অভিজ্ঞতায় দিনযাপন
সকাল থেকে হৈ চৈ মজায় কাটছে তাদের দিন। ছোট ছোট মৌমাছির মতো ক্ষুদে শিল্পী মন বই ঘরে নতুন বইয়ের আকর্ষণে ছুটে বেড়ায়। অপূর্ব তাদের ঘ্রাণশক্তি।
– প্রতিটা মলাটের উপর একবার হাত বুলিয়ে নেওয়া, দুই এক পৃষ্ঠা পড়ে ফেলাআবার হয়তো নতুন একটা বইয়ের প্রতি আকর্ষণ। এ এক ভারি মজা।
– একবার মাঠে আর একবার বই ঘরে তাদের অবারিত প্রবেশের মাঝে আমার দৃষ্টি নিবদ্ধ থাকে। ফুলের মতো শিশুরা এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত প্রতিটি আলমারিতেএকটু করে হাত বুলায়। দুষ্টু মিষ্টি হাসি মুখে কখনো ছুটে আসে খাতায় নাম লেখাতে। ।- পড়ার টেবিলে বসে অপূর্ব তাদের দুচোখ নিবদ্ধ হয় সাদা পৃষ্ঠায় কালো কালির উপর। ।
– একবিংশ শতাব্দীতে যেখানে বিজ্ঞান উন্নত জায়গায় পৌঁছে গেছে, সকল অভিভাবক জানেন কম্পিউটার নামক অতি আধুনিক যন্ত্রে তারা আসক্ত থাকে, বই হয়তো কোনোদিন তারা পড়বে না (পাঠ্যবই ব্যতিরেক), সেসব চিন্তাভাবনাকে ব্যর্থতায় পর্যবসিত করে আধুনিক ছেলে মেয়েরা কতটা বইয়ের প্রতি আসক্ত তার প্রমাণ দেখছি প্রতিনিয়ত দমদম পাঠাগারে।
– তাদের নির্দিষ্ট কিছু বই তারাই খুঁজে গুছিয়ে রাখে। অজানাকে জানার একটা আগ্রহ এখনও তাদের মধ্যে প্রবল।
– বসে উপভোগ করছিলাম,- একজন বয়স্ক মানুষ তিনি তো ভুলেই গিয়েছিলেন খাওয়া-দাওয়া করতে। ছেলের ডাকে তার সম্বিত ফেরে। একজন দিদিভাই কাজে যাওয়ার পথে কিছুটা সময় বই পড়ে নিলেন। ঠাকুরমার ঝুলি- এটাতো আমাদের বড় প্রাপ্তি।
– পেশা বিভিন্ন রকম হতে পারে- কিন্তু মানুষের মন এখনো বইয়ের পৃষ্ঠার মধ্যে অন্তরের মিলন খোঁজে। কত মানুষ বই ঘরের টানে একত্রিত হচ্ছে।
– আধুনিক সমাজ কিছুটা অতিমারীর কারণে অনেকটা জনসংযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন। কিন্তু বই ঘরের মধ্যে তাদের মিলনের সুর গ্রথিত। তাইতো দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত প্রতিটা মানুষ ছুটে আসছেন বইয়ের টানে।
– প্রতিটি শিশুর মধ্যে তাদের সহজাত প্রবৃত্তি গুলি সুপ্ত থাকে। একদিন এগুলি বিকশিত হয়ে সমাজ থেকে রাষ্ট্র গুণীজনের সমাবেশে ভরে উঠবে। দমদম পাঠাগারে বসে এই অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করা আমার এক বড় প্রাপ্তি। কালি কলমের জোর চিরকাল বজায় থাকুক।