ছেড়ে গেলে হে চঞ্চলা ,
হে পুরাতন সহচরী !
ইচ্ছা বটে বছর কতক
তোমার জন্য বিলাপ করি ,
সোনার স্মৃতি গড়িয়ে তোমার
বসিয়ে রাখি চিত্ততলে ,
একলা ঘরে সাজাই তোমায়
মাল্য গেঁথে অশ্রুজলে—
নিদেন কাঁদি মাসেক – খানেক
তোমায় চির – আপন জেনেই—
হায় রে আমার হতভাগ্য !
সময় যে নেই , সময় যে নেই ।
বর্ষে বর্ষে বয়স কাটে ,
বসন্ত যায় কথায় কথায় ,
বকুলগুলো দেখতে দেখতে
ঝ’রে পড়ে যথায় তথায় ,
মাসের মধ্যে বারেক এসে
অস্তে পালায় পূর্ণ – ইন্দু ,
শাস্ত্রে শাসায় জীবন শুধু
পদ্মপত্রে শিশিরবিন্দু—
তাঁদের পানে তাকাব না
তোমায় শুধু আপন জেনেই
সেটা বড়োই বর্বরতা—
সময় যে নেই , সময় যে নেই ।
এসো আমার শ্রাবণ – নিশি ,
এসো আমার শরৎলক্ষ্মী ,
এসো আমার বসন্তদিন
লয়ে তোমার পুষ্পপক্ষী ,
তুমি এসো , তুমিও এসো ,
তুমি এসো , এবং তুমি ,
প্রিয়ে , তোমরা সবাই জান
ধরণীর নাম মর্তভূমি—
যে যায় চলে বিরাগভরে
তারেই শুধু আপন জেনেই
বিলাপ করে কাটাই , এমন
সময় যে নেই , সময় যে নেই ।
ইচ্ছে করে বসে বসে
পদ্যে লিখি গৃহকোণায়
‘ তুমিই আছ জগৎ জুড়ে’—
সেটা কিন্তু মিথ্যে শোনায় ।
ইচ্ছে করে কোনোমতেই
সান্ত্বনা আর মান্ব না রে ,
এমন সময় নতুন আঁখি
তাকায় আমার গৃহদ্বারে—
চক্ষু মুছে দুয়ার খুলি
তারেই শুধু আপন জেনেই ,
কখন তবে বিলাপ করি ?
সময় যে নেই , সময় যে নেই ।