রামায়ণ : সুন্দরাকাণ্ড – ত্রিজটার দুঃস্বপ্ন দর্শন ও চেড়ীগণ সমীপে তৎবৃত্তান্ত বর্ণন
ত্রিজটা রাক্ষসী রাত্রি জাগিতে না পারে।
দুঃস্বপ্ন দেখিয়া বুড়ী উঠিল সত্বরে।।
শয্যায় বসিয়া বুড়ী দুঃখ পায় মনে।
সীতারে বেড়িয়া মারে যত চেড়ীগণে।।
ত্রিজটা বলেন, সীতা রামের কামিনী।
সীতারে যে মারে সেই মরিবে আপনি।।
হইল সীতার বুঝি দুঃখ অবসান।
স্বপ্ন শুনিবারে সবে এস মোর স্থান।।
সীতা এড়ি সবে গেল ত্রিজটার পাশ।
ত্রিজটা কহিছে, স্বপ্ন শুনিয়া তরাস।।
নিভৃতে ত্রিজটা ডাকি বলে চেড়ীগণে।
স্বপ্ন দেখি আজি মোর উড়িল জীবনে।।
দুষ্ট স্বপ্ন দেখি আজি নিশির ভিতরে।
লঙ্কায় আসিল আজি মর্কট-সমরে।।
প্রথমে আসিল কপি বিঘত প্রমাণ।
প্রণাম করিল আসি সীতা বিদ্যমান।।
সীতা সম্ভাষিয়া কপি ভীম-মূর্ত্তি ধরে।
আম্রবন ভাঙ্গি মারে অক্ষয়-কুমারে।।
সাগর লঙ্ঘিয়া বীর এল শীঘ্র করি।
পোড়াইয়া ভস্মরাশি কৈল লঙ্কাপুরী।।
রক্তবস্ত্র পরিধান কালী হেন বুড়ী।
রাবণেরে পাড়ে তার গলে দিয়া দড়ি।।
দেয় কুম্ভকর্ণের মুখেতে কালি চূণ।
লঙ্কাদাহ করে আর রাক্ষসেরা খুন।।
শ্রীরাম লক্ষ্মণ দেখি ধনুর্ব্বাণ হাতে।
সীতা উদ্ধারিয়া যান চড়ি পুষ্পরথে।।
যে স্বপ্ন দেখিনু তাহে নাহিক নিস্তার।
পড়িবেক অবশ্য লঙ্কায় মহামার।।