Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » মনুষ্যক্লেশ নিবারণী সমিতি || Sanjib Chattopadhyay » Page 8

মনুষ্যক্লেশ নিবারণী সমিতি || Sanjib Chattopadhyay

মনুষ্যক্লেশ নিবারণের নাম করে মেয়েদের খুব কেচ্ছা করা হচ্ছে, লজ্জা করে না আপনাদের? নারী হল শক্তির অংশ, নারী হল জগদ্ধাত্রী। আমরা আছি বলেই তো আপনারা আছেন। কোথায় সেই পামর যে ভোলটেজ স্টেবিলাইজার হয়ে সারারাত পাখার সুইচ-এর তলায় বসে থাকে বলে খুব নাকে কেঁদেছে? কোথায় সেই ভদ্রলোক?

আজ্ঞে আপনাকে দেখে চেয়ারের তলায় লুকিয়েছে।

তাই নাকি! এই যে বেরিয়ে এসো। উঠে এসো। তোমার ছেলেকে যা শোভা পায় তোমায় তা শোভা পায় না। লড়তে হয় সামনা-সামনি লড়ে যাও! আমি কি করি, আর তুমি কি করো এঁদের সামনেই তার বিচার হয়ে যাক। উঠে এসো।

তুঁমি আঁবার তেঁড়েমেড়ে এঁই জঁনসঁমক্ষে এঁলে কেঁন?

ইয়ে হ্যায় ইজ্জত কি সওয়াল। নাকে কেঁদে পার পাবে না। চেপে ধরলেই চিঁচি ছেড়ে দিলেই লম্ফঝম্ফ, তোমাকে আমি হাড়ে-হাড়ে চিনি।

আমি না-হয় আমার দুঃখের কথা একটু সাতকান করেই ফেলেছি তা বলে এই কি একটা ঝগড়া করার জায়গা? নারী হবে ন, নতমুখী, সহিষ্ণু, মৃদুভাষী। নরম-নরম গরম-গরম। রোদে দেওয়া শীতের বিছানায় মতো।

ন্যাকামো রেখে এদিকে উঠে এসে আমার পাশে দাঁড়াও।

উঃ তোমার এই ল্যাঙ্গোয়েজ, সো ভালগার। ভাবতে পারো, দুর্গা কি মা জগদ্ধাত্রী আরতির সময়, চারদিকে ধূপধুনোর ধোঁয়া, কাঁসর-ঘণ্টার শব্দ, ভক্ত নরনারী গদগদ, হঠাৎ বলে উঠলেন, ন্যাকামি রাখো।

তা কেন?

বাঃ এই বললে তুমি হলে জগদ্ধাত্রী, সিংহবাহিনী। তা ভাষা, চাল-চলনটাও তো সেই রকম হওয়া উচিত।

বাজে না বকে পাশে এসে দাঁড়াও।

আহা যান না মশাই, মিসেস যা বলছেন শুনুন না! তখন তো খুব গিন্নির নামে বলছিলেন, এবার ম্যাও সামলান। আমরা বাবা বলিও না ঝামেলাতেও পড়ি না। আমরা জানি সরকারের বিরুদ্ধে আর স্ত্রীদের বিরুদ্ধে কিছু বলা মানেই সিডিসান। পাচে পড়ে যাব। পুলিসের গায়ে কিল না মেরেই মরতে হয়, মারলে তো কথাই নেই।

আচ্ছা, আপনারা এইবার দেখুন, দুজনের হাইটটা দেখুন। আমার স্বামী আমার চেয়ে প্রায় একহাত লম্বা।

পশ্চিম বাংলায় সাধারণত তাই হয়। বউ মোটা তোক ক্ষতি নেই তবে মাথায়-মাথায় না হলেই ভালো। মাথা ছাড়িয়ে গেলে নাকচ। বউ লম্বা হলে কত্তার অকল্যাণ হয়। লোকে বলে হিড়িম্বা। বউ নয় তো যেন গিলে খেতে আসছে। এই তো বেশ মানিয়েছে। পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছেন মনে হচ্ছে যেন–মেড ফর ইচ আদার। দেখুন-দেখুন কি সুন্দর মানিয়েছে, যেন হরগৌরী, যেন দুষ্মন্ত শকুন্তলা, যেন রাম আউর রমা। আমার ঠাম্মা দেখলে নমস্কার করে বলতেন আহা নয়ন সার্থক হেন লক্ষ্মী-জনার্দন।

স্টপ।

বউ বেঁটে, স্বামী লম্বা। যে বাড়িতে বসবাস সেই বাড়িতে সমস্ত দরজা-জানালা সাত থেকে দশ ফুট উঁচুতে। ডিঙ্গি মেরে-মেরে নাগাল পাওয়া যায় না। জানালার গবরেটে উঠে উল্লুকের মতো ঝুলতে ঝুলতে প্রথম-প্রথম ছিটকিটি লাগাতুম। তখন সবে বিয়ে হয়েছে, এমন ঢিপসি হয়ে যাইনি। উনি বললেন, তুমি যখন জানলায় উঠে ওভাবে লচকে লচকে ছিটকিনি লাগাও তখন আমার ভেতর থেকে বোম্বে ছবির একটা হিরো বেরিয়ে আসে। একদিন হঠাৎ, না আমি বলতে পারব না, লজ্জা করছে।

আপনি হেলপ করুন। উনি মুখ ঘুরিয়ে থাকুন। আপনি বলে ফেলুন। মনে করুন এটা আদালত কিংবা চার্চের কনফেশান বক্স। ক্রাইম কবুল করুন।

ক্রাইম আবার কি? স্ত্রীকে ধরে পেটালেও ক্রাইম হয় না, আদর করলেও রেপ হয় না। মনুসংহিতা বলছে।

দ্বিধাকৃত্বাত্মনো দেহমর্ধেন পুরুষোহভবৎ।
অর্ধেন নারী তস্যাং স বিরাজমসৃজৎ প্রভুঃ।।

সৃষ্টির পূর্বে ঈশ্বর আপনাকে দুই ভাগে বিভক্ত করিয়া এক অংশে পুরুষ, অপরাংশে নারীমূর্তি পরিগ্রহ করিলেন ও সঙ্গত হইলেন। তার মানেটা কি! আমার অর্ধেকটা আমি আর অর্ধেকটা উনি। হাফ প্লাস হাফ ইজ ইকুয়ালটু সেই।

সেইটা কি?

আমি। সেই মহা আমি, যার এত হাঁকডাক হম্বিতম্বি, রাজা প্রজা, বড়বাবু ছোটবাবু, সধবা বিধবা, হিরো ভিলেন, সাধু শয়তান প্রজা ক্যাপিটাল আমি। বউকে পেটানো মানে নিজেকে পেটানো, খামচানো মানে নিজেকে খামচানো, আদর করা মানে নিজেকে আদর করা। ওর ভেতর কে বসে আছে ঘাপটি মেরে? আমি। হাম হায়। বৃহদারণ্যক পড়ুন ও ন বা অরে জায়ায়ৈ জায়া প্রিয়া ভবত্যত্মনস্তু কামায় জায়া প্রিয়া ভবতি। জায়ার ভেতর আত্মস্বরূপিণী দেব বর্তমান। তাই তো জায়া এত প্রিয়। তার মানে কি? কে একটা আমার ভেতরেও রয়েছে ওর ভেতরেও রয়েছে। যেই বলব, কে গো, সে বলবে আমি গো, আবার যেই ও বলবে, কে গো, আমি বলব, আমি গো।

অ্যায়, আমি বলছেন কেন? বলুন সে বলবে। আমি গো।

ওই হল। সেই তো আমি, আমিই তো সে।

বাঃ তুমিটা তাহলে উবে গেল?

না উবে যাবে কেন? কত রকমের বাদ আছে জানেন, দ্বৈতবাদ, অদ্বৈতবাদ, দ্বৈতাদ্বৈতবাদ। কখনও আমিই সব। আমার জমিজমা, বিষয়সম্পত্তি, নাম ধাম কাম। সব আমার। লীলার সময় আমি তুমি। মিলনে তুমহি হি হি। হি মানে সে বা তিনি। তখন তন্ত্র।

তোমার ওসব মামদোবাজি রাখো। রেখে কবুল করো তুমি কি ধরনের মাল। নিজে করো তো ভালো, যদি না করো সমগ্র নারীজাতির স্বার্থে আমাকেই করতে হবে।

আজ্ঞে হ্যাঁ, চাপে পড়েই বলতে হচ্ছে স্ত্রীরা জন্মায় না তৈরি হয়। এক-এক স্ত্রীর এক এক স্বভাব। সেই স্বভাবের জন্যে দায়ী তাদের স্বামীরা।

এই তো পথে এসো। মনে পড়ে বৎস, বিয়ের আগে পাঁচটি বছর কি তেলান তেলিয়েছিলে আমাকে! পাঁচটায় এসো। মেট্রোর সামনে দাঁড়িয়ে আছ বাঁকা শ্যাম হয়ে। তিনটের সময় দাঁড়িয়ে থেকো বকুলতলায়। দুপুর রোদে কাগজ মাথায় দিয়ে মরা বকুলতলায় দাঁড়িয়ে আছেন আমার প্রেমিক চিদু। পার্কে বসে চানাচুর খাও, ঝালমুড়ি খাও, চকোলেট খাও, ফুচকা খাও, ভেলপুরি খাও। চলো যাই সিনেমায়, থিয়েটারে জলসায়। কত মিঠিমিঠি হাসি, মিঠিমিঠি বাতেঁ। ভ্যাজোর-ভ্যাজোর এক কথা, তুমি আমার প্রাণ, তুমি আমার সিন্ধু, জাহ্নবী, যমুনা, তুমি আমার লাইট-হাউস, তুমি আমার টর্চের ব্যাটারি, হৃদয়ের ধুকপুকি। তুমি আমার গোলাপখাস, গোলাপি রেউড়ি। দুব্বো ঘাস দিয়ে গায়ে সুড়সুড়ি। মাথায় শাড়ির আঁচল টেনে দিয়ে, বাঃ বেশ বউটি। চলো তোমাকে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আসি। তোমার শেষ ট্রাম চলে যাবে। যাকগে, তবু তোমাকে ছেড়ে আসি। প্রয়োজন হয় পয়দলে ফিরব। তোমার জন্যে আমি লাইফ স্যাক্রিফাইস করতে পারি। সেই তুমি আর এই তুমি!

আহা প্রেমে আর রণে একটু ছলাকলা শাস্ত্রসম্মত ব্যাপার। মনে নেই ইংরেজরা মীরজাফরকে মসনদে বসাবার লোভ দেখিয়ে সিরাজের পেছনে বাঁশ দিয়ে কেমন পানাপুকুরে ফেলে দিয়েছিল। সেম কেস। প্রথমে চার করে টোপ ফেলো, মাছ ঘাই মেরে যেই টোপটি গিলল মারো টান।

ও এই তোমার মনের ভাব? ভালোবেসে ল্যাং মারা! তাহলে জেনে রাখো তুমি যদি ঘোড়া হও আমি সেই খোঁড়া।

শুনলেন, শুনলেন আমি নাকি ঘোড়া!

মনে নেই বিয়ের পর বছর খানেক কি করেছিলে? ঘুরতে ফিরতে, শুতে বসতে মাধু মাধু। একবার চিদু বলে ডাক ভাই।

আহা সেইটাই তো আমার প্রেমের প্রথম উল্লাস। প্রথম উল্লাসেই আমার কোমর ভেঙে গেল। বাপস তোমার কি ওজন! উইনডো সিলে উঠে, ছাপা শাড়ি পরে সার্কাস-মোহিনীদের মতো ছিটকিনি লাগাচ্ছিলে। হঠাৎ বেরিয়ে এল সে। সেই বোম্বাই হিরো। তোমাকে মনে হল হেলেন। কোমরটা ধরে শূন্যে তুলে বার্ট ল্যাংকাস্টারের মতো যেই না একপাক ঘুরেছি মট করে একটা শব্দ হল, কোমরটা খুলে গেল। তিনমাস বিছানায়। তখনই বুঝলুম স্ত্রী অতিশয় গুরুভার পদার্থ। তারপর আমি আর অমন প্রেমাস্ফালন দেখিয়েছি! দেখাইনি। তাহলে তুমি কেন খোঁড়া হয়ে গেলে ডার্লিং!

কেন হলুম? বলব সেকথা! তোমার প্রথম উল্লাসের দিনে তোমার স্ত্রীর কি মাথার ওপর হাত তোলার উপায় ছিল? আমার হাত তোলা মানেই তোমার চিত্ত বিক্ষেপ এবং স্থান-কাল-পাত্র ভুলে লণ্ডভণ্ড কাণ্ড। ছিটকিনি হাত না তুলে লাগানো যায়?

সে একটু হতেই পারে। তুমি নারী আমি নর। আমি নারী তুমি নর হলে তুমিও অমন হেদিয়ে পড়তে। তা বলে তুমি আমার সাড়ে তিনশো টাকা দামের ব্রিফকেসের ওপর মড়মড়িয়ে উঠে জানালার ছিটকিনি বন্ধ করবে?

মনে পড়ে, একদিন ইডেনে ঘাস ভিজে ছিল? আমার শাড়িতে দাগ লেগে যাবে বলায় তুমি ব্রিফকেস পেতে দিয়ে মহাদরে বসিয়েছিলে। তখন তো তোমার বুক মোচড় দিয়ে ওঠেনি। বলেছিলে, আমার ব্রিফকেস ধন্য হল। সেই ঈশ্বরী পাটনির নৌকা। মা অন্নপূর্ণার পায়ের স্পর্শে সেঁউতি সোনার হয়ে গেল।

তখন তো তুমি প্রেমিকা ছিলে। প্রেমিকা একটা অন্য রকম ব্যাপার। কল্পনা-কল্পনা রোমানস টোমানস মিলিয়ে ভূতের মতো। আকৃতি আছে শরীর নেই। প্রেমিকা হল পালকের মতো, তুলোর মতো হালকা। স্ত্রী হল পাথর লোড। প্রেমিকার প্রেম ছাড়া কোনও কর্তব্য নেই। স্ত্রীর কত কর্তব্য। স্ত্রী হওয়া মানেই বশ্যতা স্বীকার করা, সাবমিশান। বরফ দেখেছ? বরফ তুষার। চারদিকে পড়ে আছে পেঁজা তুলোর মতো। আবার কুলফি মালাইও দেখেছ। প্রাক-বিবাহিত জীবন সেই তুষারের মতো। কিন্তু যেই তুমি বিয়ে করলে অমনি হয়ে গেলে খাপে ভরা কুলপি মালাই। এক সংসার থেকে এসে আর-এক সংসারের খোলে ঢালাই হওয়া। একটা জিনিস বোঝ না কেন, মেয়েরাই বিয়ের পর সব ছেড়েছুঁড়ে শ্বশুরবাড়ি যায়, ছেলেরা যায় না। নিয়মটা আগে ওলটাও তারপর গালগলা ফুলিয়ে চিৎকার করবে। তুমি হলে লেপ, আমার ইচ্ছে হলে শাটিনের ওয়াড় পরাব, ইচ্ছে হলে মার্কিনের। লেপের কিছু স্বাধীনতা আছে কি?

তার মানে পুরুষ-জাতি স্বার্থপর। সুবিধেবাদি। প্রবঞ্চক। কাজের সময় কাজি, কাজ ফুরোলেই পাজি।

তা বলতে পারো।

সময় তো অনেক এগোল, চারদিকে শিক্ষার প্রসার, বিজ্ঞান মানুষকে সঁদে পাঠাচ্ছে, তোমাদের স্বভাব একটু সংশোধন করে দেখো না! সেই ঘিনঘিনে স্বামী, বউকাঁটকি শাশুড়ি! আর কতকাল চলবে এইভাবে!

তোমাকে সকালে আমি চা তৈরি করে খাওয়াই। একমাত্র লালবাহাদুর শাস্ত্রী ছাড়া আর কোন স্বামী বউকে বেড-টি সাপ্লাই করে এসেছেন শুনি?

কোন বউ তোমার মতো অকর্মণ্যর ফেলে যাওয়া চশমা অফিসে পৌঁছে দিয়ে আসে শুনি?

কোন স্বামী তোমার মতো আয়েশি বেড়ালকে বিছানার শুইয়ে মাঝরাতে জল সাপ্লাই করে শুনি?

কোন বউ অন্য মেয়ের সঙ্গে রপটারপটি করার জন্যে স্বামীর চুলে কলপ লাগিয়ে কলেজি কার্তিক বানিয়ে দেয় শুনি?

কোন স্বামী বউয়ের পাকা চুল তুলে দেয় শুনি?

কোন বউ বকের ভূমিকায় স্বামী-বাঘের গলা থেকে হাঁ করিয়ে মাছের কাটা বের করে দেয় শুনি?

ক্ষান্ত হন, ক্ষান্ত হন। আপনারা দুজন, সত্যিই মেড ফর ইচ আদার। আপনার লিকার, স্ত্রীর ফ্লেভার যেন আসাম-দার্জিলিং ব্লেন্ড।

স্তোত্রপাঠে তরজার সমাপ্তিঃ
যত্র নার্য পূজান্তে নন্দন্তে তত্র দেবতাঃ।
যত্রৈতাস্তু ন পূজ্যন্তে সর্বাস্তাফলাঃ ক্রিয়া।।

যে গৃহে নারীর পূজা সেই গৃহে দেবতার আগমন, যে গৃহে নারীর অসম্মান সেই গৃহে সমস্ত কর্মফল কুফল।

তুমি তাহলে ডাব বলো।

ডাব।

আমি বলি ভাব। ডাব ভাব। চলো হাত ধরাধরি করে বাড়ি যাই।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress