তুলির ফোঁটা
তুলি আজ বেশ তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে পড়েছে। আজ যে ভাইফোঁটা। এই দিনটা প্রত্যেক ভাই বোনের জন্য একটা বিশেষ দিন। তুলির মনে পড়ে বছর পাঁচেক আগে, ও শেষ বার ভাইফোঁটা দিয়েছে। দাদা বিয়ে করে আমেরিকা চলে যাওয়ার পর আর দাদার কপালে ফোঁটা দেওয়ার সৌভাগ্য হয়নি। তুলিকে তাই প্রতি বছর দেয়ালেই ফোঁটা দিতে হয়। তাতে কিন্তু তুলির ভাইফোঁটার উৎসাহে ভাটা পড়েনি। প্রতিবার তার দেয়ালে ফোঁটা দেওয়া চাই। মা যতই বলুক- যে তোকে মনে রাখেনি তুই তাকে মনে করে কষ্ট পাস কেনো?
তুলি মা’য়ের কথার কোনো প্রতিবাদ করেনা। সে এবারও চন্দন বাঁটলো, মিষ্টি সাজিয়ে, আসন পেতে প্রতীক্ষা করতে থাকে। মা এসে তুলির মাথায় হাত রেখে বলে- তোর দাদা তোর এই ভালোবাসার মর্ম বুঝলো না। এই পবিত্র বন্ধনকে অস্বীকার করল। তুলি মা’র গলা জড়িয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে। মা, আমিতো দাদার মঙ্গল কামনা করে দেয়ালে ফোঁটা দিই। তুমি দেখো দাদা ঠিক আসবে। এই সময় দরজায় কলিং বেল বেজে ওঠে। তুলি প্রথমে নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারেনা। ও ঠিক দেখছে তো! দাদা তুলিকে ডেকে বলে কিরে! কি দেখছিস? আজ ভাইফোঁটা ভুলে গেলি? কত বছর পর তোর হাতে ফোঁটা নেবো। নে দরজা খোলা! আনন্দে তুলির চোখের জল আর বাঁধ মানছেনা।