Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » নীলবসনা সুন্দরী || Panchkari Dey » Page 35

নীলবসনা সুন্দরী || Panchkari Dey

মজিদ খাঁ হাজতে ।
হরিপ্রসন্ন তাঁহার সহিত দেখা করিয়া অনেক রকমে বুঝাইতে লাগিলেন । তাঁহার মাথার উপরে অতি সূক্ষসূত্রে যে একখানা ভয়ানক বিপদের খড়গ ঝুলিতেছে, তাহাও নির্দ্দেশ করিয়া দেখাইয়া দিলেন ।
মজিদ খাঁ বলিলেন, “যাহা বলিবার, তাহা আমি পূর্ব্বেই আপনাকে বলিয়াছি । তবে ছুরিখানির সম্বন্ধে আমি আপনার নিকটে কোন কথা গোপন করিতে চাহি না । আমি বিগত বুধবারে অপরাহ্ণে মনিরুদ্দীনের বাড়ীতে গিয়াছিলাম । সেইখানে দিলজানের সহিত আমার দেখা হয় । দিলজান মনিরুদ্দীনের সহিত দেখা করিতে আসিয়াছিল । তাহার অবস্থা তখন ভাল নহে; সে ক্ষোভে, রোষে যেন উন্মত্তা হইয়া উঠিয়াছিল । আমি তাহাকে অনেক করিয়া বুঝাইতে লাগিলাম. কিছুতেই তাহাকে প্রকৃতিস্থ করিতে পারিলাম না । একবার সে রোষভরে সেই ছুরিখানা বাহির করিয়া বলিল, “আগে সে মনিরুদ্দীনকে খুন করিবে, তাহার পর সৃজানকে; নতুবা সে কিছুতেই ক্ষান্ত হইবে না । আমি তাহার নিকট হইতে জোর করিয়া ছুরিখানা কাড়িয়া লইতে গেলাম; সে তখন ছুরিখানি দ্বারের বাহিরে ছুঁড়িয়া ফেলিয়া দিল । আমি যেমন ছুটিয়া গিয়া ছুরিখানি কুড়াইয়া লইতে যাইব-দেখিতে না পাইয়া ছুরিখানি মাড়াইয়া ফেলিলাম, তাহাতেই ছুরির বাঁট ভাঙ্গিয়া যায় । আমি ছুরিখানি তুলিয়া পকেটে রাখিয়া দিলাম । ছুরিখানি যে বিষাক্ত, তাহা আমরা কেহই তখন জানিতাম না । দিলজানের যদি জানা থাকিত, তাহা হইলে আমি যখন ছুরিখানা লইয়া কাড়াকাড়ি করি, অবশ্যই সে আমাকে সাবধান করিয়া দিত, আর সে নিজেও সাবধান হইত । যাহা হউক, তাহাকে বিদায় করিয়া দিয়া আমি নিজের বাসায় চলিয়া আসি; ইহার পর দিলজানের সহিত আর আমার দেখা হয় নাই । বাসায় আসিয়া ছুরিখানা পকেট হইতে বাহির করিয়া আমি টেবিলের উপরেই ফেলিয়া রাখিয়া দিই । আমি চাবির পাশে ছুরি রাখি নাই-আর কেহ সেখানে রাখিয়া থাকিবে ।”
হরিপ্রসন্ন বাবু জিজ্ঞাসা করিলেন, “তবে সেইদিন মনিরুদ্দীনের বাড়ীতে রাত এগারটার পর যে স্ত্রীলোকটির সহিত তোমার দেখা হইয়াছিল, সে কে?”
মজিদ খাঁ অবনতমস্তকে কহিলেন, “সে কথা আমি কিছুতেই বলিতে পারিব না-বাধা আছে । আমি যতক্ষণ না সেই স্ত্রীলোকের সহিত আর একবার দেখা করিতে পারিতেছি ততক্ষণ আমি তাহার নাম প্রকাশ করিতে পারিব না, আমি তাহার নিকটে এইরূপ প্রতিশ্রুত আছি । তাহার সম্মতি ব্যতীত এখন আর উপায় নাই ।”
হরি । তাহার সম্মতি কতদিনে পাইবে?
মজিদ । তা’ আমি এখন কিরূপে বলিব? তবে এ সময়ে মনিরুদ্দীনের সঙ্গে একবার দেখা হইলে আমি যাহা হয়, একটা স্থির করিয়া হয় ত সেই স্ত্রীলোকের নাম প্রকাশ করিতে পারিতাম ।
হরি । তোমার কথার ভাবে বুঝিতে পারা যাইতেছে, সেই স্ত্রীলোক নিশ্চয়ই সৃজান ।
মজিদ । কই, আমি ত আপনাকে কিছু বলি নাই ।
হরি । স্পষ্টতঃ না বলিলেও, তোমার কথার ভাবে বুঝাইতেছে, সেই স্ত্রীলোক আর কেহ নহে-সৃজানই সম্ভব ।সম্ভব কেন-নিশ্চয়ই । আর আমাকে গোপন করিতে চেষ্টা করিয়ো না । ঠিক করিয়া বল দেখি, সে সৃজান কি না?
মজিদ । আমার অপরাধ ক্ষমা করুন, আপনি কোন ক্রমেই এখন আমার কছে আপনার এ প্রশ্নের উত্তর পাইবেন না ।
হরিপ্রসন্ন বাবু আরও অনেক চেষ্টা করিলেন, কিছুতেই মজিদ খাঁর মত্ পরিবর্ত্তন করিতে পারিলেন না । বলিলেন, “তুমি যদি বাপু, তোমার নিজের বিপদের কতটা গুরুত্ব না বুঝিতে পার, তোমার মত নির্ব্বোধ আর কেহই নাই । যদি তুমি এখনও আমার কাছে সত্য গোপন করিতে চাও-আমি তোমাকে উদ্ধার করিবার কোন সুবিধাই করিতে পারিব না ।”
তথাপি মজিদ খাঁ নিরুত্তর রহিল ।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *