দরকার সমাজের পরিবর্তন
অনেকগুলো বইয়ের রসাস্বাদন করেছে তিতলি। কত চরিত্রের মুখোমুখি ও। তবুও নানা প্রশ্ন জেগেছে বইগুলো থেকে। আজ অনেকটা রোদে ঘোরা হয়ে গেছে। কতগুলো প্রশ্ন ওর সামনে বারে বারে চলে আসছিল। ছোটবেলায় জেনেছে’ সংসার সুখের হয় রমনীর গুণে’এমন কী গুণ থাকলে একটা সংসার সুখের হয় সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পায়নি। তাই বারবার বইয়ের লাইনগুলো তিতলি পড়ছিল। কত সাহিত্যিক কবিদের চোখে ধরা পড়েছে বিভিন্ন চরিত্র। সমাজের নানা কদর্য রূপ। আজ যাদের দেখে খারাপ বলিতাদের এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির শিকার হতে হয়েছে। অথচ পুরুষটি নির্দোষ। সমাজের খারাপ ভালো বিচার করবে কে? যারা সর্বদা সমালোচনা করছেন, তারা নিজেকে একবার ও পর্যালোচনা করেছেন কিনা সন্দেহ। সমাজে ডিভোর্সের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। সে দিক বিবেচনা করতে গেলে শুধু মেয়েটিকে ঘৃণার চোখে দেখাটা অন্যায়। কোন নারী যদি সন্তানের মা হয়, তবে তাকে সহজে নানা অপ্রস্তুতে ফেলা হয়। সর্বদা তাকে ত্যাগ স্বীকার করতে হবেএটাই যেন সমাজের নিয়ম। সে ভালবাসতে পারবেনা, অন্য কোন সংসার গড়তে পারবে না। সবদিকে তাকে কুৎসিত মন্তব্য করা হবে। এই ধরনের সমাজব্যবস্থা অবক্ষয়ের দিকে ধাবিত হয়। নারীকে সমাজে হেয় করছে আবার নারীরাই। প্রত্যেকের মধ্যেই যেমন সুখ আনন্দ দুঃখ রয়েছে, অপরদিকে রয়েছে কামনা বাসনা। এ গুলো সমাজের কোন ব্যাধি নয়। প্রত্যেক জীবের মত মানুষের রয়েছে সুস্থ স্বাধীনভাবে বাঁচার অধিকার। তিতলি কয়েকবারই এই বিষয়ে মায়ের কাছে প্রশ্ন করেছে। একজন মহিলা তার সততার তারা ভালো থাকতে পারে। একাকিত্ব জীবন সে নাও গ্রহণ করতে পারে। ভালোলাগার জন্য কাউকে ভালবাসতে পারে। নিজের মনের কথা বলার জন্য একজন উপযুক্ত মানুষের সন্ধান করতে পারে। তবে সে ঘৃণ্য এবং অপরাধযোগ্য কেন। সমাজ এখনও নিম্নগামী। তাইতো একে অপরের ঘৃণ্য সমালোচনায় ব্যস্ত থাকে। সমাজের উচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তিরাও এই ধরনের সমালোচনায় ব্যস্ত থাকে। অপরকে সহজে দোষারোপ করতে তাদের কষ্ট হয়না। স্কুল কিম্বা অফিসে তারা নানা সমালোচনা করার অনেক সময় পান। তাদের কাছ থেকে এমন মন্তব্য আশা করা যায় না। শিক্ষিত সমাজ যদি এত পিছিয়ে পড়ে তবে সমাজের উন্নতি কোথা থেকে হবে। তিতলি সব প্রশ্নের মুখোমুখি হতে চায়। সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষকে চিন্তাভাবনার প্রসারণ ঘটাতে হবে। সাধারণ বিষয় গুলোকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় এর বদলে প্রতিটি মানুষের উদার হওয়া দরকার। তবেই সমাজের পরিবর্তন আসবে। বেশ কয়েকটি বইয়ে যেসব সমাজের উল্লেখ আছে সে সমাজ গুলো যেন আরো নিজেদের পরিবর্তন করে। তিতলির এমন বক্তব্যে ওর ক্লাসের বন্ধুরা খুব খুশি হলো। তারাও ভাবছে কখনো এভাবে তারা পর্যালোচনা করে নি। বছর বছর ধরে কেবলমাত্র শুনে ভালো মানুষদের কাটাছেঁড়া করে বিচার করেছে। তাদের কে অপমান করা হয়েছে। সমাজের পরিবর্তন দরকার।