Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » নীলবসনা সুন্দরী || Panchkari Dey » Page 27

নীলবসনা সুন্দরী || Panchkari Dey

এমন সময়ে মজিদ খাঁ দুগ্ধপূর্ণ একটা বড় কাচের পেয়ালা হস্তে কক্ষমধ্যে প্রবেশ করিলেন। দুগ্ধ হইতে ধুঁয়া উড়িতেছে। মজিদ দুঃখিত ভাবে কহিলেন, “বড় কষ্ট হইতেছে-না?”
শ্রীশ রোদনের সুরে কহিল, ” বড় কষ্ট-পেট জ্ব’লে গেল-বুক পর্য্যন্ত শুকিয়ে গেছে-হুজুর-আমি আর বাঁচব না!”
“ভয় কি!” বলিয়া জানুতে ভর দিয়া মজিদ শ্রীশের মাথার কাছে বসিলেন। বসিয়া বলিলেন, “এই দুধটুকু খেয়ে ফেল দেখি; গায়ে এখনই জোর পাবে।”
শ্রীশ অনেক কষ্টে (?) উঠিল। এবং দুধের পেয়ালা নিজের হাতে লইয়া পান করিতে আরম্ভ করিয়া দিল।
মজিদ নিকটস্থ একখানা চেয়ারে বসিয়া, একটা চুরুটে অগ্নিসংযোগ করিয়া টানিতে আরম্ভ করিয়া দিলেন, এবং প্রসন্ননেত্রে বালক শ্রীশের দুগ্ধ পান দেখিতে লাগিলেন।
হায়, হতভাগ্য মজিদ! তুমি এখনও বুঝিতে পার নাই-কালসর্পকে দুগ্ধ দিয়া পোষণ করিতেছ-এখনই একটা সুযোগ পাইলে সে তোমাকেই দংশন করিবে। দুগ্ধপান শেষ করিয়া শ্রীশ ভাবভঙ্গিতে জানাইল, সে অনেকটা সুস্থ হইতে পারিয়াছে। সুস্থ হইবার কথা-এক সেরের অধিক দুগ্ধ তাহাকে দেওয়া হইয়াছিল।
মজিদ জিজ্ঞাসা করিলেন, ” আর কিছু খাবে?”
শ্রীশ বলিল, ” আর কিছু না-হুজুরের দয়ায় এ যাত্রা বেঁচে গেলাম-আপনি না দয়া কর্লে এতক্ষণে জাহান্নমে যেতে হ’ত।”
মজিদ তাহাকে কিছু পয়সা দিলেন। বলিলেন, “এই পয়সা নিয়ে যাও, এখনও খাবারের দোকান খোলা আছে, কিছু খাবার কিনে খাও গিয়ে।”
শ্রীশ ছাড়িবার পাত্র নহে-অনেকগুলি পয়সা ট্যাঁকে গুঁজিয়া বাহির হইয়া পড়িল।
মজিদ খাঁ নিজের ঘরের দ্বার বন্ধ করিলেন। তখন ঝড়-বৃষ্টি থামিয়া গিয়াছিল। আকাশ পরিষ্কার-মজিদ খাঁ সমুদয় গবাক্ষগুলি খুলিয়া দিলেন। গবাক্ষপথে চাহিয়া দেখিলেন, সেই অনাহারক্লিষ্ট বালক, এক্ষণে পার্শ্বস্থ গলিপথে দিয়া উর্দ্ধশ্বাসে ছুটিয়া চলিয়াছে। আপনমনে বলিলেন, “পরোপকারে মনের তৃপ্তি হয়-ফলও আছে।”
বলিতে কি, মজিদ এই পরোপকারে যে ফলপ্রাপ্ত হইলেন, তাহা পাঠক নিম্নলিখিত কয়েকটি পংক্তি পাঠে বুঝিতে পারিবেন।
পরদিন অপরাহ্নে মজিদ নিজের ঘরে বসিয়া মনিরুদ্দীনের জমিদারী সংক্রান্ত হিসাব-নিকাশ ঠিক করিতেছিলেন।
এমন সময়ে দুই ব্যক্তি আসিয়া তাঁহার পার্শ্বে দাঁড়াইলেন তন্মধ্যে একজন দেবেন্দ্রবিজয়, একজন স্থানীয় থানার জমাদার। মজিদ খাঁ দেবেন্দ্রবিজয়ের মুখের দিকে চকিতে চাহিয়া বলিলেন, “মহাশয়, আবার কি মনে ক’রে?”
দেবেন্দ্রবিজয় পকেট হইতে একখানি ওয়ারেন্ট বাহির করিয়া দেখাইলেন। মজিদ আরও চমকিত হইয়া, মহা ভয় পাইয়া কহিলেন, ” কি সর্ব্বনাশ! এ ওয়ারেন্ট যে আমারই নামে! আমি কি করিয়াছি?”
দেবেন্দ্রবিজয় কহিলেন, “আপনি দিলজানকে হত্যা করিয়াছেন। সেই হত্যাপরাধে মহারাণীর নাম লইয়া আপনাকে এখন বন্দী করিলাম।”
তখনই মজিদ খাঁর হাতে সশব্দে হাতকড়ি পড়িল। মজিদ খাঁ বন্দী হইলেন।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *