ধর্ম বিদ্বেষ
বাড়িতে হৈচৈ চলছে জিনিষপত্রের কেনার তোড়জোড় চলছে। কেননা কয়েক মাস বাদে আমার বিয়ে। বাবা ও মা দুজনেই বাঘ ও বাঘিনী।মনে আনন্দ হচ্ছিল , বিয়ের পর অগাধ স্বাধীনতা।কেননা মা ও ছেলের স়ংসার। কথা বলে বুঝেছিলাম হবু শাশুড়ি রয়াল বেঙ্গল টাইগার নয়।
শুধুই একটু ভালোবাসা পাব বলে কুড়ি বছরে বিয়ে করতে রাজি হয়েছিলাম।
বিয়ের তারিখ আঠারোই নভেম্বর। ছেলের আশীর্বাদ জুনমাসে হয়। আমার আশীর্বাদ তারিখ ওই বিয়ের দিন। বিয়ে ঠিক হবার পর হবু বরের সাথে লুকিয়ে ভালো দেখা সাক্ষাৎ হচ্ছিল। বাদশা ও জেনে গেছিল আমার বাবা ও মা ভয়ংকর রাগী। একবার বাবাকে জানিয়ে ছিল আমি সোমাকে নিয়ে পুজোর বাজার করতে যাব। বাবা সোজা না করে দেন হবু জামাইকে। বিয়ে হোক তারপর ঘুরে বেড়িও। এরমধ্যে কলেজ যাবার নাম করে প্রত্যেকদিন দেখা করা হতো। আমার বাড়িতে বিয়ের বাজার শেষ। হঠাৎ দুর্গা পূজার সপ্তমীর দিন জানলাম বাবা বিয়ে ভেঙে দেবেন। আমি শুনে বাথরুমে গিয়ে কাঁদতে থাকি। তারপর ফোনে বাদশাকে জানাই আমাদের নাকি বিয়ে হবে না।কারণ তোমার মা নাকি বিধবা নন। সিঁদুর, শাঁখা পলা ছিল না বলে বাবা,মা বুঝেছিলেন তোমার বাবা মারা গেছেন। তোমার মা কষ্ট পাবেন বলে বাবার কথা তোলেন নি।তোমরাও বলো নি।
বাদশা চুপ থেকে বলে আমার বাবার পরিচয় জানি না তবে বাবার পদবী আমি ব্যবহার করি।মাও করেন।হয়তো পারিবারিক গন্ডগোলে বাবা ও মা পৃথক ছিলেন।তবে বাবা বলছেন তোমরা মিথ্যে কথা বলেছ।
বাদশা বলে সোমা তোমাকে ভালবেসে ফেলেছি। কল্পনায় তোমাকে বৌ হিসাবে দেখি।যাক ঠিক করি আমরা পালিয়ে বিয়ে করব। বিয়ের ভাঙার কথা বাদশা মাকে জানাই।মা সব শুনে আমাদের বাড়িতে আসেন। অনেক অনুরোধ করেন বাবাকে।শেষে বলে দেন ওনার স্বামী হলেন তৎকালীন নামকরা ডাক্তার কুনাল সরকার। আমি মুসলিম সম্প্রদায়ের।তাই আলাদা থাকি। শ্বশুর বাড়িতে আমাকে কেউ গ্রহণ করেন নি।কথা দিলাম আমি ছেলে বৌমাকে রেখে দূরে চলে যাব।হিটলার বাবা হঠাৎ বলেন বিয়েতে রাজি আছি।কুনাল তো আমার প্রিয় বন্ধু। আমি আপনাদের মিলিয়ে দেব। বাদশা র মা নববধূর মতো লজ্জা পান। তাছাড়া বাবা ফিসফিস করে বলে আমি সেই অমিত,যিনি আপনার বিয়ের স্বাক্ষী হয়েছিল।বাদশার মা মীনা চমকে ওঠে।আরে অমিত দা তুমি!!
#শুধুই একটু ভালোবাসা করে বিয়ে করেছিলাম বলে আমার বাপের বাড়িতে আমাকে ঢুকতে দেয় নি। ওদিকে শ্বশুর-বাড়িতে ও বর হিন্দু আমি মুসলিম বলে বিয়েটা মানে নি। কুনালের মা সুইসাইডের ভয় দেখিয়ে বিয়ে দেন কুনালের।সে এখন কোথায় কে জানে!তারপর বাদশা হয়।
বিয়ের দিন ডক্টর কুনাল পুত্রের মাকে দেখে চমকে যান।মহা ধুমধাম করে আমাদের বিয়ে দেন। আমরা সপরিবারে বেশ ভালো আছি।