রামায়ণ : উত্তরাকাণ্ড – ব্রহ্মা কর্ত্তৃক রামায়ণের ফলশ্রুতি কীর্ত্তন
বৈকুণ্ঠের নাথ রাম স্বয়ং ভগবান।
ব্রহ্মারে ডাকিয়া কিছু কহেন বিধান।।
আমার সহিত যত আসিয়াছে প্রাণী।
কোথায় থাকিবে তারা কিছুই না জানি।।
বিরিঞ্চি বলেন শুন রাজীবলোচন।
সন্তান নামেতে স্বর্গ করেছি সৃজন।।
সেইখানে আসিয়া রহিবে সর্ব্বজন।
বাঞ্ছা করে যেখানে থাকিতে দেবগণ।।
যেই জন রামায়ণ করিবে শ্রবণ।
পরলোকে এই স্বর্গে করিবে গমন।।
সে সন্তান-স্বর্গ প্রভু বৈকুণ্ঠ সমান।
করিবে তোমার লোক তাহে আরোহণ।।
স্থাবর জঙ্গম যত জলোপরি ভাসে।
শরীর ছাড়িয়া সবে গেল স্বর্গবাসে।।
দেবরথে চড়ি জীব দেব-বেশ ধরি।
রামের প্রসাদে সবে গেল স্বর্গপুরী।।
মৃত্যুকালে রাম রাম করে যেই জন।
সর্ব্বপাপে মুক্তি পায় বৈকুণ্ঠে গমন।।
যেই জন রামায়ণ করিবে শ্রবণ।
পরলোকে এই স্বর্গে করিব গমন।।
ভক্ত-অনুরূপ স্বর্গ অনেক প্রকার।
গোবিন্দ ভাবিয়া লোক পায় ত নিস্তার।।
শ্রীরামের ভক্ত যে পাইল স্বর্গবাস।
ইহা দেখি ব্রহ্মার মনেতে হৈল ত্রাস।।
চতুর্ম্মুখ চতুর্ম্মুখে করিছেন স্তুতি।
তোমা দরশনে যেন পাই অব্যাহতি।।
আগম পুরাণ যত মীমাংসা বেদান্ত।
তোমার মহিমা রাম কে পাইবে অন্ত।।
আমা হেন কোটি ব্রহ্মা নাহি পায় সীমা।
এমনি অনন্ত তুমি অনন্ত মহিমা।।
পুণ্য বৃদ্ধি হয় যাঁরে করিলে স্মরণ।
পাপী মুক্ত হয় যে শুনিলে রামায়ণ।।
চারি বেদ শ্রবণেতে যত ফল হয়।
রাম নামে তার কোটিগুণ ফলোদয়।।
রামনাম লইতে যে করে অভিলাষ।
সর্ব্বপাপে মুক্ত যে বৈকুণ্ঠে করে বাস।।
অপুত্র শুনিলে লোক পায় পুত্র-ফল।
সপ্তকাণ্ড শুনিলে পায় অশ্বমেধ-ফল।।