হাওয়াই দ্বীপে যাইনি, দক্ষিণ সমুদ্রের কোন দ্বীপপুঞ্জে।
তবু চিনি ঘাসের ঘাগরাপরা ছায়া বরণ তার সুন্দরীদের;
বিদেশি টহলদারের ক্যামেরা- কলুষিত চোখে নয়।
দেখেছি তাদের ঘাসের ঘাগরায় নাচের ঢেউ-এর হিল্লোল,
নোনা হাওয়ায় দমকে দমকে যেমন নারকেল- বনের দোলা।
মোহিনী পলিনেসিয়া!
মহাসাগরে ছড়ান
ভেঙ্গে যাওয়া ভুলে যাওয়া কোন্ সুদূর সভ্যতার নাকি ভগ্নাংশ
আমি জানি,
সমুদ্রের ঔরসে
প্রবাল দ্বীপের গর্ভে তার জন্ম!
সূর্যের ওরসে মহারণ্যের গর্ভে যার জন্ম! আঁধার বরণ সেই আফ্রিকাকেও জানি,
শৌখিন শিকারী আর পন্ডিত পর্যটকের চোখে নয়।
অরণ্য -চোঁয়ানো ঝাপসা আলোয়,
কি, দিগন্ত- ছোঁয়া ফেল্টর চোখ -ঝলসানো উজ্জ্বলতায়
উদ্দাম আঁধার বরণ আফ্রিকা!
কণ্ঠে তার দুরন্ত অরণ্য উল্লাস
– হে ইডি, হাইডি, হা-ই!
হে- ইডি, হাইডি, হা-ই!
কালো চামড়ার ছোঁয়াচ বাঁচাতে
কালো মনের ছোঁয়াচে রোগের জর্জর
বিলাসী ক্লীবের প্রলাপ- প্রতিধ্বনি নয়।
রাত্রি- নিবিড়, অরণ্য গহন আফ্রিকার
রোমাঞ্চিত উত্তাল উচ্চারণ,
হে- ইডি, হাইডি, হা-ই।
হে- ইডি, হাইডি, হা-ই।
অরণও ডাকে ওই,-যাই!
সিংহের দাঁতের ধার, সিংহের নখে ধার,
চোখে তার মৃত্যুর রোশানাই!
-হে- ইডি, হাইডি, হা-ই!
বন-পথে বিভীষিকা, বিঘ্ন,
আমাদেরও বল্লম তীক্ষ্ণ!
কাপুরুষ সিংহ তো মারতেই জানে শুধু
আমরা যে মরতেও চাই!
হে- ইডি, হাইডি, হা-ই!
মেয়েদের চোখ আজি চক্ চকে ধারালো;
নেচে নেচে ঢেউ -তোলা, নাচের নেশায় দোলা
মিশ্ কালো অঙ্গে কি চেক্ নাই!
মৃত্যুর মৌতাতে বুঁদ হয়ে গেছি সব
রমণী ও মরণেতে ভেদ ভেদ নাই!
-হে- ইডি, হাইডি, হা-ই!
হে- ইডি, হাইডি, হা-ই!
আমাদের গলায় কই সেই উদ্দাম উল্লাস,ঘাসের ঘাগরায় দুরন্ত সমুদ্র -দোলা?
কেমন করে থাকবে?
আমাদের জীবনে নেই জ্বলন্ত মৃত্যু,
সমুদ্র নীল মৃত্যু পলিনেসিয়ার!
আফ্রিকার সিংহ- হিংস্র মৃত্যু!
আছে শুধু স্তিমিত হয়ে নিভে যাওয়া,
– ফ্যাকাশে রুগ্ন তাই সভ্যতা!
সভ্যতাকে সুস্থ করো, করো সার্থক।
আনো তীব্র, তপ্ত, ঝাঁঝালো, মৃত্যুর স্বাদ,
সূর্য আর সমুদ্রের ঔরসে
যাদের জন্ম,
মৃত্যু- মাতাল তাদের রক্তের বিনিময়।
ভরাট -করা সমুদ্র আর উচ্ছেদ করা অরণ্যের জগতে
কি লাভ গ’ড়ে কৃমি -কীটের সভ্যতা,
লালন ক’রে স্তিমিত দীর্ঘ পরমায়ু
কচ্ছপের মত?
অ্যামিবারও ত’ মৃত্যু নেই।
মৃত্যু জীবনের শেষ সার আবিষ্কার
আর
শিব নীলকন্ঠ!