আত্মা অবিনশ্বর
আমার কাকিমা একটি হসপিটালের নার্স ছিলেন। কাকিমাকে বেশিরভাগ O.Tতে থাকতে হতো। আমি কয়েকবার ওই হসপিটালে গিয়েছি। কাকিমার কোয়াটার থেকে অপারেশন থিয়েটার অনেকটাই দূরে ছিল। সময় অসময় বন্ধুর মতো আমাদের অনেক গল্প হত। একদিন আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম, আচ্ছা তুমি যখন রাতে O.T থেকে ফেরো তোমার ভয় লাগে না? কাকিমা হেসে জবাব দিয়েছিল_শুনলে তুই ভয় পাবি। বাড়িতে একা থাকতে পারবিনা। আমি বললাম কি এমন হয় যে আমি ভয় পাব। হসপিটালে নানারকম পেশেন্ট আসে। ডাক্তার-নার্সের অভ্যাস হয়ে যায় তাদের সাথে লড়াই করতে করতে। কিন্তু কিছু পেশেন্টদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরী হয়ে যায়। তাদের নাম গুলো পর্যন্ত মুখস্ত থাকে ডাক্তার-নার্সের। কাকিমার পরিচিত এমনই একজন বয়স্ক মাসিমা দীর্ঘদিন ভর্তি ছিলেন। নানা রকম রোগে আচ্ছন্ন হয়ে একদিন তার মৃত্যু হয়। কিন্তু হাসপাতলে সিঁড়িতে বেশিরভাগ রাত্রে অনেকেই তাকে দেখেছেন। শুধু বসে থাকে। তবে কি আত্মা অবিনশ্বর? কাকিমা একবার আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন কিরে ভয় লাগছে? ততক্ষনে আমার গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠে ছিল। তবু বললাম না না। ভয় পাবো কেন। শুধু তো সাদা কাপড় পরে বসে থাকতো। কাকিমা যখন রাতে কোয়াটারে আসতেন প্রায়শই দেখা দিত। খুব সাহসী ছিল কাকিমা। তাই কোনো সাড়া না দিয়ে মাথা নিচু করে চলে আসতেন। এরকম আরো কয়েকটি ঘটনা ঘটেছিল। অনেকেরই চোখে পড়ে কোন না কোন আত্মা রয়েছে। যাই হোক আমি সেদিন আর খাবার খেতে পারিনি। প্রচন্ড ভয় গ্রাস করেছিল। যেদিকে তাকাই সেদিকে যেন কেউ দাঁড়িয়ে আছে। বিশেষ করে মনে হয় কেউ পিছে পিছে আসছে। জানিনা মানুষের আত্মা সত্যি অবিনশ্বর কিনা।