রামায়ণ : লঙ্কাকাণ্ড – ইন্দ্রজিতের মৃত্যুতে শ্রীরাচন্দ্রের আনন্দ
জিনিয়া প্রচণ্ড রিপু, লক্ষ্মণ সরক্ত বপু,
উপনীত রামের গোচর।
বাম করে শরাসন, ভয়ঙ্কর সে গঠন,
দক্ষিণ করেতে এক শর।।
রিপুজয় করি রঙ্গে, সংগ্রামের বেশে সঙ্গে,
আইল সকল মহাবীর।
আনন্দে প্রফুল্ল কায়, রক্তধারা বহে গায়,
রণশ্রমে হইয়া অস্থির।।
শুনিয়া সংগ্রাম জয়, শ্রীরাম আনন্দময়,
ভাবেন মরিল ইন্দ্রজিতা।
সাগর তরিনু হেলে, কি আর গোখুর-জলে,
রাবণ বধিলে পাব সীতা।।
যত সেনাপতি সঙ্গে, সুগ্রীব নাচেন রঙ্গে,
সঙ্গেতে সকল অধিকারী।
নল নীল বালি-সুত, সকলে আনন্দযুত,
কপিগণ নাচে সারি সারি।।
বৈরীকুল করি নাশ, আইলাম তব পাশ,
কহে বিভীষণ গুণগ্রাম।
লক্ষ্মণ নোঙায়ে মাথা, কহেন সকল কথা,
শুনিয়া কৌতুকী অতি রাম।।
শুনি লক্ষ্মণের বোল, শ্রীরাম দিলেন কোল,
ললাট চুম্বিয়া মুখ চাই।
লইয়া মস্তকঘ্রাণ, চুম্বিলা ধনুক বাণ,
তোমা বই নাহি আর ভাই।।
লক্ষ্মণ করেন স্তুতি, তুমি ত্রিদশের পতি,
ক্ষিতিতলে বিষ্ণু-অবতার।
তব যারে আশীর্ব্বাদ, জিনে কোটি মেঘনাদ,
তারে জিনে হেন সাধ্য কার।।
পশুপতি বৃহস্পতি, শচীপতি করে স্তুতি,
তাহার নাহিক যম-ত্রাস।
লক্ষ্মণ করিল স্তুতি, আনন্দিত রঘুপতি,
লঙ্কাকাণ্ড গায় কৃত্তিবাস।।