Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » অনুভূতি || Maya Chowdhury

অনুভূতি || Maya Chowdhury

অনুভূতি

সেদিন তোর সাথে দেখা না হলে জানতে পারতাম না শুভর বিয়ে হয়ে গেছে। কতদিনের চেনা ছিল বল। সেই ছোট বয়স থেকে আজ অবধি আমি একটি মানুষকে ভালোবেসে ছিলাম। কয়েক বছর হল আমরা চলে গেছি বর্ধমানে। কয়েকদিন বেশ যোগাযোগ রেখেছিল জানিস। হঠাৎ যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। সেদিন মাকে বললাম, শুভ আর ফোন করেনা। মা শাসনের সঙ্গে আমাকে বলল তুই ও তো ফোন করতে পারিস। আমাদের ভালোবাসাটা মা উপলব্ধি করতে পারে নি। তোর মনে আছে? বসন্তকালে এলে পার্কের ধারে বসে কত আড্ডা দিতাম। গাছগুলো ক্রমে জীর্ণ পাতা ফেলছে। কয়েকবার আমাদের মাথার উপর পুষ্পবৃষ্টি হল। তুইও তো সঙ্গে ছিলিস। যদিও একটু দূরে। পলাশ কৃষ্ণচূড়ায় শূন্য আকাশটা যেন রঙিন হয়ে গিয়েছিল। কী মজায় দিন গুলো কাটাতাম। মাঝে মাঝে কোকিলের স্বর আমরা নকল করতাম। গাছগুলো আজও আছে। তবু শুভ আমার জীবন থেকে চলে গেল। খুব কষ্ট হয় জানিস। বাড়িতে বললে সব হাসাহাসি করে। আমার মনের শূন্য জায়গাটা কাউকে বোঝাতে পারি না। তবুও যেন ভালো অনুভূতি বেশ কিছুদিন আমার মনের মাঝে জেগে ছিল। সৃজা কখনো সুযোগ পেলে আসিস মনের কথাগুলো বলে একটু শান্ত হব।

সারারাত ঘুম হলো না। সমস্ত স্মৃতিরা আমার চোখের সামনে ভিড় করতে লাগল ।ফুচকার গাড়ি দাঁড় করিয়ে একসঙ্গে ফুচকা খাওয়ার আনন্দটাই আলাদা। মাঝেমধ্যে আমি আচার নিয়ে যেতাম। দুজনে নিরিবিলিতে বসে একটু খাওয়া । আজ সব কিছুর যেন অবসান হলো। চোখের জল বাঁধভাঙ্গা হয়ে গেছে। ঝর ঝর করে গড়িয়ে আমার বইয়ের উপর পড়ছে। স্বপ্ন টা যেন ভয়ঙ্কর ছিল। তবুও শুভকে ধরে বেশ কাটছিল সময়। এখন ও আমার নয়। একেবারে অন্যজনের শুভ। হঠাৎ কাকতালীয়ভাবে শান্তিনিকেতনে আমাদের দেখা। ওর বন্ধুদের সঙ্গে এসেছিল। না, সহধর্মিনী সঙ্গে ছিল না। তাই আমার মনটা একটু ভালো হয়ে গেল। আজ শুভকে কিছু বলা যাবে। সবাই তো আমার চেনা। বাবা মাকে লুকিয়ে ছবি তোলার কথা বলে একটু ফাঁকা জায়গায় গেলাম। একটা ফোন করি শুভকে। আজ ফোনটা কেউ দেখার নেই। হাতের কাঁপুনিতে ডায়াল করলাম। কেন এমন হচ্ছে। আগে তো কখনো কাঁপেনি হাত। শুভ তো সবই ঠিক আছে। তবে কেন? হ্যালো চিনতে পারছো। বল কি হয়েছে। আমাকে না জানিয়ে তুমি বিয়ে করে নিলে। হ্যাঁ, তুই ফোন করতিস না তাছাড়া তোরা এখানে থাকতিস না। আমার কি করার ছিল। শুভ তুমি এ ভাবে কথা বলছো কেন। আমি তো ঝগড়া করছি না।- ঠিক আছে বল কি হয়েছে।- কিছু হয়নি শুভ। তোমার সাথে একটু কথা বলার ইচ্ছে ছিল। চলে আয় আমরা বসে আছি এখানে। আমার যে অনেক কথা বলার ছিল শুভ।- বলে ফেল। ঠিক আছে শুভ আমি তোমার সাথে পরে যোগাযোগ করবো।

– আজ বুঝলাম মেয়েরা হয়ত একটু বেশি দুর্বল হয়ে পড়ে। পুরুষের মধ্যে ভালোবাসাটা সাময়িক। খুব কম জনের মধ্যে আঁচড় কাটে। তাই আমরা যে বিষয়টাকে নিয়ে কষ্ট পাই, ওদের কাছে ওটা নিছক ঘটনা। আস্তে আস্তে নিজেকে বদলানোর চেষ্টা করলাম। ওদের জন্য কষ্ট পাওয়া, নিজের করে ভাবাএগুলো সাজেনা। সত্যি কারের ভালোবাসা দিতে পারে খুব কম জন। সংসার জীবন? সেখানে তো মেয়েদের মানিয়ে গুছিয়ে নিতে হয়। সামান্য মতবিরোধ হলে ওরা বাইরে খেয়ে নেয়। আমাদের জন্য অপেক্ষা করে বসে থাকে না। তাই শুভ কেও আজ মন থেকে ছেড়ে দিলাম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress