আজো রাত গভীর হলে তোমাকে ভীষণ মনে পড়ে,
মনে পড়ে কোনো এক নিশুতি রাতের শেষে
আকাশ বাতাস মঞ্জরিত হয়েছিল
মহালয়ার স্তোত্র -গানে,
তুমি শুনতে পাওনি ,তুমি কিছুই শুনতে পাওনি,তোমার দৃষ্টি তখন স্থির ;
কালো মেঘে আকাশ ভারী
এক পশলা বৃষ্টি ঝরেছিল কান্না হয়ে।
প্রসন্ন প্রভাতে তারপর পাখিরা
করেছিল কোলাহল – তুমি ফিরেও তাকাওনি,
অজস্র কান্নার ভিড়ে এক কবির শেষ যাত্রায়
আকাশে উড়েছিল কিছু পাখি-
উঠোনের একধারে ঝরেছিল কিছু শুভ্র শেফালি,
তারপর শীতল ছায়ায় পল্লবিত শান্তির নীড়ে
নীরবে বিলীন হয়েছিল সব।
নশ্বর এই জীবন যেখানে মূল্যহীন,
মৃত্যু যেখানে তুচ্ছ
কর্মযোগের ব্যপ্ত চরাচরে বিচরিত
কায়িক জীবনের পাওয়া না পাওয়ার হিসেব নিকেশ
আর গভীর মূল্যবোধের অসীম শূন্যতায় ভাসমান
তোমার যাবতীয় সুখ-দু:খ ,আনন্দ উচ্ছাস
নির্লীপ্ত পৃথিবীর আকাশ পথে আজ বিলীন,
তবু খুঁজি বিভোর হয়ে
তোমার উদাত্ত কন্ঠস্বর
তোমার না বলা কথার পান্ডুলিপির এক একটি বর্ণমালা কী ভীষণ ভাবে একা
আমার স্পর্শকাতর হাত ভীষণ ভাবে
খোঁজে তোমায় একাকী বাকলার কূল ঘেঁষে
বুকের ভেতর আকাঙ্খার মেঘ
অবিরাম বর্ষিত হয় বজ্র অনলে।
অথচ আমি দেখেছি তোমার ভেতর এক পৃথিবী ভালবাসা,
দেখেছি এক পৃথিবী শিক্ষার আলো
আর দেখেছি রক্তক্ষরণের সহ্যের মাপকাঠির
চরমতার স্পর্শেও কী করে হাসি ফুটিয়ে রাখতে হয় অমলিন মুখে।
আমি দেখেছি কন্টক বহুল পথে কী করে পা ফেলতে হয়,
আর পদ্মপুকুরের বুক থেকে কি করে সযতনে তুলতে হয় এক একটা নীল পদ্ম।
আজ দেখা না দেখার অনেক উর্দ্ধে তুমি
বেদনার অশ্রুসিক্ত আকাশ থেকে ঝরাও
অবিরাম মুঠো মুঠো শ্বেত মঞ্জরি,
শরতের প্রভাত ভরে উঠুক কোমল স্নিগ্ধতায়
ছড়িয়ে দাও বাউলের মেঠো সুর হৃদয় বিতানে
ছড়িয়ে দাও এক বুক প্রেম
আজ এই বিষমিত আকাশ বাতাসে।
Beautiful