উধোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে
কি তাজ্জব ব্যাপার বলুন তো? সুলোভ সাহার বাড়িতে কেন্দ্রীয় এক তদন্তকারীর দল গায়ের জোরে ঢুকে জোর-জবরদস্তি শুরু করে। কিন্তু তাদের খাতায় নামটা এক হলেও পদবী আলাদ। ইনি নবদ্বীপের বাসিন্দা। তার ওপর ক্যান্সারে আক্রান্ত। তবু কোনো তোয়াক্কা না করে তদন্ত অফিসার শুধোয়, আপনি অসদুপায়ে অনেক উপার্জন করেছেন?
সুলোভ আকাশ থেকে পড়ে। এমন আজব প্রশ্ন শুনবে বলে আশা করে নি।
সে থতমত খেয়ে বলে, কি বলছেন স্যার? আপনাদের কোথাও ভুল হচ্ছে!
-ভুল! আপনার নাম সুলোভ!
-হ্যাঁ। কিন্তু পদবীটা লক্ষ্য করেছেন।
পাশ থেকে ছেলে বিষ্ঠু বলে, বাবাকে আপনারা শুধু হেনস্থা করছেন।
-এমন কেন বলছো ছোকরা?
-বাবার একটা চানাচুরের ব্যবসা আছে। ওখানে বাবার আয় নিশ্চয়ই ভালো। কিন্তু প্রতিবছর বাবা আয়কর রিটার্ন আয়কর দপ্তরে জমা দেয়। এই ব্যাপারে নিশ্চিত প্রমাণপত্র দেখাতে পারি।
-তার দরকার হবে না। পাশ থেকে ঐ অফিসারের এক সহকর্মী জানায়।
তারা ভাবতে থাকে, তালে কি ভুল হলো? আবার তারা কাগজপত্র ঘেঁটে দেখে, যে ব্যক্তিকে ধরার কথা তার নাম সুলোভ মাইতি। মেদিনীপুরে থাকে। তাছাড়া এদের বাবার নামও ভিন্ন।
খুব স্বাভাবিকভাবেই এবার পিছটান। ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি।
কিন্তু বিষ্টুর সাথে তার মা তিরানা চেঁচিয়ে জানায়, আমরা এমন হয়রানির বিহিত চাই। মানহানির মামলা করব ।
কিন্তু ঐ তদন্তকারীর দল ওসব কথার গুরুত্ব না দিয়ে গাড়ীতে উঠে বসে। দলের সবাই ভাবতে থাকে, সুলোভ মাইতিকে খুঁজতে এসে সুলোভ সাহাকে জিজ্ঞাসাবাদ। এ যে ভারী অসম্মানের ছোবল।
সবার ভেতর তখন একটাই ভাবনা, কদ্দূর মেদিনীপুর? ঐ সুলোভ মাইতি প্রকৃত অপরাধী। তার দু নম্বরী কারবার। এমন সংবাদ থাকলেও এই ধরণের গলদ কি করে হলো?
ভাবতে ভাবতেই অনেক ক্রোশ পার করে দলটি মেদিনীপুর পৌঁছোয়। কিন্তু অপরাধীর বাসাতে কড়া নেড়ে সন্ধান করে জানতে পারে, খাঁচা থেকে পাখি উড়ে গেছে। তাই ব্যর্থ মনোরথ হয়ে ওখানেই জাল পেতে অপেক্ষা করার জন্য পুলিশ পোষ্টিং করে। একদিন না একদিন অভিযুক্ত ঠিক ধরা পড়বেই।