Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » রামায়ণ : সুন্দরাকাণ্ড || কৃত্তিবাস ওঝা » Page 31

রামায়ণ : সুন্দরাকাণ্ড || কৃত্তিবাস ওঝা

বিভীষণ ক্ষণকাল করি বিবেচন।
পুনর্ব্বার রাবণে কহেন এ বচন।।
মহারাজ করিলে যে কর্ম্ম আচরণ।
ইহাতে দুঃখিত কিছু নহে মোর মন।।
ঐশ্বর্য্য মদেতে যারা মত্ত অতিশয়।
তাহাদের এইরূপ দুঃস্বভাব হয়।।
ইহাতেও নাহি মোর বড় দুঃখ আর।
চলিলাম আমি তোমা করি পরিহার।।
একমাত্র খেদ এই রহি গেল মনে।
মজিল রাক্ষস-কুল তোমার দূষণে।।
এত বাণী শুনি অতি ক্রুদ্ধ লঙ্কাপতি।
কহিতেছে পুনর্ব্বার বিভীষণ প্রতি।।
জানি জানি বিভীষণ জ্ঞাতির হৃদয়।
জ্ঞাতির বিপদ দেখি আনন্দিত হয়।।
জ্ঞাতি মধ্যে কেহ যদি হয় ধনী সুখী।
তাহা দেখি অন্য জ্ঞাতি হয় মনোদুঃখী।।
বরঞ্চ আপন মৃত্যু পারে সহিবারে।
জ্ঞাতির ঐশ্বর্য্য কিন্তু দেখিতে না পারে।।
তাহে পুনঃ কাপট্য করিয়া প্রকাশন।
নিরন্তর তার ছিদ্র করে অন্বেষণ।।
পাবামাত্র কোন ছিদ্র করে অন্বেষণ।।
নিরন্তর তার ছিদ্র করে অন্বেষণ।
পাবামাত্র কোন ছিদ্র বিবিধ প্রকারে।।
আয়োজন করে সমূলেতে নাশিবারে।।
সম্ভাব্য লুকাতে ধন তপস্য ব্রাহ্মণে।
চাপল্য নারীতে তেন ভয় জ্ঞাতিজনে।।
হইয়াছি আমি যে ঈশ্বর লোকপতি।
ভাল না লাগিল তোরে ওরে দুষ্টমতি।।
যাহ যাহ লঙ্কা ছাড়ি তুমি এইক্ষণে।
তুমি গেলে আমরা থাকিব সুখী মনে।।
ইহাতে প্রমাণ হয় নীতি শাস্ত্রজ্ঞান।
তার অর্থ কহি তাহা করহ শ্রবণ।।
বরঞ্চ ভূজঙ্গ কিম্বা শত্রু সঙ্গে রবে।
শত্রু-সেবী-জন সহবাসী নাহি হবে।।
তুমি একে জ্ঞাতি তাহে শত্রু-ভক্তিমান।
তুমিহ থাকিতে মোর না হবে কল্যাণ।।
অতএব যাহ তুমি ছাড়ি মোর দেশ।
বিলম্ব করিলে পাবে অতিশয় ক্লেশ।।
এই কথা শুনি বিভীষণ মহামতি।
কহিতে লাগিল পুনর্ব্বার এ ভারতী।।
প্রিয়বাদী জন রাজা সর্ব্বত্র সুলভ।
অপ্রিয় পথ্যের বক্তা শ্রোতাও দুর্ল্লভ।।
নিশ্চয় ধরেছে তব চিকুরে শমন।
তেঁই মোর হিতবাক্য না কৈলে গ্রহণ।।
যার মৃত্যু উপস্থিত সেই লঙ্কাপতি।
না শুনে না দেখে বন্ধুবাক্য অরুন্ধতী।।
এ লাগি তোমায় আমি করিনু বর্জ্জন।
জ্বলিত গৃহকে যেন ত্যজে বিজ্ঞজন।।
করিলে তুমিহ মোর যত পরিভব।
জ্যেষ্ঠ বলি সহিলাম আমি তাহা সব।।
অন্য কোন জন যদি করিত এ কাজ।
দেখাতাম তারে ফল-নিশাচর-রাজ।।
শুন শুন মোর কথা ওহে বন্ধুগণ।
চল মোর সঙ্গে যদি হয় কারো মন।।
যদ্যপি বাসনা হয় জীবন রাখিতে।
চল তবে শ্রীরামের চরণ সেবিতে।।
এত কহি রাবণেরে করিয়া বন্দন।
উঠিয়া আকাশপথে চলে বিভীষণ।।
তাহা দেখি তাহার অমাত্য চারিজন।
তারাও করিল তাঁর পশ্চাতে গমন।।
অনিল অনল ভীম সম্পাতি অপর।
এই চারি জন মালি-সন্তান সোদর।।
তাহাদের সহিত আইলা বিভীষণ।
মাতার নিকটে সব কৈলা নিবেদন।।
তাঁর অনুমতি লয়ে প্রণমিলা তাঁরে।
তারপর গেল নিজ বাটীর মাঝারে।।
নিজ ভার্য্যা সরমাকে নিকটে ডাকিয়া।
কহিতে লাগিল তারে প্রণয় করিয়া।।
প্রিয়ে আমি রামচন্দ্রে শরণ লইতে।
চলিলাম এই চারি অমাত্য সহিতে।।
তুমি জানকীর কাছ থাকি নিরন্তর।
সেবা করিবেক তাঁরে হইয়া তৎপর।।
তিনি যদি অনুগ্রহ করেন তোমারে।
তবে রাম অঙ্গীকার করিবে আমারে।।
সুশীলা সরমা জানকীতে ভক্তিমতি।
যে আজ্ঞা বলিয়া তাহে দিলা অনুমতি।।
তবে বিভীষণ নিজ অস্ত্র শস্ত্র নিয়া।
যাত্রা কৈলা চারি মন্ত্রী সঙ্গেতে করিয়া।।
বিভীষণে পদাঘাত অপূর্ব্ব কথন।
সুন্দরাকাণ্ডেতে গান গীত রামায়ণ।।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39
Tags:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress