গাড়ি চালাচ্ছে সিদ্ধার্থ
গাড়ি চালাচ্ছে সিদ্ধার্থ। সামনের সিটে কাকাবাবু আর বিল্টু। পিছনের সিটে সন্তু আর জোজো আর রিনি। যাওয়া হচ্ছে এয়ারপোর্টের দিকে। কাকাবাবুর সঙ্গে বিল্টু আর রিনি যাবে দিল্লি। কাকাবাবুর বন্ধু নরেন্দ্র ভার্মার বাড়িতে থাকা হবে। কাকাবাবুর দুহাতেই ব্যান্ডেজ।
জোজো বলল, এবার বিন্দুই হিরো। আমি আর সন্তু কোনও চান্সই পেলাম না!
কাকাবাবু বললেন, বিল্টু আসল হিরো তো হবে আগামীকাল। দিল্লিতে। রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে ফার্স্ট প্রাইজ নেবে।
সিদ্ধার্থ বলল, রিনি এত ভাল ছবি আঁকে, ও কোনও প্রাইজই পেল না। আর বিল্টু ফার্স্ট প্রাইজ পেয়ে গেল!
রিনি বলল, আমি ওকে শিখিয়েছি। ও পাওয়া মানেই তো আমারও পাওয়া।
সন্তু জিজ্ঞেস করল, কাকাবাবু, বিন্দুকে যেখানে আটকে রেখেছিল, সেই জায়গাটা কোথায়?
কাকাবাবু বললেন, বিহারে। ছোট ছোট পাহাড় আর জঙ্গলের জায়গা।
বিল্টু বলল, আমাদের বাঘ দেখা হল না। কাকাবাবু, আমরা কিন্তু পরে বাঘ দেখতে যাব।
কাকাবাবু বললেন, যাব তো নিশ্চয়ই। তবে, বাঘ তো চোখ বুজলেই দেখা যায়, তাই না?
জোজো জিজ্ঞেস করল, আচ্ছা কাকাবাবু, বিল্টু যে বলল, ওদের পালের গোদাটাকে অন্যরা বড়বাবু বলে ডাকছিল, ও কীসের বড়বাবু?
কাকাবাবু বললেন, সেটা তো জিজ্ঞেস করা হয়নি!
সন্তু বলল, বোধহয় হেড অফিসের বড়বাবু!
কাকাবাবু বললেন, তা হতে পারে! ওর গোঁফ ছিল নাকি রে বিল্টু?
বিল্টু খিলখিল করে হেসে উঠে বলল, হেড অফিসের বড়বাবু, লোকটি বড় শান্ত! মোটেই শান্ত নয়, খুব পাজি!
কাকাবাবু বললেন, তার যে এমন মাথার ব্যামো কেউ কখনও জানত।
সন্তু বলল, দিব্যি ছিলেন খোশমেজাজে চেয়ারখানি চেপে।
বিল্টু বলল, একলা বসে ঝিমঝিমিয়ে হঠাৎ গেলেন খেপে।
কাকাবাবু বললেন, আঁতকে উঠে হাত-পা ছুঁড়ে চক্ষু করে গোল।
সন্তু বলল, হঠাৎ বলেন, গেলুম গেলুম আমায় ধরে তোল।
কাকাবাবু বললেন, তাই শুনে কেউ…ইয়ে, তারপর কী যেন? অনেক দিন পড়িনি তো, মনে পড়ছে না। কী রে, সন্তু, তোর মনে আছে?
সন্তু বলল, বিল্টু সব জানে!
বিল্টু জিজ্ঞেস করল, তুমি পারবে কিনা বলো।
সন্তু বলল, নাঃ, আমারও মনে নেই।
বিল্টু গড়গড়িয়ে বলল, তাই শুনে কেউ বদ্যি ডাকে, কেউ বা হাঁকে পুলিশ, কেউ বা বলে, কামড়ে দেবে, সাবধানেতে তুলিস? আরও দু লাইন বলে থেমে গিয়ে বিল্টু হাততালি দিয়ে বলে উঠল, তোমরা পারলে না তো! হেরে গেলে, আমার কাছে হেরে গেলে!
সিদ্ধার্থ বলল, এটাতেও বিল্টু ফার্স্ট!
কাকাবাবু মনে মনে হাসলেন। তিনি ভাল করে জানেন যে, তাঁর সবটা মনে না থাকলেও সন্তুর পুরোটা মুখস্ত। সে ইচ্ছে করে বলল না। ছোটদের কাছে হেরে গিয়েও যে বড়দের কত আনন্দ হয়, তা ছোটরা জানতেও পারে না।
বিল্টু পকেট থেকে মাউথঅর্গান বের করে বাজাতে লাগল। আকাশ থেকে একটা প্লেন নামছে এয়ারপোর্টে।