আমি সেই সন্ন্যাসী আজও ঘুরে বেড়াই,
ঘুরে বেড়াই – বনে,জঙ্গলে,পাহাড়ে,পর্বতে
ঘুরে বেড়াই একবুক তৃষ্টা নিয়ে সাহারার মরুপ্রান্তরে।
আমি ঘুরে,ঘুরে ক্লান্ত, অবিশ্রান্ত – তবুও ঘুরে বেড়াই –
এক গভীর অনুসন্ধিৎসু কৌতূহলে ।
আমার হাতে কিছু নির্বাচিত দ্বিখণ্ডিত স্মৃতির ক্যানভাস
তাতে একটি ধূসর কবলিত মুখ শুধু অবিকৃত হৃদয়ের আঙ্গিনায়,
তার উন্নত গ্রীবা,তুলনা রহিত তনু,মায়াবী আঁখি পল্লব,অমৃত সঞ্চারিত সুডৌল স্তনবৃন্ত,
ছান্দিক অঙ্গে লেপ্টে আছে মাতৃত্ব আর প্রেমিকার আশ্চর্য যুগল মূর্তি।
তার অমেয় আকর্ষণের মোহে আজ অপ্রতুল গৃহের আকর্ষণ,
প্রেমের ডালিতে স্বপ্নের মালা গেঁথে নিত্য আমার তাই অন্বেষণ।
এক তমস রাতে সে নিরাকারে ধুলো ছুঁয়ে,ছুঁয়ে নীবরতায়
আচ্ছন্ন করেছিল আমায়,
তার শাড়ীর আঁচল আশ্লেষে দুঃস্বপ্নের নগরীতে দিয়েছিল বাঁচার তাগিদ।
সেই মুহূর্তেই তো আমি খুঁজে পেয়েছিলাম অন্তত রহস্যময় প্রেম,
আর ঈশ্বর আমার অন্তরাত্মায় বললেন –
পাপের ঘরে পংক্তি জ্বালাতে ” ভালোবাস ওরে ভালোবাস ” ।
যৌবন থেকে বার্ধক্য – শত অবর্তনেও আমি অহর্নিশি খুঁজি চলেছি তাকে-
খুঁজেছি অট্টালিকায়, দীর্ণ কুটিরে, যৌনকর্মীর বুকের অলিন্দে,
খুঁজেছি হাপরের টানে,মহাসমুদ্রের স্রোতে,পাললিক
শিলায়।
দহিতার দহনে,কামিনীর শীৎকার ,শীৎকারে খুঁজেছি,
সিঁথির সিঁদুর সহসা মুছে যাওয়া অসহায় বিস্ফারিত চোখের করুন চাহনিতেও –
খুঁজেছি খুঁজেছি ব্যর্থ জীবনের আত্মঘাতীর চিতায় ।
আজও অব্যাহত সেই মরণপণ খোঁজ- মাতৃত্বের জঠরে,জঠরে, সর্বনাশের মহাপতনের অঙ্গীকারে।
আমি যে দেখেছি গোপন রাতে রেশমের কীট খুলে খুলে রেশম জড়ায়,
দেখেছি,দেখছি কেমন করে উর্ণনাভ আপনে সন্তানে খাওয়ায়।
শুনেছি শুনেছি জন্মদাতাই কেমনে নিত্য মেয়ের দেহে পাপ গুঁজে দেয়।
আমি তাই সেই কালো মেয়ের অনুগামী,আগ্রাসী ক্ষোভে সে রক্ত নদীতে স্নান করে।
আমি মহাসন্ন্যাসী তাই ঈশ্বরকে বলেছি –
পাপের ঘরে আমি বস্ত্রহীন নবরূপে মহাকালী হব
পরশুরামের কুঠার হাতে রক্তাক্ত এক আত্মজীবনী লিখে যাবো।