Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।

হরিহর বাড়ির চিঠি পায় নাই।

এবার বাড়ি হইতে বাহির হইয়া হরিহর রায় প্রথমে গোয়াড়ী কৃষ্ণনগর যায়। কাহারও সঙ্গে তথায় পরিচয় ছিল না। শহর-বাজার জায়গা, একটা না একটা কিছু উপায় হইবে এই কুহকে পড়িয়াই সে সেখানে গিয়াছিল। গোয়াড়ীতে কিছুদিন থাকিবার পর সে সন্ধান পাইল যে, শহরে উকিল কি জমিদারের বাড়িতে দৈনিক বা মাসিক চুক্তি হিসারে চণ্ডীপাঠ করার কার্য প্রায়ই জুটিয়া যায়। আশায় আশায় দিন পনেরো কাটাইয়া বাড়ি হইতে পথখরচ বলিয়া যৎসামান্য যাহা কিছু আনিয়াছিল ফুরাইয়া ফেলিল, অথচ কোথাও কিছু সুবিধা হয় না।

সে পড়িল মহাবিপদে-অপরিচিত স্থান, কেহ একটি পয়সা দিয়া সাহায্য করে এমন নাইখোড়ে বাজারের যে হোটেলটিতে ছিল পয়সা ফুরাইয়া গেলে সেখান হইতে বাহির হইতে হইল। একজনের নিকট শুনিল স্থানীয় হরিসভায় নবাগত অভাবগ্ৰস্ত ব্ৰাহ্মণ পথিককে বিনামূল্যে থাকিতে ও খাইতে দেওয়া হয়। অভাব জানাইয়া হরিসভার একটা কুঠুরির একপাশে থাকিবার স্থান পাইল বটে, কিন্তু সেখানে বড় অসুবিধা, অনেকগুলি নিষ্কৰ্মা গাঁজাখোর লোক রাত্ৰিতে সেখানে আড়া করে, প্রায় সমস্ত রাত্ৰি হৈ হৈ করিয়া কাটায়, এমন কি গভীর রাত্রিতে এক-একদিন এমন ধরনের স্ত্রীলোকের যাতায়াত দেখা যাইতে লাগিল যাহ্যাঁদের ঠিক হরিমন্দির দর্শন-প্ৰাধিনী ভদ্রমহিলা বলিয়া মনে হয় না। অতিকষ্টে দিন কটাইয়া সে শহরের বড় বড় উকিল ও ধনী গৃহস্থের বাড়িতে ঘুরিতে লাগিল। সারাদিন ঘুরিয়া অনেক রাত্ৰিতে ফিরিয়া এক-একদিন দেখিত তাহার স্থানটিতে তাহারই বিছানাটি টানিয়া লইয়া কে—একজন অজ্ঞাতকুলশীল ব্যক্তি নাক ডাকাইয়া ঘুমাইতেছে। হরিহর কয়েকদিন বাহিরের বারান্দায় শুইয়া কটাইল। প্রায়ই এরূপ হওয়াতে ইহা লইয়া গাঁজাখের সম্প্রদায়ের সহিত তাহার একটু বাচসা হইল। পরদিন প্রাতে তাহারা হরিসভার সেক্রেটারির কাছে গিয়া কি লাগাইল তাহারাই জানে—সেক্রেটারি-বাবু নিজ বাড়িতে হরিহরকে ডাকাইয়া পাঠাইলেন ও বলিলেন, তাহদের হরিসভায় তিনদিনের বেশি থাকিবার নিয়ম নাই, সে যেন অন্যত্র বাসস্থান দেখিয়া লয়।

সন্ধ্যার পরে জিনিসপত্র লইয়া হরিহরকে হরিসভার বাড়ি হইতে বাহির হইতে হইল।

খোড়ে নদীর ধারে অল্প একটু নির্জন স্থানে পুটুলিটা নামাইয়া রাখিয়া নদীর জলে হাত-মুখ ধুইল।

সারাদিন কিছু খাওয়া হয় নাই-সেদিন একটি কাঠের গোলাতে বসিয়া শ্যামবিষয় গান করিয়াছিল-গোলার অধিকারী একটি টাকা প্ৰণামী দেয়-সেই টাকাটি হইতে কিছু পয়সা ভাঙাইয়া বাজার হইতে মুড়ি ও দই কিনিয়া আনিল। খাবার গলা দিয়া যেন নামে না-মাত্র দিনদশেকের সম্বল রাখিয়া সে বাড়ি হইতে বাহির হইয়াছে। অদ্য প্রায় দুই মাসের উপর হইয়া গেল-এ পর্যন্ত একটি পয়সা পাঠাইতে পারে নাই-এতদিন কি করিয়া তাহদের চলিতেছে! অপু বাড়ি হইতে আসিবার সময় বার বার বলিয়া দিয়াছে—তাহার জন্য একখানা পদ্মপুরাণ কিনিয়া লইয়া যাইবার জন্য। ছেলে বই পড়িতে বড় ভালোবাসে-মাঝে মাঝে সে যে বাপের বাক্স-দপ্তর হইতে লুকাইয়া বই বাহির করিয়া লইয়া পড়ে, তাহা হরিহর বুঝিতে পারে-বাক্সের ভিতর আনাড়ি হাতের হেলাগোছা করা থাকে– কোন বই বাবা বাক্সর কোথায় রাখে, ছেলে তোহা জানে না-উলটা-পালটা করিয়া সাজাইয়া চুরি ঢাকিবার অক্ষম চেষ্টা করে—হরিহর বাড়ি ফিরিয়া বাক্স খুলিয়াই বুঝিতে পারে ছেলের কীর্তি।

তাহার বাড়ি হইতে আসিবার পূর্বে তুরিহর যুগীপাড়া হইতে একখানা বটতলার পদ্মপুরাণ পড়িবার জন্য লইয়া আসে-অপু বইখানা দখল করিয়া বসিল—রোজ রোজ পড়ে—কুচুনী পাড়ায় শিবঠাকুরের মাছ ধরিতে যাওয়ার কথাটা পড়িয়া তাহার ভারি আমোদ-হরিহর বলে-বইখানা দ্যাও বাবা, যাদের বই তারা চাচ্ছে যে! অবশেষে একখানা পদ্মপুরাণ তাঁহাকে কিনিয়া দিতে হইবেএই শর্তে বাবাকে রাজি করাইয়া। তবে সে বই ফেরত দেয়। আসিবার সময় বার বার বলিয়াছে।– সেই বই একখানা এনে কিন্তু বাবা, এবার অবিশ্যি অবিশ্যি। দুর্গার উঁচু নজর নাই, সে বলিয়া দিয়াছে, একখানা সবুজ হাওয়াই কাপড় ও একপাত ভালো দেখিয়া আলতা লইয়া যাইবার জন্য। কিন্তু সে সব তো দূরের কথা, কি করিয়া বাড়িতে সংসার চলিতেছে সেই না এখন সমস্যা! সন্ধ্যার পর পূর্ব-পরিচিত কাঠের গোলটায় গিয়া সে রাত্রের মতো আশ্রয় লইল। ভালো ঘুম হইল নাবিছানায় শুইয়া বাড়িতে কি করিয়া কিছু পাঠায় এই ভাবনায় এপাশ-ওপাশ করিতে লাগিল।

সকালে উঠিয়া ঘুরিতে ঘুরিতে সে লক্ষ্যহীন ভাবে পথের একস্থানে দাঁড়াইল। রাস্তার ওপারে। একটা লাল ইটের লোহার ফটকওয়ালা বাড়ি। অনেকক্ষণ চাহিয়া তাহার কেমন মনে হইল। এই বাড়িতে গিয়া দুঃখ জানাইলে তাহার একটা উপায় হইবে। কলের পুতুলের মতো সে ফটকের মধ্যে ঢুকিয়া পড়িল। সাজানো বৈঠকখানা, মার্বেল পাথরের ধাপে স্তরে স্তরে বসানো ফুলের টব, পাথরের পুতুল, পাম, দরজায় ঢুকিবার স্থানে পা-পোষ পাতা। একজন প্রৌঢ় ভদ্রলোক বৈঠকখানায় খবরের কাগজ পড়িতেছেন-অপরিচিত লোক দেখিয়া কাগজ পাশে রাখিয়া সোজা হইয়া বসিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, কে তুমি? কি দরকার?

হরিহর বিনীতভাবে বলিল-আজ্ঞে আমি ব্ৰাহ্মণ-সংস্কৃত পড়া আছে, চণ্ডী পাঠ-টাট্‌ করি।– তা ছাড়া ভাগবত কি গীতা পাঠও–

প্রৌঢ় ভদ্রলোকটি ভালো করিয়া কথা না শুনিয়াই তাহার সময় অত্যন্ত মূল্যবান, বাজে কথা শুনিবার সময় নিতান্ত সংক্ষেপ জানাইয়া দিবার ভাবে বলিলেন-না, এখানে ওসব কিছু এখন সুবিধে হবে না, অন্য জায়গায় দেখুন।

হরিহর মরীয় ভাবে বলিল-আজ্ঞে নতুন শহরে এসেচি, একেবারে কিছু হাতে নেই-বড় বিপদে পড়িচি, কদিন ধরে কেবলই–

প্রৌঢ় লোকটি তাড়াতাড়ি বিদায় করিবার ভঙ্গিতে ঠেস দেওয়ার তাকিয়াটা উঠাইয়া একটা কি তুলিয়া লইয়া হরিহরের দিকে হাত বাড়াইয়া বলিলেন–এই নিন, যান, অন্য কিছু হবে টবে না, নিন। সেটা যে শ্রেণীর মুদ্রাই হউক সেইটাই অন্য সুরে দিতে আসিলে হরিহর লাইতে কিছুমাত্র আপত্তি করিত না-এরূপ সে বহুস্থানে লইয়াছেও; কিন্তু সে বিনীতভাবে বলিল-আজ্ঞের আপনি রাখুন, আমি এমনি কারুর কাছে নিইনে—আমি শাস্ত্ৰ পাঠ-টাটু করি।–তা ছাড়া কাবুর কাছে-আচ্ছা থাক–

একটু শুভযোগ বোধ হয় ঘটিয়াছিল। রক্ষিত মহাশয়ের কাঠের গোলাতেই একদিন একটা সন্ধান জুটিল। কৃষ্ণনগরের কাছে একটা গ্রামে একজন বর্ধিষ্ণু মহাজন গৃহ-দেবতার পূজা-পাঠ করিবার জন্য একজন ব্রাহ্মণ খুঁজতেছে, যে বরাবর টিকিয়া থাকিবে। রক্ষিত মহাশয়ের যোগাযোগে অবিলম্বে হরিহর সেখানে গেল-বাড়ির কর্তাও তাহাকে পছন্দ করিলেন। থাকিবার ঘর দিলেন, আদর-আপ্যায়নের কোন ত্রুটি হইল না।

কয়েকদিন কাজ করিবার পরেই পূজা আসিয়া পড়িল। বাড়ি যাইবার সময় বাড়ির কর্তী দশ টাকা প্ৰণামী ও যাতায়াতের গাড়িভাড়া দিলেন, গোয়াড়ীতে রক্ষিত মহাশয়ের নিকট বিদায় লইতে আসিলে সেখান হইতেও পাঁচটি টাকা প্ৰণামী পাওয়া গেল।

আকাশে-বাতাসে গরম রৌদ্রের গন্ধ, নীল নির্মেঘ আকাশের দিকে চাহিলে মনে হঠাৎ উল্লাস আসে, বর্ষাশেষের সরস সবুজ লতাপাতায় পথিকের চরণভঙ্গিতে কেমন একটা আনন্দ মাখানো। রেলপথের দুপাশে কাশ ফুলের ঝাড় গাড়ির বেগে লুটাইয়া পড়িতেছে, চলিতে চলিতে কেবলই বাড়ির কথা মনে হয়।

একদল শাস্তিপুরের ব্যবসায়ী লোক পূজার পূর্বে কাপড়ের গোট ক্ৰয় করিতে কলিকাতায় গিয়াছিল, চুণীঘাটের খেয়ার নৌকায় উঠিয়া কলরব করিতেছে-সর্বত্র একটা উৎসবের উল্লাস। রানাঘাটের বাজারে সে স্ত্রী ও পুত্রকন্যার জন্য কাপড় কিনিল। দুৰ্গা লালপাড় কাপড় পরিতে ভালোবাসে, তাহার জন্য বাছিয়া একখানা ভালো কাপড়, ভালো দেখিয়া আলতা কয়েক পাতা। অপুর ‘পদ্মপুরাণ’ অনেক সন্ধান করিয়াও মিলিল না, অবশেষে একখানা ‘সচিত্র চণ্ডী-মাহাত্ম্য বা কালকেতুর উপাখ্যান’ ছয় আনা মূল্যে কিনিয়া লইল। গৃহস্থলির টুকটাক দু’একটা জিনিস সর্বজয়া বলিয়া দিয়াছিল–একটা কাঠের চাকি-বেলুনের কথা, তাহাও কিনিল।

দেশের স্টেশনে নামিয়া হ্যাঁটিতে হ্যাঁটিতে বৈকালের দিকে সে গ্রামে আসিয়া পৌঁছিল। পথে বড় একটা কাহারও সহিত দেখা হইল না, দেখা হইলেও সে হন হন করিয়া উদ্বিগ্নচিত্তে কাহারও দিকে বিশেষ লক্ষ না করিয়া বাড়ির দিকে চলিল। দরজায় ঢুকিতে ঢুকিতে আপন মনে বলিল-উঃ, দ্যাখো কাণ্ডখানা, বাঁশ-ঝাড়টা বুকে পড়েচে একেবারে পাচিলের ওপর, ভুবন কাকা কাটাবেনও নামুশকিল হয়েচে আচ্ছা-পরে সে বাড়ির উঠানে ঢুকিয়া অভ্যাসমতো আগ্রহের সুরে ডাকিল-ওমা দুগগা-ও অপু–

তাহার গলার স্বরা শুনিয়া সর্বজয়া ঘর হইতে বাহির হইয়া আসিল।

হরিহর হাসিয়া বলিল-বাড়ির সব ভালো? এরা সব কোথায় গেল? বাড়ি নেই বুঝি?

সর্বজয়া শান্তভাবে আসিয়া স্বামীর হাত হইতে ভারী পুঁটুলিটা নামাইয়া লইয়া বলিল, এসো—ঘরে এসো।

স্ত্রীর অদৃষ্টপূর্ব শাস্তাভাব হরিহর লক্ষ করিলেও তাহার মনে কোনো খটকা হইল না।–তাহার কল্পনার স্রোত। তখন উদ্দাম বেগে অন্যদিকে ছুটিয়াছে-এখনই ছেলে মেয়ে ছুটিয়া আসিবে–

দুৰ্গা আসিয়া হাসিমুখে বলিবে-কি বাবা এর মধ্যে? আমনি তাড়াতাড়ি হরিহর পুঁটুলি খুলিয়া মেয়ের কাপড় ও আলতার পাতা এবং ছেলের সচিত্র ‘চণ্ডী-মাহাত্ম্য বা কালকেতুর উপাখ্যান’ ও টিনের রেলগাড়িটা দেখাইয়া তাঁহাদের তাক লোগাইয়া দিবে। সে ঘরে ঢুকিতে ঢুকিতে বলিল, বেশ কঁঠালের চাকি-বেলুন। এনিচি এবার। পরে কিছু নিরাশামিশ্রিত সতৃষ্ণ নয়নে চারিদিকে চাহিয়া বলিল, কই—অপু দুগগা এরা বুঝি সব বেরিয়েচে–

সর্বজয়া আর কোনো মতেই চাপিতে পারিল না। উচ্ছসিত কণ্ঠে ফুকারিয়া কাঁদিয়া উঠিল– ওগো দুগগা কি আর আছে গো-মা যে আমাদের ফাঁকি দিয়ে চলে গিয়েচে গো-এতদিন কোথায় ছিলে!

গাঙ্গুলি-বাড়ির পূজা অনেক কালের। এ কয়দিন গ্রামে অতি বড় দরিদ্রও আভুক্ত থাকে না। সব বনেদী বন্দোবস্ত, নির্দিষ্ট সময়ে কুমোর আসিয়া প্রতিমা গড়ায়, পোটো চালচিত্র করে, মালাকার সাজ জোগায়, বারাসে-মধুখালির দ’ হইতে বাউরিরা রাশি রাশি পদ্মফুল তুলিয়া আনে।

আঁসামালির দীনুসানাইদার অন্য অন্য বৎসরের মতো রসুনোচৗকি বাজাইতে আসিল। প্ৰভাতের আকাশে আগমনীর আনন্দ সুর বাজিয়া ওঠে-আসন্ন হেমন্ত ঋতুর মেহত্মভ্যর্থনা-নব ধান্যগুচ্ছের, নব আগন্তুক শেফালিদলের, হিমালয়ের পার হইতে উড়িয়া আসা পথিক-পাখি শ্যামার, শিশির-স্নিগ্ধ মৃণাল-ফোটা হেমন্তসন্ধ্যার।

নূতন কাপড় পরাইয়া ছেলেকে সঙ্গে লইয়া হরিহর নিমন্ত্রণ খাইতে যায়। একখানি অগোছালো চুলে-ঘেরা ছোট মুখের সনির্বন্ধ গোপন অনুরোধ দুয়ারের পাশের বাতাসে মিশাইয়া থাকে-হরিহব পথে পা দিয়া কেমন অন্যমনস্ক হইয়া পড়ে-ছেলেকে বলে, এগিয়ে চলো, অনেক বেলা হয়ে গিয়েছে বাবা–

গাঙ্গুলি-বাড়ির প্রাঙ্গীণ উৎসবেশে সজ্জিত হাসিমুখ ছেলেমেয়েতে ভরিয়া গিয়াছে। অপু চাহিয়া দেখিল, সতু ও তাহার ভাই কেমন কমললেবু রং-এর জামা গায়ে দিয়াছো-সবুজ শাড়ি পরিয়া ও দিব্য চুল বাঁধিয়া রানু দিদিকে যা মানাইয়াছে! গাঙ্গুলি বাড়ির মেয়ে সুনয়নী খোঁপায় রজনীগন্ধা ফুল গুজিয়া আর পাঁচ-ছয়টি মেয়ের সঙ্গে পূজার দালানে দাঁড়াইয়া খুব গল্প করিতেছে ও হাসিতেছে। সুনয়নী বাদে বাকি মেয়েদের সে চেনে না, বোধ হয় অন্য জায়গা হইতে উহাদের বাড়ি পূজার সময় আসিয়া থাকিবে-শহরের মেয়ে বোধ হয়, যেমন সাজগোজ, তেমন দেখিতে! অপু একদৃষ্টি তাহদের দিকে চাহিয়া রহিল। ওদিকে কে চেঁচাইয়া বলিতেছে-বড় সামিয়ানাটা আনবার ব্যবস্থা এখনও হল না?—বাঃ-তোমাদের যা কাজ-কর্ম দেখো এখন এর পর মজাটা। তারপর ব্রাহ্মণ। খেতে বসবে কি বোলা পাঁচটায়?

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress