত্রীলোক সম্ভবতঃ, সেই অনেক রাত্রে তাঁহার সঙ্গে দেখা করিত। খুন না হইলে দুইজনে ছদ্মবেশে বোম্বে পলাইতেন। বুঝিলেন, কেন জিজ্ঞাসা করিতেছিলাম, আপনাদের গদির অবস্থা কেমন?”

এই সকল কথায় ললিতাপ্রসাদ বিস্মিত হইয়া স্তম্ভিতভাবে দণ্ডায়মান ছিলেন। কেবলমাত্র বলিলেন, “কেন?”

অক্ষয়কুমার বলিলেন, “কারণ মাঠেই পড়িয়া আছে—যদি আপনাদের গদির বা হুজুরীমলবাবুর অবস্থার ভিতরে ভিতরে গোল না ঘটিত, তাহা হইলে তিনি এইরূপভাবে সরিয়া যাইবার চেষ্টা

পাইতেন না। টাকার সহায়তা থাকিলে অনেক কাজ কলিকাতায় বসিয়া করা যাইতে পারে।”

এই সময়ে ব্যস্ত-সমস্ত হইয়া এক ব্যক্তি সেই গৃহে প্রবিষ্ট হইয়া বলিলেন, “কই—ললিতাপ্রসাদবাবু কই?”

সকলে চমকিত হইয়া ফিরিয়া তাহার দিকে চাহিলেন। দেখিলেন তিনি একজন পঞ্জাবী ভদ্রলোক। তিনি অতি ক্রুদ্ধভাবে বলিলেন, “আমি হুজুরীমলবাবুর নিকটে যে দশ হাজার টাকা রাখিয়াছিলাম, তাহা আপনাদের গদির সিন্দুক হইতে চুরি গিয়াছে?”

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress