লাল রাস্তায় খড় বোঝাই গাড়িটি ক্যাঁকো কুড়ুপিং শব্দ তুলে
যাচ্ছে পৃথিবীর মন্থরতম গতিতে
পেছন দিক থেকে মনে হবে, গাড়োয়ান ও গোরুদুটি অদৃশ্য
সোনালি খড়েরা পিঠোপিঠি শুয়ে রোদ্দুরকে দিচ্ছে রং
বাতাসে দু’-একটি পলাতক
আমি সাইকেল চেপে আসছি, পাশ কাটানো যাচ্ছে না।
মাঠ-উজাড় ধানলতা আপন মনে চলেছে দুলকি চালে
সাইকেলের রিরংসা রিরংসা ধ্বনি চালকটি শুনতে পায় না
ধ্যানী বুদ্ধের মতন তার আধবোজা চোখের নিরাসক্তি
গোরু দুটিরও যাত্রা শুরু আড়াই-তিন হাজার বছর আগে
এমনও হতে পারে স্বয়ং ঈশ্বরই এই গাড়িটির চালক
তাঁর কোনও তাড়াহুড়ো নেই
লাল রাস্তা চলেছে অসীমের দিকে সোনালি খড় পিঠে নিয়ে
ক্যাঁকো কুড়ুপিং ক্যাঁকো কুড়ুপিং সংগীত শুনছে এই ব্রহ্মাণ্ড
এর মাঝখানে আমি এক সাইকেল আরোহী, আমার ছটফটানি
আমি অনন্তের কেউ না, ক্ষুধা-তৃষ্ণায় বদ্ধ জীব
মানুষের ফসল নিয়ে মানুষ কাড়াকাড়ি করে, সামনে চলেছে খড়ের গাড়ি
বাঁধের এক পাশে ক্ষুদে নদী, অন্যদিক বড় বেশি ঢালু
ঈশ্বরবাবু যখন পথ ছাড়বেন না, তখন অগত্যা কী আর করা যায়
আমি সাইকেল থামিয়ে হিসি করতে করতে গান গাই..