রামায়ণ : কিষ্কিন্ধ্যাকাণ্ড – সুগ্রীবের সীতা উদ্ধারের অঙ্গীকার
সুগ্রীব বলেন, সখে না জানি বিশেষ।
কি জানি কেমন বীর, গেল কোন্ দেশ।।
যথায় যাউক, তার নাহিক এড়ান।
বানর লইয়া তার বধিব পরাণ।।
সম্বর সম্বর মিত্র, মনে দেহ ক্ষমা।
অবিলম্বে উদ্ধারিব তব প্রিয়তমা।।
যথা তথা যাউক সে পাপিষ্ঠ রাবণ।
সবংশে মারিব তার জ্ঞাতি বন্ধুজন।।
বিলাপ সম্বর রাম, শোকে বাড়ে শোক।
শোকেতে কাতর নাহি হয় বিজ্ঞলোক।।
রাজ্য হরাইলাম, হারাইলাম নারী।
পশু আমি, তথাপি তা মনে নাহি করি।।
তুমি রাম হইয়াছ ভুবন-পূজিত।
ভার্য্যা লাগি করা খেদ অতি অনুচিত।।
মিথ্যা না বলিব মিত্র, অগ্নি সাক্ষী করি।
উদ্ধার করিব আমি তোমার সুন্দরী।।
অশেষ প্রকারে রাজা জন্মায় প্রবোধ।
তথাপি বিষম শোক নাহি হয় রোধ।।
এতেক বলিল যদি সুগ্রীব ভূপতি।
প্রত্যুত্তর করেন আপনি রঘুপতি।।
জ্ঞাতি গোত্র পুত্র মিত্র শোক পায় লোক।
সে সবার হইতে অধিক ভার্য্যা-শোক।।
কলত্রে গৃহীর সুখ, কলত্রে সংসার।
কলত্র হইতে হয় পুত্র পরিবার।।
গয়াশ্রাদ্ধ করে পুত্র বংশের উদ্ধার।
পুত্র দ্বারা পারত্রিক ঐহিক নিস্তার।।
অশেষ প্রকারে মিত্র বুঝাও আমায়।
তথাপি কলত্র-শোক পাসরা না যায়।।
সুগ্রীব বলেন রাম কি কহিতে পারি।
করিব আজ্ঞার মত কি কহিতে পারি।
করিব আজ্ঞার মত আমি আজ্ঞাকারী।।
করিব তোমার কার্য্য আমি যথাজ্ঞান।
কৃত্তিবাস রচে গীত অমৃত-সমান।।