রামায়ণ : লঙ্কাকাণ্ড – নীলপদ্ম আনয়নের মন্ত্রণা
পরম আনন্দে রাম পূজেন শঙ্করী।
সাত্ত্বিক ভাবেতে ভাব বিধান আচরি।।
তন্ত্র-মন্ত্রমতে পূজা করে রঘুনাথ।
একাসনে সভক্তিতে লক্ষ্মণের সাথ।।
অর্চ্চনা করিলা যদি দেব ভগবান।
থাকিতে নারিলা দেবী ঘটে অধিষ্ঠান।।
কপটে করুণাময়ী রহিলা গোপন।
শ্রদ্ধায় রামের পূজা করিলা গ্রহণ।।
বিধিমতে পূজা সাঙ্গ করিলা শ্রীহরি।
কিন্তু হৈল সন্দেহ না দেখি মহেশ্বরী।।
বিভীষণে কন রাম কি হইবে আর।
আমা প্রতি দয়া বুঝি না হৈল দুর্গার।।
বঞ্চনা করিলা দেবী, বুঝি অভিপ্রায়।
সীতার উদ্ধারে আর নাহিক উপায়।।
নয়নে বহিছে ধারা সশোক অন্তর।
কান্দেন করুণাময় প্রভু পরাৎপর।।
কাতর হইয়া তবে কন বিভীষণ।
এক কর্ম্ম কর প্রভু নিস্তার কারণ।।
তুষিতে চণ্ডীর মন করহ বিধান।
অষ্টোত্তরশত নীলোৎপল কর দান।।
দেবের দুর্ল্লভ পুষ্প যথা তথা নাই।
তুষ্টা হবে ভগবতী শুনহ গোঁসাই।।
শুনিয়া তাঁহার বাক্য রামচন্দ্র কন।
কোথা পাব নীলপদ্ম মিত্র বিভীষণ।।
দেবের দুর্ল্লভ যাহা কোথা পাবে নর।
সকলি আমার ভাগ্যে বিধান দুষ্কর।।
কাতর দেখিয়া রামে হনুমান কয়।
স্থির হও চিন্তা দূর কর মহাশয়।।
দাস আছে কেন চিন্তা কর প্রভু মনে।
থাকে যদি নীলপদ্ম আনিব এক্ষণে।।
স্বর্গ মর্ত্ত্য পাতাল ভ্রমিয়া ভূমণ্ডল।
একদণ্ডে আনি দিব শত নীলোৎপল।।
বিভীষণ কন বীর হনুমান কাছে।
অবনীতে দেবীদহে নীলপদ্ম আছে।।
এক বৎসরের পথ হইবে নিশ্চয়।
হনু কহে আনি দিব নাহিক সংশয়।।
রামচন্দ্রে প্রণমিয়া বীর হনুমান।
দেবীদহ উদ্দেশেতে করিল পয়াণ।।